অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া
দুই পর্বের শেষ পর্ব
যে কারণে তারেক রহমান অপশক্তির প্রধান টার্গেট
প্রকাশ: ০৭:২০ এএম, ২১ নভেম্বর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০১:২২ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
সুখী সমৃদ্ধশালী এবং আত্মনির্ভরশীল আগামীর বাংলাদেশ বির্নিমাণে তারেক রহমানের সামনে অপার সম্ভাবনা যেমন রয়েছে, তেমনি সামনে এগিয়ে চলার পথে রয়েছে অনেক চ্যালেঞ্জ। বাংলাদেশ বিপুল সম্ভাবনার একটি দেশ। যেখানে রয়েছে বিপুল জনসংখ্যা যার সিংহভাগ তরুণ । তরুণ সমাজকে মানবসম্পদে রূপান্তরে যথাযথ ও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহনের মাধ্যমে রোড ম্যাপ ক্সতরী করতে হবে। প্রাকৃতিক সম্পদ, জল ও স্থলকে সদ্ব্যবহারের জন্য দীর্ঘ মেয়াদী, মধ্যম মেয়াদী ও সল্প মেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। বিএনপিকে কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত সৎ যোগ্য আস্থাভাজন ও পরীক্ষিত ব্যক্তিদের দিয়ে সংগঠিত করে আরো শক্তিশালী করতে হবে। দেশের অভ্যন্তরে স্থিতিশীলতাই হল জাতীয় নিরাপত্তার সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ। তাই জাতীয় নিরাপত্তা ও সংহতি প্রতিষ্ঠায় শহীদ জিয়ার নীতি অনুসরণ করতে হবে। প্রতিবেশী রাষ্ট্রসমূহের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নসহ আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে সুসম্পর্ক স্থাপনে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। প্রয়োজনে পররাষ্ট্রনীতির বিষয়ে তারেক রহমানকে বহুমূখীকরণ পন্থা অবলম্বন করতে হবে। বাংলাদেশের জনসাধারণের মাঝে ভবিষ্যত কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণের মাধ্যমে বাস্তবধর্মী স্বপ্ন সৃষ্টি করতে হবে।
পৃথিবীর প্রতিটি উন্নত জাতির ভিত্তিমূলে রয়েছে শিক্ষা। একটি শিক্ষিত জাতি একটি দেশের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। উন্নয়ন ও প্রগতির লক্ষ্যে আমাদের যত উদ্যোগ সেগুলোর র্দীঘস্থায়ী বাস্তবায়ন ও কার্যকারিতার পূর্ব শর্ত একটি র্দীঘ মেয়াদী ও সুপরিকল্পিত শিক্ষানীতি’। মালয়েশিয়া, হংকং, তাইওয়ান, কোরিয়া, জাপান এবং সিঙ্গাপুরের উন্নতির ভিত্তিমূলে রয়েছে শিক্ষা। স্বশিক্ষিত জনই সুবিবেচক। বাংলাদেশ জনসংখ্যার বয়স বিবেচনায় এখন তরুণ। এই তরুণ বাংলাদেশকে সমৃদ্ধির পথে অগ্রসর করতে হলে শিক্ষা ও গবেষণার উপর অধিক গুরুত্ব দিতে হবে। এ লক্ষ্যে পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ করতে হবে। মনে রাখতে হবে শিক্ষা ও গবেষণার পিছনে বরাদ্দ বৃদ্ধি প্রকারান্তরে বিনিয়োগ। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা কর্মকে উৎসাহিত করার পাশাপাশি সমাজ, অর্থনীতি, রাজনীতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে গবেষকদের গবেষণা কর্মের ফলাফল ক্ষেত্র বিশেষে দেশ ও জাতি গঠনে প্রয়োগের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে।
সময়ের পরিবর্তনকে তারেক রহমান উপলব্ধি করবেন তাঁর মেধা, যোগ্যতা, দক্ষতা, অভিজ্ঞতা এবং গৌরবময় পারিবারিক শিক্ষার আলোকে। সময় ও পরিস্থিতি যেমন তারেক রহমানকে সহায়তা করেছে ঠিক তেমনি রাজনীতিতে যোগদান পরবর্তীকালে নিজের মেধা, মনন, যোগ্যতা স্বাতন্ত্র্যের স্বাক্ষর রাখতে তিনি সক্ষম হয়েছেন। ১/১১’র পরবর্তীকাল থেকে এখন পর্যন্ত চরম ক্সধর্য, সহিষ্ণুতা ও পরীক্ষায় নিয়ত সম্মুখীন হচ্ছেন তারেক রহমান।
সকল ধরনের শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের মুখে তিনি থেকেছেন অবিচল। ১/১১’র পট পরিবর্তনের পর এ কারণে বাংলাদেশের জাতীয় রাজনীতিতে তারেক রহমানের আবেদন নতুন মাত্রা পেয়েছে। ১/১১ কুশীলবগণ তারেক রহমান ও হাওয়া ভবনকে ঘিরে যে বিরামহীন মিথ্যা প্রচারণা চালিয়েছে তা বাংলাদেশের জনগণের কাছে গৃহীত হয়নি, বরং সময়ের সাহসী সন্তান হিসেবে, তারেক রহমান জাতীয়তাবাদী আদর্শের ভবিষ্যত কান্ডারী হিসেবে জনগণের হৃদয়ে আসন করে নিয়েছেন (হাসান,২০১০)।
তীব্র মানসিক চাপ থাকা সত্ত্বেও স্বচ্ছভাবে চিন্তা করে তারেক রহমান তার সুদূর প্রসারী চিন্তা ভাবনাকে সুবিন্যস্ত করে বাংলাদেশের মাটি ও মানুষের জন্য পরিবেশন করে চলেছেন। তাছাড়াও নানা সীমাবদ্ধতার ভিতর দিয়ে তারেক রহমান বিএনপির রাজনীতিকে দক্ষতার সাথে পরিচালনা করছেন। কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখেছেন, উজ্জীবিত করছেন প্রতিনিয়ত নানা কর্মসূচীর মাধ্যমে। তারেক রহমানকে মনে রাখতে হবে আগামীর বাংলাদেশ বির্নিমাণে সৎ যোগ্য দক্ষ দেশপ্রেমিক নিবেদিত নেতৃত্ব গড়ে তোলার জন্য ত্যাগী পরীক্ষিত যোগ্যদেরকে নেতৃেত্ব স্থান দিতে হবে। এজন্য পূর্ব থেকেই তৃণমূল পর্যায়ে সার্চ কমিটির মাধ্যমে অনুসন্ধাণ ও তথ্য সংগ্রহ করে নতুনভাবে ডাটাবেজ ক্সতরী করতে হবে। মনে রাখতে হবে দুঃসময়ের পরীক্ষিত ত্যাগীদের যথাযথ মূল্যায়ন করতে না পারলে টেকসই নেতৃত্ব (Sustainable Leadership) গড়ে তোলা সম্ভব নয়। সুতরাং আগামী জাতীয় নির্বাচনের পূর্বেই কেন্দ্র থেকে তৃণমূল পর্যন্ত বিএনপির মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটিকে নতুন ভাবে গঠন করার মাধ্যমে ইস্পাত কঠিন ঐক্য সৃষ্টি করতে হবে। সেই সাথে সকল অঙ্গ-সংগঠনগুলোকে আরো শক্তিশালী করার উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। পেশাজীবী সংগঠন গুলোর সাথে মতবিনিময় করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একথা ধ্রুব সত্য গোটা দেশের মানুষ আজ ক্ষোভে উন্মুখ। শুধু প্রয়োজন বলিষ্ঠ নেতৃত্বের মাধ্যমে সমমনা দলসহ অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সখ্যভাব স্থাপন করে একটি গণআন্দোলনের পরিবেশ সৃষ্টি করা। গণআন্দোলনের মধ্যে দিয়েই তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে এনে তাঁর নেতৃত্বেই শেখ হাসিনার ফ্যাসিস্ট সরকারকে বিতাড়িত করে জনগণের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে হবে। বিএনপি ক্ষমতায় থাকতে অনেকে অনেকভাবে সুবিধা ভোগ করলেও দলের চরম র্দূদিনে তারাই আবার কঠোর সমালোচনায় ব্যস্ত থাকে। অনেক হয়েছে, আর কত।
এ দলটি গঠিত হওয়ার পর অতীতে কখনও এত চরম সংকটে পড়েছে, তা আমার জানা নাই। সুতরাং বিএনপি'র নীতিনির্ধারকদেরও এ বিষয়ে আরো তীক্ষè দৃষ্টিপাত করা উচিত, যাতে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে ভুল না হয়। এই অপার সম্ভাবনার বাংলাদেশকে বিশ্ব পরিমন্ডলে উজ্জ্বল ভাবমূর্তিতে তুলে ধরার জন্য চাই তারেক রহমানের নেতৃত্বে শক্তিশালী বিএনপি। শহীদ জিয়ার দেশপ্রেম, সততা, কর্তব্যনিষ্ঠা ন্যায়পরায়নতা, কর্মক্ষমতা, গরিব ও মেহনতি মানুষের প্রতি ভালোবাসা, শিশু, মহিলা ও যুবকদের উন্নয়নে অগ্রাধিকার প্রদান, গ্রাম বাংলার প্রতি দরদ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দূরদর্শিতাসহ অন্যান্য ভিশন ও মিশন হোক তারেক রহমানের পথ চলার পাথেয় (হাসান,২০১০)।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানে রাজনীতি, রাজনীতিক, রাজ‣নতিক নেতৃত্ব এবং নতুন ও তরুণ প্রজন্মের আগমনের উপর প্রসিদ্ধ ও পরীক্ষিত থিউরী রয়েছে, যা ‘এলিট থিউরী’ নামে পরিচিত। মিশেল, প্যারেটো ও মস্কা এ থিউরীর প্রবক্তা। এলিট থিউরীতে রাজ‣নতিক ক্রিয়া- কলাপের উপর অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা স্থান পেলেও এখানে নতুন ও তারুণ্যের আগমনের চিত্রটি ফুটে উঠেছে। এলিট থিউরী অনুযায়ী রাজনীতি এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব পরিচালিত হয় কতিপয় প্রভাবশালী ব্যক্তি এবং ব্যক্তি বিশেষের দ্বারা। বিশেষ করে আমাদের মতো উপনিবেশিক সমাজ ও রাষ্ট্র কাঠামোয় রাজ‣নতিক ও গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলো কার্যকর ভূমিকা পালনে সক্ষম না হওয়ায়, ঘুরে ফিরে গণতন্ত্রের লেবাসে কিছু মানুষ শাসন কার্যে এবং নেতৃত্বে সব সময় থাকার পরিকল্পনা করেন।
তারেক রহমান পারিবারিক ঐতিহ্য ও আদর্শকে আঁকড়ে ধরে সে পথে অগসর হননি, বরং তৃণমূল মানুষের সম্মিলিত মতামতকে গুরুত্ব দিয়ে তৃণমূলে বিএনপি'র নেতৃত্বকে নতুন আঙ্গিকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেছেন। তাছাড়াও এলিট থিউরী অনুযায়ী কোন সমাজে নেতৃত্ব স্থবির থাকতে পারেনা। সমাজের গতি পরিবর্তনশীল। রাজনীতির ব্যবস্থায় প্রবাহ থাকতে হবে। নেতৃত্বে কখনও একজন সারাজীবনের জন্য থাকতে পারেনা। তরুণ ও নবাগতদের জায়গা করে দিতে হবে। যদি কেউ কখনও চিরস্থায়ীভাবে নেতৃত্বে থাকতে চান, তবে তার ফল হয় অনেক ভয়াবহ। হিটলার, হোসনী মোবারক, কর্নেল গাদ্দাফী চিরস্থায়ী হতে পারেননি। বাংলাদেশেও ক্ষমতা চিরস্থায়ী করার অতীত উদ্যোগের ফল সুখকর নয়। ক্ষমতা বদলের স্বাভাবিক গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ার ধারা বন্ধ করে দেয়া হলে, তার পরিণতি হয় রক্তাক্ত পথ। বর্তমানে যারা বাংলাদেশের নতুন ও গতিশীল তরুণ নেতৃত্বের স্বাভাবিক স্বতঃস্ফূর্ত উত্থানকে বুঝতে পারছেন না, তারাই ইতিহাসের সত্য উপলব্ধির ক্ষেত্রে একই ভুল করছেন। অতীতে ভুলের যেমন মাসুল গুনতে হয়েছে, বর্তমানে এ ভুলের দায় শোধ করতে হবে তাদেরকেই। ইতিহাস নির্মোহ, কাউকে ক্ষমা করে না। ইতিহাস সব সময় সত্য, তারুণ্য এবং জনতার পক্ষে (হক,২০১০) ।
আশার কথা তারেক রহমান শতবাধা বিপক্তি অতিক্রম করে সুখী সমৃদ্ধশালী, আত্মনির্ভরশীল আগামীর বাংলাদেশ বির্নিমাণে নেতৃত্ব প্রদানে সক্ষম হবেন, যা তাঁর নিজের লেখায় ফুটে উঠেছে। তারেক রহমান ‘আমার শিক্ষক’ - এ লিখেছেন- ‘আমার বাবা যখন মারা যান, তখন আমার বয়স ১৪/১৫ বছর এবং কোকোর বয়স ১২/১৩ বছর। অর্থাৎ যে সময় একজন কিশোরের জীবনের পথ চলতে, শেখার জন্য দরকার তার জীবনের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য শিক্ষককে, অর্থাৎ তাঁর বাবাকে। কিন্তুআমার এবং আমার ভাইয়ের কারও এই শিক্ষকের কাছ থেকে সরাসরি বেশী কিছু শিখার অবকাশ হয়নি। তার প্রধান কারণ, আমাদের এই শিক্ষকের কাঁধে ন্যস্ত ছিল সেই সময়ে সমগ্র দেশ ও জনগণের গুরু দায়িত্ব। তাই জীবনের পরবর্তী সময়ে আমাদের শিখতে হয়েছে, সেই শিক্ষকের রেখে যাওয়া সততা থেকে, শিখতে হয়েছে তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ ও দেশপ্রেম থেকে, এবং সেইসব কর্ম থেকে যা তিনি একজন পিতা হিসেবে আমাদের দিয়ে করিয়েছেন, বলেছিলেন করতে, তা থেকে। তারই ছোট ছোট অনেক ঘটনা রয়েছে। ঘটনাগুলো বিচার করলে এর প্রভাব আমাদের জীবনে অনেক” (রহমান, ২০১০)।
একথা খোদ তারেক রহমানও বলতে পারবেন না, অতীতে তিনি কোন ভুল করেন নি। কাজ করতে গেলেই ভুল হয়। কিন্তুঅপপ্রচারের আয়তন আর ভুলের পরিসর কখনও এক রকম ছিলনা তাঁর জন্য। তিলকে তাল করা হয়েছে স্রেফ এই উদীয়মান তরুণ নেতাকে রুখে দেওয়ার জন্য। তারেক রহমানের ভাষায়, “আমাকে দিয়ে কখন কে কোন স্বার্থে কি কাজ করাতে চেয়েছে, সব সময় তা পাহারা দেয়া সম্ভব ছিল না। হতে পারে কেউ কেউ বাড়াবাড়ি করেছে। কিন্তু যখনই আমার নজরে এসেছে আমি ব্যবস্থা নিয়েছি’ (মাহমুদ, ২০১২)।
জর্জ ফ্রিডম্যান একজন আমরিকার নামকরা রাজ‣নতিক গণক ‘নেক্সট হানড্রেড ইয়ারস’ বইয়ের ভূমিকায় রাজনীতিবিদদের ভূল সম্পর্কে বলেছেন- It is the delight of all societies to belittle their political leaders and leades surely do make mistakes. But the mistakes they make, when carefully examined, are rarely stupid. More likely mistakes are forced on them by circumstances…….politicians are rarely free actors. রাজনৈতিক নেতাদের খাটো করতে সব সমাজই এক ধরনের মজা পায় এবং নেতারা অবশ্যই ভুল করে থাকেন। তবে সতর্ক বিচারে সেসবকে আহাম্মকি বলা যাবে খুব কমই। অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রতীয়মান, পারিপার্শ্বিকতাই বাধ্য করে ভুল ঘটাতে। রাজনীতিবিদরা প্রায়ই প্রভাব মুক্ত থাকতে পারেন না (মাহমুদ,২০১২)।
আমাদের দেশের অনেক স্বঘোষিত বুদ্ধিজীবী, তথাকথিত রাজনীতিবিদসহ অনেক আধিপত্যবাদ ও সাম্রাজ্যবাদীদের আদর্শে বলিয়ান হয়ে এখনও তারেক রহমানকে নিয়ে নেতিবাচক বক্তব্যের ধারা অব্যাহত রেখে চলেছেন তাদের এ্যাজেন্ডাকে সুকৌশলে জীবিত রাখার জন্য। বিএনপি’র নেতা, কর্মী সমর্থক ও অনুসারীদের উচিত তারেক রহমান ও ‘হাওয়া ভবন’ কে নিয়ে তথাকথিত বুদ্ধিজীবী ও আওয়ামী লীগের ‘গোয়েবলসীয়’ মিথ্যা প্রচারণাকে বেশি বেশি করে জনসম্মুখে তুলে ধরা। নিকট অতীতে ২০১৩ বিশ্বখ্যাত ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষাবিদদের সমন্বয়ে গঠিত “বাংলাদেশ পলিসি ফোরাম ক্যামব্রিজ ’ নামক একটি সংস্থা প্রকাশ করেছেন ‘পলিটিক্যাল থটস্ অব তারেক রহমান’ অর্থাৎ তারেক রহমানের রাজ‣নতিক দর্শন (চে․ধুরী, ২০১৩)। বইটি প্রচুর উৎসাহ ও সপ্রশংস কে․তুহলের সৃষ্টি করেছে। এ বইটির মাধ্যমে জাতি তথা বিশ্ববাসী জানতে পারবে স্বচ্ছ চিন্তার প্রবক্তা, আগামীর নেতা তারেক রহমানের রাজ‣নতিক চিন্তাধারা ও রাজ‣নতিক দর্শন সম্পর্কে।
তারেক রহমানকে উপলব্ধি করতে হবে ভবিষ্যতে তাঁর ভাবমূর্তিকে সুবিধাবাদীরা যাতে নষ্ট করে দিতে না পারে। তাকে মনে রাখতে হবে তিনি অন্য একজনের মত সাধারণ মানুষ নন। তিনি একটি প্রতিষ্ঠান। তিনিই আগামীর বাংলাদেশ। তাঁকে কেন্দ্র করে জড়িয়ে আছে এ দেশের লক্ষ কোটি জনতা, দেশের স্বাধীনতা, সার্বভে․মত্ব এবং অগণিত মানুষের আশা আকাঙ্খা। তাঁর সামনে রয়েছে বিস্তীর্ন দূর্গম পথ, এসব বিষয়ে সদা সতর্ক থেকে তাঁকে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। অনুসন্ধাণ করতে হবে ত্যাগী নিষ্ঠাবান, সৎ যোগ্য, সাহসী পরীক্ষিত এবং সৃজনশীল সহযোদ্ধাদের। জাগ্রত রাখতে হবে সর্বক্ষণ তাঁর বিবেককে।
তারেক রহমান ফিরবেন, তাঁর আগমণ প্রত্যাশী কোটি কোটি মানুষের সম্ভাবনার বাংলাদেশে। এ প্রসঙ্গে প্রখ্যাত গীতিকার মনিরুজ্জামান মনিরের গানের পংক্তিগুলো বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য-
‘তোমার চোখে এদেশের স্বপ্ন
তোমার জীবন মানুষের জন্য
তুমি এলে হবে নবান্ন
প্রতীক্ষার হবে শেষ
তোমাকে চায় বাংলাদেশ’।
প্রাকৃতিক সম্পদ আর সহজ সরল অনুরাগী মানুষের ভালোবাসা ও সহযোগিতাকে সম্বল করে আগামী দিনের রাজনীতির অনেক পথ পাড়ি দিতে হবে তারেক রহমানকে। সেক্ষেত্রে বিগত দিনের অভিজ্ঞতা বিশ্লেষণ করে নতুনভাবে পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। জনগণ এবং রাষ্ট্রের স্বার্থকে বিবেচনার শীর্ষে রেখে তারেক রহমান ‘ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ’ গড়ার প্রত্যয় নিয়ে এগিয়ে যাবেন। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষ চায় তারেক রহমান জীবনে সফল হোক, তাদের মতো আমিও একজন। শহীদ জিয়া ও দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার অনুসারী অনুরাগীরা প্রত্যাশা করেন তারেক রহমান তাঁর পূর্বসূরিদের আদর্শকে ধারণ করে শত বাধা বিপক্তি অতিক্রম করে মেধা, মনন, সততা, দক্ষতা ও নিষ্ঠার সাথে সুখী সমৃদ্ধশালী আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ বিনির্মাণে সফল হবেন, এটিই সকলের প্রত্যাশা।
সহায়ক গ্রন্থপঞ্জি
১. উল্লাহ্, মাহবুব (২০১৩) ‘তারেক রহমান : একটি একান্ত ভাবনা’, শিকড়, ৩৮ বাংলাবাজার, ঢাকা।
২. সিদ্দিকী, রেজোয়ান (২০১৩) ‘জাতীয়তাবাদী বাংলাদেশের প্রতীক তারেক রহমান’, শিকড়, ৩৮ বাংলাবাজার, ঢাকা।
৩. রহমান, তারেক (২০১০) ‘আমার শিক্ষক’ জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, গুলশান, ঢাকা।
৪. সিকদার, আব্দুল হাই (২০১৩) ‘বাংলাদেশ এবং তারেক রহমান’, শিকড়, ৩৮ বাংলা বাজার, ঢাকা।
৫. মোহাম্মদ, হাসান (২০১০) ‘ভূ-খন্ডকেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদী রাজনীতির ভবিষ্যৎ কান্ডারী’, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, গুলশান, ঢাকা।
৬. ইসলাম, তাজমেরী এস এ (২০১০) ‘তরুণ নেতা তারেক রহমান : আগামী দিনের পথিকৃৎ’, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, গুলশান, ঢাকা।
৭. আজাদ, আবুল কালাম (২০১৩) ‘তারেক রহমান ও স্বপ্নের বাংলাদেশ’, শিকড়, ৩৮ বাংলাবাজার, ঢাকা।
৮. রহমান, তারেক (২০০৫) ‘আমার স্বপ্নের বাংলাদেশ’ দৈনিক মানব জমিন, গোলটেবিল আলোচনা, ১১ ডিসেম্বর।
৯. চে․ধুরী, এনাম আহমদ (২০১৩) ‘দুঃখের তিমিরে যদি জ্বলে মঙ্গল-আলোক’, দৈনিক দিনকাল, ২১ আগষ্ট।
১০.পারভেজ, মাহফুজ (২০১০) ‘ঐ নতুনের কেতন ওড়ে’ জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, গুলশান, ঢাকা।
১১. মাহমুদ, শওকত (২০১২) ‘আগামীর দেশ নায়ক তারেক রহমান’ দৈনিক আমার দেশ, ২০ নভেম্বর, ঢাকা।
১২. হক, খোন্দকার ইমামুল, (২০১২) ‘একজন ক্যারিশমেটিক তরুণ নেতা তারেক রহমান’, দৈনিক দিনকাল, ১৯ জুলাই।
১৩. মনির, মনিরুজ্জামান, (২০১১) দৈনিক দিনকাল, ২২ ডিসেম্বর।
১৪. উল্লাহ, মোহাম্মদ মাহবুব (২০১০) ‘তারেক রহমান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী রাজনীতির প্রতিহিংসার কারণ ও স্বরূপ’ জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন, গুলশান, ঢাকা।
লেখক : ড. এ কে এম মতিনুর রহমান, প্রফেসর, লোক প্রশাসন বিভাগ, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া, আজীবন সদস্য, জিয়াউর রহমান ফাউন্ডেশন (জেডআরএফ)।