দৈনিক দিনকাল.নেট
চিনির প্রতিকেজির মূল্য বেড়েছে দ্বিগুণ!
প্রকাশ: ০৬:০৯ পিএম, ২ নভেম্বর, বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৫৯ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
কৃষি প্রধান দেশ হিসেবে পরিচিত বাংলাদেশের অন্যতম কৃষি পণ্য চিনির বাজার বিদেশিদের হাতে চলে গেছে। বছরে চিনির চাহিদা ১৮ থেকে ২০ লাখ টন। কিন্তু বাংলাদেশে কৃষিজাত অর্থাৎ আখ ফসল থেকে আহরিত চিনির উৎপাদন এখন এক লাখ টনেরও নিচে নেমেছে। তা হলে চিনির চাহিদা পূরণ হচ্ছে কিভাবে? এই টাকা যাচ্ছে কোথায়? ভাগ যাচ্ছে কোথায়? অতি সম্প্রতি প্রতিকেজি চিনির দাম কেজি প্রতি ১০০ টাকা ছাড়িয়েছে। বর্তমান সরকারের আমলে এই চিনির দাম দ্বিগুণ হলো।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে চিনি ছিল অন্যতম কৃষি পণ্য। বার্ষিক ফসল ইক্ষু বা আখ থেকে আহরিত সুমিষ্ট রস থেকে পাওয়া যায় এই চিনি। প্রাচীনকাল থেকে এই অঞ্চলে ইক্ষু ফসলের চাষ চলে আসছে। সারাদেশেই কমবেশি ফসল হয় এই ইক্ষু ফসলের। এর রস থেকে গুড় ও চিনি পাওয়া যায়। এই গুড় ও চিনি একদা বিদেশে রফতানি হতো। এখনো হয়। কিন্তু বর্তমানে দেশে যে চিনির একতরফা বাজার সৃষ্টি হয়েছে, তা প্রকৃত চিনি নয়। মুলা জাতীয় একটি কৃষি পণ্য থেকে আহরিত রস থেকে এই চিনি পাওয়া যায়, যা র-সুগার (জঅড ঝটএঊজ) হিসেবে সরকারিভাবে পরিচিতি পেয়েছে। এই র-সুগার নিয়ে বাংলাদেশের সরকারি পর্যায়েই পরস্পর বিরোধিতা রয়েছে। সুযোগটি গ্রহণ করেছে এক শ্রেণির মুনাফা লোভী ব্যবসায়ী। বাংলাদেশ জাতীয় রাজস্ব বোর্ডেরও এ বিষয়ে রয়েছে অস্পষ্ট নীতি।
ধান-ডাল-সরিষা-ইক্ষু এই ফসল চতুষ্টয় একদা ছিল প্রধান কৃষি ফসল, যা বিদেশ থেকে আমদানির প্রয়োজন পড়তো না। এখন কি অবস্থা? এখন তো চাল, ডাল, ভোজ্য তেল আমদানি করতে হয়। আর চিনির কথা তো বলার অপেক্ষা রাখে না।
চিনি বা গুড় মিষ্টান্ন হিসেবে সমাদৃত। চিনির ব্যবহার দিন দিন বাড়ছে। কয়েক বছর আগেও এর বার্ষিক চাহিদা ছিল ১৬/১৭ লাখ টন। বর্তমানে তা ২০ লাখ টনে দাঁড়িয়েছে। কারণ চিনির বহুবিধ ব্যবহার বাড়ছেই। শুধু খাদ্য নয়, ওষুধসহ বিভিন্ন ধরনের জীবন রক্ষাকারী পণ্য উৎপাদনেও চিনির ব্যবহার বাড়ছেই।
সাম্প্রতিককালে রাজধানী ঢাকার ফুটপাতেও বিক্রি হয় আখের রস। প্রতিগ্লাস ২০ টাকা। ক্লান্ত মানুষের প্রিয় এই আখের রসকে বলা যায় ১০০ ভাগ খাঁটি পানীয়। চোখের সামনে লম্বা লম্বা ইক্ষু ক্র্যাস করে এই পানীয় বিক্রি করা হয়। আবার আস্ত ইক্ষু দন্ডও কেনা যায়। এক গজ সাইজের ইক্ষুর দামও ২০ টাকা। এটি ছিলে চিবিয়ে খাওয়া যায়।
খোঁজ-খবর নিয়ে জানা যায়, এইসব ইক্ষু দন্ড চর এলাকা থেকে ঢাকায় আসছে। ভ্যান গাড়িতে করে এসব ইক্ষু এনে ঢাকার ফুটপাতে আস্ত ইক্ষু দন্ড বা এর রস বিক্রি করা হয়। পাঠক আপনি ইচ্ছা করলে দেশি ইক্ষুর স্বাদ আহরণ করতে পারেন-যা ভেজালহীন, অকৃত্রিম।