avertisements
Text

সিমন টিসডল

ইসরায়েলের পাতা ফাঁদে পা দিয়েছে ইরান

প্রকাশ: ০৩:৫৬ পিএম, ১৭ এপ্রিল, বুধবার,২০২৪ | আপডেট: ০২:০২ এএম, ১০ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪

Text

ইরান থেকে ছোড়া মিসাইল ও ড্রোন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে বিশেষ একটা সুযোগ করে দিল। এ সুযোগের অপেক্ষাতেই ছিলেন তিনি। এই হামলা ইরানকে সরাসরি আক্রমণের বৈধতা দিল। ইরান বহু বছর ধরেই ইসরায়েলের ঘোরতর শত্রু ও সম্ভাব্য ধ্বংসকারী হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে।

এখন প্রশ্ন হলো, ইসরায়েল যে তাৎপর্যপূর্ণ জবাব দেওয়ার কথা বলছে, তার ধরন কী হবে। ইরানও পাল্টা হামলা চালাবে কি না, সেই প্রশ্নও আছে জনমনে। ইসরায়েলি মন্ত্রী বেনি গানজ তো বলেছেন, আঞ্চলিক জোট গঠন করে ইসরায়েল ইরানে হামলা চালাবে, সময় ও ইচ্ছেমতো।

যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইসরায়েলের অন্য মিত্রদেশগুলোর উচিত নেতানিয়াহুকে সোজাসুজি বলে দেওয়া যে সামরিক, কূটনৈতিক ও রাজনৈতিক যে সমর্থন, সেটি শর্তসাপেক্ষ। শুধু বৈধ এবং সমানুপাতিক প্রতিক্রিয়া দেখালেই এই মিত্রদের ইসরায়েল কাছে পাবে। ইসরায়েল যদি পাল্টা আক্রমণ না করে, সেটাই সবচেয়ে ভালো।

ইরান গুরুতর কোনো ক্ষতি করতে ব্যর্থ হয়েছে। ইসরায়েল জানিয়েছে, তারা ৯৯ শতাংশ মিসাইল ও ড্রোন ধ্বংস করেছে। ক্ষয়ক্ষতি সামান্যই। তেহরান এখন বলছে, এই পর্বের সমাপ্তি এখনই। কিন্তু হামলা হলে পাল্টা হামলার ঘোষণাও দিয়ে রেখেছে তারা।

চলমান এই সংকটের মধ্যে নেতানিয়াহু ও তাঁর যুদ্ধকালীন মন্ত্রিসভার বেপরোয়া কর্মকাণ্ডের কথা ভুলে গেলে চলবে না। ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী এক দশকের বেশি সময় ধরে ইরানের সঙ্গে ছায়াযুদ্ধ চালিয়ে যাচ্ছেন। হত্যা ও হামলার বহু ঘটনা ঘটিয়েছেন। পরমাণুবিজ্ঞানী ও ইরানের ভাড়াটে বাহিনীর সৈন্যদের খুনের দায় স্বীকার না করলেও গুপ্ত হত্যা চলেছে অবাধে।

কিন্তু ৭ অক্টোবরের পর ইসরায়েলের এই তালিকার ব্যাপ্তি আরও বেড়েছে। উদাহরণস্বরূপ ইরানের জ্যেষ্ঠ সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ রাজি মৌসাভি দামেস্কে খুন হন। ইরানের প্রতিক্রিয়া তখনো ছিল পরোক্ষ ও দুর্বল। সিরিয়ার রাজধানীতে ইরান দূতাবাসের বর্ধিত অংশে বোমা হামলার পর দেশটির প্রতিক্রিয়ার ধরন বদলে দেয়। ওই হামলায় দেশটির বেশ কয়েকজন শীর্ষ সামরিক কর্মকর্তা খুন হন। সার্বভৌমত্বে নির্লজ্জ আঘাত হানার জন্য ইরান ইসরায়েলকে দায়ী করেন।

ফলে যুদ্ধ এখন আর ছায়াযুদ্ধ থাকছে না, এই যুদ্ধ প্রকাশ্য। আর এই যুদ্ধ বাধিয়েছেন নেতানিয়াহু। তিনি জানতেন তেহরান ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানাবে। আপাতদৃষ্টে মনে হয়, তিনি তাঁর মার্কিন মিত্রদের এই হামলা সম্পর্কে আগে থেকে অবহিত করেননি। হয়তো মার্কিন প্রশাসন আগে জানলে হামলায় ভেটো দিত।

ধরন দেখে মনে হয়, নেতানিয়াহু দেশের ভেতর তাঁর রাজনৈতিক অবস্থান ধরে রাখা, মার্কিনদের অন্ধ সমালোচনাকে দমানো এবং ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধে আন্তর্জাতিক চাপকে থামিয়ে দিতে এই হামলা চালিয়েছেন।

নেতানিয়াহুর কূটকৌশল কাজে লেগেছে। রাতারাতি গাজা পরিস্থিতি নিয়ে ওয়াশিংটনের যে বিরক্তি, তা মিলিয়ে গেছে। যুক্তরাজ্যে গাজায় যুদ্ধবিরতি কিংবা ইসরায়েলি জোটের প্রতি শর্তহীন সমর্থন প্রত্যাহারে চাপ বাড়ছিল। সেটাও মিইয়ে যেতে সময় লাগবে না। যুক্তরাজ্য বরং সিরিয়া ও ইরাকের আকাশে সামরিক সহযোগিতা দিয়েছে। তার চেয়েও বড় কথা, দামেস্কের হামলার পর ইরান নিজেকে প্রকাশ করে ফেলেছে।

তেহরান এখন আর লেবাননের হিজবুল্লাহ কিংবা ইয়েমেনের হুতিদের পেছনে লুকিয়ে থাকতে পারবে না। নেতানিয়াহু তেহরানকে একরকম মল্লযুদ্ধে ডেকে এনেছেন। তেহরানের জবাব না দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। তবে এই বিশ্বাসও ভুল। নেতানিয়াহুর মতো খামেনি এবং ইরানের কট্টরপন্থী প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির হাতে আরও বিকল্প ছিল। ইরান তার এই ক্ষোভের কথা জাতিসংঘে কিংবা হেগের আন্তর্জাতিক বিচারালয়ে তুলতে পারত। তারা জি–টোয়েন্টি কিংবা ব্রিকসে তাদের মিত্রদের সহযোগিতা নিতে পারত। ইরান পাল্টা হামলার হুমকি দিয়েও চুপ করে থাকতে পারত। এভাবে তারা বৈশ্বিক দক্ষিণের পশ্চিমা বিরোধী দেশগুলো, যেমন চীন ও রাশিয়ার সহযোগিতা পেতে পারত।

এর বদলে ইরানের নেতারা নেতানিয়াহুর ফাঁদে পা দিলেন। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে ইরান এখন একঘরে। পাশাপাশি ইরানের মানুষকেও এখন ইসরায়েলের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় থাকতে হবে। যত তীব্র হবে সেই প্রত্যাঘাত, ততই অজনপ্রিয় হয়ে উঠবে ইরানের সরকার। এমনকি গণ-অভ্যুত্থানও ঘটতে পারে।

● সিমন টিসডল বৈদেশিক সম্পর্কবিষয়ক ভাষ্যকার ও কলাম লেখক

বিষয়:

লেখকের আরও লেখা

avertisements
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
মহাসড়ক অবরোধ করে ফের রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
মহাসড়ক অবরোধ করে ফের রাবি শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ
মোবাইল ইন্টারনেট চালু হলেও বন্ধ থাকছে যেসব সামাজিক মাধ্যম
মোবাইল ইন্টারনেট চালু হলেও বন্ধ থাকছে যেসব সামাজিক মাধ্যম
আইসিসির সভা অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশে
আইসিসির সভা অনুষ্ঠিত হবে বাংলাদেশে
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিপুল পুলিশ মোতায়েন
ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে বিপুল পুলিশ মোতায়েন
বাজারে নিত্যপণ্যের সংকট নেই : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
বাজারে নিত্যপণ্যের সংকট নেই : বাণিজ্য প্রতিমন্ত্রী
ঋত্বিক-সাবার বিচ্ছেদ গুঞ্জন
ঋত্বিক-সাবার বিচ্ছেদ গুঞ্জন
পল্টন মোড় থেকে ৪ আন্দোলনকারী আটক
পল্টন মোড় থেকে ৪ আন্দোলনকারী আটক
ইরানের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা পেলেন পেজেশকিয়ান
ইরানের প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা পেলেন পেজেশকিয়ান
আওয়ামী লীগের যৌথসভা মঙ্গলবার
আওয়ামী লীগের যৌথসভা মঙ্গলবার
ইসরায়েলে ঢুকতে পারে তুরস্ক : এরদোয়ান
ইসরায়েলে ঢুকতে পারে তুরস্ক : এরদোয়ান
আগরতলায় ২৩ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার
আগরতলায় ২৩ বাংলাদেশি গ্রেপ্তার
বিক্ষোভে ছাত্রদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট
বিক্ষোভে ছাত্রদের ওপর গুলি না চালানোর নির্দেশনা চেয়ে রিট
আজ দেশে আনা হচ্ছে শাফিনের মরদেহ, কাল দাফন
আজ দেশে আনা হচ্ছে শাফিনের মরদেহ, কাল দাফন
পেনশন ইস্যুতে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষকদের বৈঠক আজ
পেনশন ইস্যুতে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে শিক্ষকদের বৈঠক আজ
কণ্ঠে আহাজারি শুনি নাই, চোখে আগুন দেখেছি : মির্জা ফখরুল
কণ্ঠে আহাজারি শুনি নাই, চোখে আগুন দেখেছি : মির্জা ফখরুল
ভোলা থেকে রাতের আঁধারে পালিয়ে এসেছিল এসআই কনক
ভোলা থেকে রাতের আঁধারে পালিয়ে এসেছিল এসআই কনক
আজ চিকিৎসক ও সমাজসেবী ডা. জুবাইদা রহমানের জন্মদিন
আজ চিকিৎসক ও সমাজসেবী ডা. জুবাইদা রহমানের জন্মদিন
বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন, হার্ট ও লিভারের পরিক্ষা চলছে
বেগম খালেদা জিয়া সুস্থ আছেন, হার্ট ও লিভারের পরিক্ষা চলছে
লুটপাটের জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা : মির্জা আব্বাস
লুটপাটের জন্য আওয়ামী লীগের প্রতিষ্ঠা : মির্জা আব্বাস
দেশে একনায়কতন্ত্র চলছে : জি এম কাদের
দেশে একনায়কতন্ত্র চলছে : জি এম কাদের
ভৈরবে স্বাস্থ্য পরিদর্শকের বিরুদ্ধে জন্ম সনদ সংশোধনে ঘুষ দাবীর অভিযোগ
ভৈরবে স্বাস্থ্য পরিদর্শকের বিরুদ্ধে জন্ম সনদ সংশোধনে ঘুষ দাবীর অভিযোগ
মাঠ পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকালে অবশ্যই অফিসে থাকতে হবে
মাঠ পর্যায়ে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকালে অবশ্যই অফিসে থাকতে হবে
২৫ ফেব্রুয়ারি দেশের সব জেলায় বিএনপির পদযাত্রা
২৫ ফেব্রুয়ারি দেশের সব জেলায় বিএনপির পদযাত্রা
জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা : ইতিহাসের পুনর্পাঠ
জিয়ার স্বাধীনতা ঘোষণা : ইতিহাসের পুনর্পাঠ
জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান : জাতীয় গৌরবের সূর্যসারণি
জিয়াউর রহমান, খালেদা জিয়া এবং তারেক রহমান : জাতীয় গৌরবের সূর্যসারণি
হিংসাত্মক রাজনীতির দম্ভ : ভেঙে ফেলা হচ্ছে খুলনার নান্দনিক স্থাপনা 'জিয়া হল'
হিংসাত্মক রাজনীতির দম্ভ : ভেঙে ফেলা হচ্ছে খুলনার নান্দনিক স্থাপনা 'জিয়া হল'
নতুন পাঠ্যক্রমের ওপর জঙ্গি হামলা হয়েছে : শিক্ষামন্ত্রী
নতুন পাঠ্যক্রমের ওপর জঙ্গি হামলা হয়েছে : শিক্ষামন্ত্রী
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর নামে হাজার কোটি টাকা
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চেয়ারম্যান ও তার স্ত্রীর নামে হাজার কোটি টাকা
গুম নিয়ে মিশেল ব্যাচেলেটের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করলো ঢাকার মার্কিন দূতাবাস
গুম নিয়ে মিশেল ব্যাচেলেটের আহ্বান পুনর্ব্যক্ত করলো ঢাকার মার্কিন দূতাবাস
avertisements
avertisements