দেশের মাটিতে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:১৯ পিএম, ২৮ মে,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৪০ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
বিশিষ্ট সাংবাদিক ও কলাম লেখক আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ দেশে এসে পৌঁছেছে।
আজ শনিবার (২৮ মে) বেলা ১১টার দিকে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তাঁকে বহনকারী একটি ফ্লাইট দেশে পৌঁছায়।
বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি ২০২ ফ্লাইট শাহজালাল বিমানবন্দরে অবতরণ করে। এই ফ্লাইটেই আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ দেশে এসে পৌঁছায়।
এ সময় বিমানবন্দরে উপস্থিত ছিলেন কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোফাজ্জেল হোসেন চৌধুরী মায়া, বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের চেয়ারম্যান সাজ্জাদুল হাসান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের (বেবিচক) চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম মফিদুর রহমান, শাহজালাল বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামরুল ইসলাম প্রমুখ।
বেলা একটার দিকে আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ জাতীয় শহীদ মিনারে নেওয়া হবে।
সেখানে তাঁকে গার্ড অব অনার দেওয়া হবে। শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে। বিকেল সাড়ে ৩টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মসজিদে জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। বিকেল ৪টায় মরদেহ জাতীয় প্রেসক্লাবে নেওয়া হবে। বিকেল সাড়ে ৫টায় গাফ্ফার চৌধুরীর মরদেহ মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে সমাহিত করা হবে।
গত বৃহস্পতিবার ভোরে যুক্তরাজ্যের লন্ডনে একটি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি ভাষা আন্দোলনের স্মরণীয় গান ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারি’র রচয়িতা। তাঁর বয়স হয়েছিল ৮৮ বছর।
বরিশাল জেলার উলানিয়া গ্রামের চৌধুরী বাড়িতে জন্মগ্রহণ করেন আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী।আবদুল গাফ্ফার চৌধুরীর জন্ম ১২ ডিসেম্বর ১৯৩৪। তিনি একজন সুপরিচিত বাংলাদেশি গ্রন্থকার, কলাম লেখক। স্বাধীনতাযুদ্ধে মুজিবনগর সরকারের মাধ্যমে নিবন্ধিত স্বাধীন বাংলার প্রথম পত্রিকা সাপ্তাহিক ‘জয় বাংলা’র প্রতিষ্ঠাতা ও সম্পাদক ছিলেন।
গাফ্ফার চৌধুরী লন্ডন থেকেই বাংলাদেশের বিভিন্ন সংবাদপত্রে দীর্ঘ বছর নিয়মিত কলাম লিখে গেছেন। দেশের চলমান পরিস্থিতি ও ঘটনার ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ বজায় রাখতেন তিনি। মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু ও অসাম্প্রদায়িক চেতনার পক্ষে তাঁর কলম ছিল সোচ্চার। রাজনৈতিক ধারাভাষ্য আর সমকালীন বিষয়ের পাশাপাশি তিনি লিখে গেছেন অসংখ্য কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, স্মৃতিকথা ও প্রবন্ধ।
অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী গাফ্ফার চৌধুরী ঢাকার মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে স্ত্রীর পাশেই শেষ শয্যা নেবেন। আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ছিলেন চার মেয়ে ও এক ছেলের জনক। তাঁর মেয়ে বিনীতা চৌধুরী ৫০ বছর বয়সে গত ১৩ এপ্রিল মৃত্যুবরণ করেন।
হাসপাতালে থেকেই মেয়ের মৃত্যুর সংবাদ পেয়েছিলেন তিনি। বিনীতা চৌধুরী বাবার সঙ্গে লন্ডনের এজওয়ারের বাসায় থাকতেন ও তাঁকে দেখাশোনা করতেন।
সাহিত্যে অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, ইউনেসকো পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মানিক মিয়া পদকসহ বিভিন্ন পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন গাফ্ফার চৌধুরী। বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদক ও স্বাধীনতা পুরস্কারে ভূষিত করেছে।