চুয়েটে ২ কোটি ৪০ লাখ ব্যয়ে শরীরচর্চাকেন্দ্র নির্মাণ, চালু হয়নি দেড় বছরেও
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০০ পিএম, ৬ মার্চ,
বুধবার,২০২৪ | আপডেট: ০৪:৫৭ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে শিক্ষার্থীদের জন্য দেড় বছর আগে নির্মাণ করা হয়েছিল শরীরচর্চাকেন্দ্র। কিন্তু শিক্ষার্থীদের জন্য এখনো শরীরচর্চাকেন্দ্রটি চালু করা হয়নি। কর্তৃপক্ষের আশা ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে শরীরচর্চাকেন্দ্রটি শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া সম্ভব হবে।
২০১৯ সালের ২ অক্টোবর চুয়েটের উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় শরীরচর্চাকেন্দ্র নির্মাণের কাজ শুরু হয়। প্রায় ২ কোটি ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত ভবনটির নির্মাণকাজ শেষ হয় ২০২২ সালের ১৫ জুন। চুক্তি প্রকল্পের মেয়াদ শেষের ১৫ দিন আগে নির্মাণকাজ শেষ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তর বরাবর হস্তান্তর করে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান ইয়াকুব অ্যান্ড ব্রাদার্স।
নির্ধারিত সময়ের আগে কাজ শেষ হলেও শরীরচর্চাকেন্দ্রটিতে নেই কোনো সরঞ্জাম। তা ছাড়া শরীরচর্চাকেন্দ্রে রাখা হয়নি কোনো শৌচাগারেরও ব্যবস্থা। সরঞ্জামাদি কিনতে না পারায় প্রায় দেড় বছর ধরে পড়ে আছে নির্মিত ভবনটি।
ব্যয়ামাগারটি কবে নাগাদ চালু করা হতে পারে, তা জানতে চাইলে চুয়েটের প্রকৌশল দপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী মো. সিরাজুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমাদের জায়গা থেকে নির্মাণকাজ শেষ করেছি। কিন্তু সেটা চালু করার জন্য আগে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কিনতে হবে। সেগুলো কেনা হলে এটি চালু করা সম্ভব হবে।’
শরীরচর্চাকেন্দ্রের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি, সরঞ্জামাদি কেনাকাটা ও যাবতীয় সাজগোজবিষয়ক পরবর্তী সব পদক্ষেপ নেওয়ার দায়িত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকল্পনা ও উন্নয়ন দপ্তর (পিঅ্যান্ডডি)। কবে নাগাদ প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনা হবে, সে বিষয়ে জানতে চাইলে চুয়েটের পিঅ্যান্ডডি দপ্তরের সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ তারেকুল আলম বলেন, ‘শরীরচর্চাকেন্দ্রের নির্মাণকাজ ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির খরচসহ বাজেট সরকারের কাছে প্রস্তাব করা হলেও শুধু ভবন নির্মাণের জন্য বাজেট আসে। যন্ত্রপাতি কেনার খরচ আমরা অন্যান্য রাজস্ব খাত থেকে ব্যবস্থা করব। ইতিমধ্যে ইজারা বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান ইজারা নেওয়ার জন্য আবেদন করেছে। এগুলো যাচাই-বাছাই করে যন্ত্রপাতি কেনার প্রক্রিয়াটি সময়সাপেক্ষ। তবে আশা করছি, ছয় থেকে সাত মাসের মধ্যে শরীরচর্চাকেন্দ্রটি শিক্ষার্থীদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া সম্ভব হবে।’
এখন পর্যন্ত শরীরচর্চাকেন্দ্রটি চালু করার কোনো উদ্যোগ না নেওয়ায় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ বিভিন্ন উপায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। মেকাট্রনিকস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী ইমনুল হক রোমান বলেন, শিক্ষার্থীদের শারীরিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখতে শরীরচর্চাকেন্দ্র চালু করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। চুয়েট ক্যাম্পাস শহর থেকে দূরে হওয়ায় শিক্ষার্থীদের শরীরচর্চার জন্য এই ব্যায়ামাগার নিয়ে অনেক প্রত্যাশা ছিল। কিন্তু প্রশাসনের দায়বদ্ধতার অভাবে এটি এখনো চালু হয়নি। অনেক পেশাদার ক্রীড়াবিদ শিক্ষার্থীও এর ফলে পিছিয়ে পড়ছেন।
চুয়েটের স্পোর্টস ক্লাবের সভাপতি এবং পুরকৌশল বিভাগের শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আবিদুর রহমান হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘প্রত্যেক শিক্ষার্থী বিশেষ করে যাঁরা খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত, তাঁদের জন্য শরীরচর্চা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের একটি শরীরচর্চাকেন্দ্র থাকার পরও আমরা সেটি ব্যবহার করতে পারছি না। বিষয়টি দুঃখজনক। পর্যাপ্ত শারীরিক ফিটনেসের ঘাটতিতে আমরা বিভিন্ন আন্তবিশ্ববিদ্যালয় প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছি। আশা করছি প্রশাসন দ্রুত ব্যায়ামাগারটি চালু করার ব্যবস্থা করবে।’