গণপূর্ত প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৯ পিএম, ২ জানুয়ারী,সোমবার,২০২৩ | আপডেট: ১১:২৯ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
উন্নয়ন কাজ না করেই সরকারি বরাদ্দের কোটি কোটি টাকা তুলে নিয়ে ঠিকাদারের সাথে ভাগাভাগি করার অভিযোগ উঠেছে গণপূর্ত অধিদফতর মহাখালী বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহর বিরুদ্ধে। এছাড়া তিনি চাকরি জীবনে অসততার আশ্রয় নিয়ে অঢেল ধন সম্পদের মালিক হয়েছেন মর্মে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একাধিক সূত্রে জানা গেছে, চাকরি জীবনের শুরু থেকেই তিনি ঢাকায় অবস্থান করছেন। প্রায় এক দশককালে তিনি মাত্র ৩ মাসের জন্য ঢাকার বাইরে বদলি হয়েছিলেন। পরবর্তীতে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সাবেক সচিবকে ম্যানেজ করে আবার ঢাকায় ফিরে আসেন। ইতিপূর্বে তিনি গণপূর্ত প্রধান কার্যালয়ে রক্ষণাবেক্ষণ উপ-বিভাগের এসডি ছিলেন। এরপর সিটি ডিভিশনের এসডি ছিলেন। পরে মিরপুর ডিভিশনের দায়িত্বে ছিলেন। প্রায় এক বছর যাবত তিনি গণপূর্ত মহাখালী বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলীর দায়িত্বে রয়েছেন।
সূত্রগুলো আরও জানায়, বুয়েটে পড়াকালীন তিনি ছাত্রদলের সক্রিয় নেতা ছিলেন। এখনো বিএনপির শীর্ষ নেতাদের সাথে তার ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রয়েছে। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে যে গুরুতর অভিযোগটি উঠেছে তা হলো- তিনি মহাখালী নার্সিং কলেজের সামনের রাস্তার উন্নয়ন কাজ নামমাত্র সম্পন্ন করেই বরাদ্দের ৭ কোটি টাকা তুলে ঠিকাদারের সাথে ভাগাভাগি করে নিয়েছেন। এলাকাবাসীর অভিযোগ, এই রাস্তাটি উন্নয়নের নামে শুভংকরের ফাঁকি দিয়েছে গণপূর্ত বিভাগ। রাস্তাটির জন্য ৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হলেও কাজ করা হয়েছে ৬০-৭০ লাখ টাকার। বাকি টাকা তুলে ভাগাভাগি করা হয়েছে। এই রাস্তা ছাড়াও মহাখালী জোনে গত অর্থ বছর ও চলতি অর্থ বছরে যে সব উন্নয়ন কাজ করা হয়েছে তার সিংহভাগই নামে মাত্র সম্পাদনা করেই বিল তুলে নেয়া হয়েছে। ভুয়া বিল ভাউচারেও বরাদ্দকৃত টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে প্রচুর। নিরপেক্ষ কোনো সরকারি অডিট সংস্থা দিয়ে ফাইলপত্র নিরীক্ষা করলেই কোটি কোটি টাকা লুটপাটের প্রমাণ মিলবে। অবৈধ পথে অর্থ রোজগার করে তিনি ঢাকা শহরে কমপক্ষে ৫টি প্লট ও ফ্ল্যাট কিনেছেন বলে তার খুব কাছের আত্মীয় স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে। দুদকের মাধ্যমে তদন্ত করলে তার এ সব সম্পদের অস্তিত্ব পাওয়া যাবে এমন দাবি করেছেন তারা। তাকে ঢাকার বাইরে বদলি করতে গেলেই মন্ত্রণালয়ে ও প্রধান প্রকৌশলীকে মোটা অঙ্কের টাকা উৎকোচ দিয়ে সে উদ্যোগ থামিয়ে দেন বলে শোনা যায়।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ডিভিশনের একাধিক কর্মকর্তা এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘তার খুঁটির জোর কোথায় আমরা কেউই জানিনা। ক্ষমতা যদি নাই থাকতো তাহলে কি একটি কর্মকর্তা এতোদিন একই জায়গায় থাকতে পারে। তিনি যে কাজই করে না কেন তার (নির্বাহী প্রকৌশলী) লাগবে। এসব অভিযোগের বিষয়ে নির্বাহী প্রকৌশলী আমান উল্লাহ মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি। এই বিষয়ে গণপূর্ত অধিদফতরের প্রধান প্রকৌশলী শামীম আকতার এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘আপনার কাছ থেকেই বিষয়টি জানতে পারলাম। বিষয়টি দেখবো। সত্যতা পাওয়া গেলে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’