কোয়াডের সঙ্গে পরোক্ষ সম্পর্কে আগ্রহী বাংলাদেশ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫:২৬ পিএম, ২ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৮:৩৩ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
চার জাতির জোট কোয়াডের সঙ্গে পরোক্ষ সম্পর্ক রাখতে আগ্রহী বাংলাদেশ এবং এ জন্য জাপানকে মাধ্যম হিসেবে বিবেচনা করতে চায় ঢাকা। বেইজিং এই জোটকে চীনবিরোধী মনে করলেও ভবিষ্যৎ বিবেচনা করে বাংলাদেশ কোয়াডের সঙ্গে পরোক্ষ সম্পৃক্ততা রাখতে চায়।
এ বিষয়ে পররাষ্ট্র সচিব মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘জাপান কোয়াডের সদস্য এবং ইন্দো-প্যাসিফিকের একটি গুরুত্বপূর্ণ দেশ। এ কারণে টোকিওর সঙ্গে যদি সম্পর্ক ভালো করতে পারি, দৃঢ় করতে পারি, তবে কোয়াড বা ইন্দো-প্যাসিফিকের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত না হয়েও আমরা এক ধরনের যোগাযোগ ও প্ল্যাটফর্ম তৈরি করতে পারছি।’
তিনি বলেন, ‘বর্তমানে ভূ-রাজনৈতিক ক্ষেত্রে টালমাটাল অবস্থা বিরাজ করছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশের সক্ষমতা বিবেচনায় নিয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কৌশলগত সম্পর্ক স্থাপন করার প্রয়োজন রয়েছে। এর ফলে আমাদের ওই সক্ষমতার গভীরতা আরও বৃদ্ধি পাবে।’
জাপানের সঙ্গে স্ট্র্যাটেজিক সম্পর্ক:
বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে ২০১৪ সালে সমন্বিত অংশীদার সম্পর্কের উন্নতি হয়েছে। সেই সম্পর্ককে এখন স্ট্র্যাটিজিক স্তরে নিতে চায় দুই দেশ। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘জাপানের সঙ্গে ঐতিহাসিকভাবে আমাদের সম্পর্ক অত্যন্ত ভালো। আমাদের সমন্বিত অংশীদারিত্ব সম্পর্ককে কৌশলগত সম্পর্কে উন্নীত করার ঘোষণা আমরা আশা করছিলাম। সিদ্ধান্ত মোটামুটি হয়ে গেছে।’
প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর জাপানে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেটি স্থগিত হয়েছে। নতুন একটি তারিখ নিয়ে কাজ চলছে।’ জাপানে কোভিড পরিস্থিতি বেড়ে যাচ্ছিল জানিয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, ‘আমাদের যে অনুষ্ঠানগুলো হওয়ার কথা ছিল, সেগুলো ক্রমেই সংকুচিত হয়ে আসছিল এবং আমরা সবদিক বিবেচনা করে দেখেছি, এটি পরে করলেই ভালো হবে।’
আকর্ষণীয় বাংলাদেশ:
গত ৫০ বছরে বাংলাদেশের প্রচুর অগ্রগতি হয়েছে এবং আশা করা হচ্ছে, এটি ভবিষ্যতে এক লাখ কোটি ডলারের অর্থনীতি হবে। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের সম্প্রসারিত বাজারকে লক্ষ্য করে অনেক দেশ বাংলাদেশের প্রতি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি নিয়েছে। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ‘বাংলাদেশের যে অভূতপূর্ব অগ্রগতি অর্জন করেছে, সেটি প্রতিটি দেশের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার মূলভিত্তি হিসেবে কাজ করছে। অর্থনৈতিক অগ্রগতি যদি না থাকতো, তাহলে অন্য দেশগুলোর বর্তমানে যে আগ্রহ রয়েছে, সেটি হয়তো এতটা থাকতো না।’ বাংলাদেশ এক লাখ কোটি ডলারের অর্থনীতি হবে এবং আমাদের মধ্যবিত্ত বাড়ছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমাদের ব্যয় করার সক্ষমতা বাড়ছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ বাজার এখন পৃথিবীর একটি অন্যতম বড় বাজার। এই অভ্যন্তরীণ বাজার অনেক দেশের কাছে আকর্ষণীয়। তারা এখানে বিনিয়োগ করবে বা ব্যবসা করতে চাইবে।’
চ্যালেঞ্জ:
২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বাংলাদেশের উত্তরণ ঘটবে। এর ফলে অনেক বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে দেশটি। এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য বিভিন্নমুখী পদক্ষেপ নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন পররাষ্ট্র সচিব। তিনি বলেন, ‘‘আমরা যদি সুশাসন, শ্রম অধিকার এবং মানবাধিকারের ওপর জোর দেই, তাহলে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উত্তরণের পথ আরও মসৃণ হবে। একদিকে আমরা ব্র্যান্ডিং বাংলাদেশ নিয়ে কাজ করছি। এবং অপরদিকে ‘ইজ অব ডুইং বিজনেস’ যদি আমরা এগিয়ে নিতে পারি, তাহলে আমাদের জনকল্যাণমুখী অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার যে লক্ষ্য, সেটি অর্জন করতে পারবো।’