নারীর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক, বেতন কমল প্রশাসনের কর্মকর্তার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:০৯ এএম, ৬ নভেম্বর,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৫৪ পিএম, ১৬ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এক নারীর সঙ্গে অন্তরঙ্গতা গড়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন এবং ওই নারীর নামে ব্যাংকে হিসাব খুলে লেনদেনের দায়ে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের সাবেক ইউএনও আসিফ ইমতিয়াজের বেতন গ্রেড কমিয়ে ‘লঘুদণ্ড’ দিয়েছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আগামী তিন বছরের জন্য তার এ শাস্তি বহাল থাকবে। তিন বছর পর বর্তমান বেতন ধাপে ফিরবেন তিনি।
বিভাগীয় মামলায় তাকে এ শাস্তি দিয়ে গত ৩১ অক্টোবর প্রজ্ঞাপন জারি করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। আসিফ বর্তমানে জনপ্রশাসনে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হিসেবে আছেন।
প্রজ্ঞাপন থেকে জানা গেছে, তাহিরপুরের সাবেক উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আসিফ ইমতিয়াজ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ময়মনসিংহের এক নারীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করেন। পরে ওই নারীর নামে চট্টগ্রামের কদমতলীতে স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংকে একটি হিসাব খোলেন। ওই হিসাবে ইমতিয়াজই লেনদেন করতেন।
একপর্যায়ে ওই নারীকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান ইমতিয়াজ। পরে ওই নারী জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ও মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে ইমতিয়াজের নামে অভিযোগ দেন। এতে ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে জনপ্রশাসন বিভাগীয় মামলা করলে তিনি ব্যক্তিগত শুনানিতে অংশ নেন। পরে মামলা তদন্তে কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
তদন্ত কর্মকর্তার দেওয়া প্রতিবেদনে বলা হয়, আসিফ ইমতিয়াজের বিরুদ্ধে আনা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা-২০১৮ এর বিধি ৩(শ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’-এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু অভিযুক্ত কর্মকর্তা নবীন হওয়ায় তাকে লঘুদণ্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, বিধি অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় একই বিধিমালার ৪(২)(খ) বিধি অনুযায়ী তাকে আগামী ৩ বছরের জন্য ‘বেতন গ্রেডের নিম্নতর ধাপে অবনমিতকরণ’ অর্থাৎ ষষ্ঠ গ্রেডের ৩৫,৫০০ থেকে ৬৭,০১০ টাকা বেতন স্কেলের নিম্নধাপ ৩৫,৫০০ টাকা মূল বেতনে অবনমিতকরণ সূচক লঘুদণ্ড দেওয়া হলো।
দণ্ডের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি স্বয়ংক্রিয়ভাবে বর্তমানে প্রাপ্ত বেতন ধাপে প্রত্যাবর্তন করবেন। তিনি কোনো বকেয়া প্রাপ্য হবেন না।
জানা গেছে, ওই নারীর সঙ্গে পরিচয়ের সময় আসিফ ইমতিয়াজ চট্টগ্রামে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে এলএ শাখায় ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা (এলএও) হিসেবে কর্মরত ছিলেন। বিয়ের আশ্বাস দিয়ে স্বামী-স্ত্রী পরিচয়ে ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ফ্ল্যাট ও আবাসিক হোটেল ভাড়া নিয়ে বসবাস শুরু করেন তারা। শেষ পর্যন্ত ইমতিয়াজ ওই নারীকে বিয়ে করতে অস্বীকৃতি জানান।