সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়া, সাবেক এসিল্যান্ডের শাস্তি শুধু ‘তিরস্কার’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১০:২৬ এএম, ৩১ অক্টোবর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:৫০ এএম, ১৩ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
পরকীয়ার ঘটনা প্রমাণিত হওয়ায় নরসিংদী পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) সারোয়ার সালামকে ‘তিরস্কার’সূচক লঘুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের এই কর্মকর্তা তারই সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়েন। বিষয়টিকে ‘অসদাচরণ’ উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়।
সারোয়ার সালাম বিসিএসএস কর্মকর্তা এবং বাঞ্ছারামপুর উপজেলায় সাবেক এসিল্যান্ড। বর্তমানে স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন নরসিংদী পৌরসভার প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার দায়িত্বে আছেন।
সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কে এম আলী আজম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, বাঞ্ছারামপুরে সহকারী কমিশনার (ভূমি) থাকালালে সারোয়ার সালাম সেখানকার সহকর্মীর সঙ্গে পরকীয়ায় জড়ান। এছাড়া তিনি স্ত্রীকে শারীরিক ও মানসিকভাবে নির্যাতন করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া যায়। পুনরায় বিয়ে করার অনুমতি চেয়েও স্ত্রীর ওপর চাপ দেন।
অভিযোগ পেয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের মতামতসহ মাঠ প্রশাসন-১ শাখার ইউও নোটের পরিপ্রেক্ষিতে সালামের নামে বিভাগীয় মামলা হয়। এরপর তার কৈফিয়ত তলব এবং ব্যক্তিগত শুনানি চান কিনা, তা জানতে চাওয়া হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, সব বিষয় পর্যালোচনা সারোয়ার সালামের বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) ২০১৮-এর বিধি ৩(খ) অনুযায়ী ‘অসদাচরণ’ এর অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়। তিনি দণ্ড পাওয়ার যোগ্য। অভিযোগের মাত্রা ও প্রাসঙ্গিক সব বিষয় বিবেচনায় দোষী সাব্যস্ত করে তাকে একই বিধিমালার ৪(২) (ক) বিধি অনুযায়ী ‘তিরস্কার’সূচক লঘুদণ্ড দেয়া হলো।
অন্যদিকে, লঘুদণ্ড হিসেবে তিরস্কার দেওয়ায় সারোয়ার সালামের ভুক্তভোগী স্ত্রী খাদিজা আক্তার শাস্তি পুনর্বিবেচনার দাবি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে চলতি অক্টোবর মাসে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের কাছে আবেদন করেছেন।
সেখানে তিনি উল্লেখ করেন, সারোয়ার সালামের অপরাধ ও অপকর্মের ফলে আমার জীবন প্রতিনিয়ত শ্মশানের চিতার মতো জ্বলছে এবং আমার সন্তানের ভবিষ্যৎ অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে। একজন সরকারি কর্মকর্তার ঘরে সুস্থ স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও নারী কেলেঙ্কারিতে জড়িত হওয়ার মতো ঘটনা জঘন্য অপরাধের শামিল।
ভুক্তভোগী খাদিজা আক্তার আবেদনে বলেন, এ ধরনের অপকর্মে লিপ্ত হয়ে স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে নানামুখী নির্যাতন ও সব অধিকার থেকে বঞ্চিত করার শাস্তি কেন শুধু তিরস্কার হবে। এ ঘটনা ন্যায়বিচার প্রাপ্তির ক্ষেত্রে প্রচণ্ড আঘাতস্বরূপ। এভাবে যদি জঘন্য অপরাধ করার শাস্তি ‘তিরস্কার’ হয় তাহলে সমাজে নারী কেলেঙ্কারি ও নারী নির্যাতনকে আরও উৎসাহিত করবে। অন্যরাও এমন গর্হিত কাজ করতে কুণ্ঠাবোধ করবে না।