তিস্তার পানি হু হু করে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপরে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:০০ পিএম, ১৭ জুন,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৫১ এএম, ১৩ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
আষাঢ় মাসের ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে তিস্তার পানি হু হু করে বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা নদীর পানি বিপদসীমার উপরে ছুঁইছুঁই অবস্থান করছেন। এতে নির্ঘুম রাত কাটাচ্ছে তিস্তা ও ধরলা পাড়ের বাসিন্দারা। পানি বৃদ্ধি পেয়ে তিস্তার তীরবর্তী প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন।
আজ শুক্রবার সকাল ৬টায় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি ৫২.৭৪ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২.৬০) যা বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এর আগে, বৃহস্পতিবার রাত ৯টার দিকে জেলার হাতীবান্ধার দোয়ানীতে অবস্থিত তিস্তা ব্যারাজ পয়েন্টে পানি ৫২.৭০ সেন্টিমিটারে প্রবাহিত হচ্ছে (স্বাভাবিক ৫২.৬০) যা বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, উজানে ঢল ও ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, ইতিমধ্যে নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার সকাল ৯ টায় পানি বিপদসীমার কাছাকাছি এবং বিকেল ৩ টায় বিপদসীমা দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। পরে রাত ৯টায় ডালিয়া পয়েন্ট পানি বিপদসীমার ১০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। রাতে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে সকালে বিপদসীমা ১৪ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
উজানের ঢল ও টানা বৃষ্টিপাতে তিস্তা ও ধরলা নদীর পাশাপাশি জেলার অন্যান্য নদী ও ডোবায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে ক্রমেই বাড়ছে দুর্ভোগ। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিস্তা ও ধরলার পানি বৃদ্ধি ও জেলার পাটগ্রামের দহগ্রাম, তাঁতীপাড়া, হাতীবান্ধার গড্ডিমারী, দোয়ানী, ছয়আনী, সানিয়াজানের নিজ শেখ সুন্দর, বাঘের চর, ফকিরপাড়া ইউপির রানীগঞ্জের ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ড, সিংঙ্গামারি ইউনিয়নের ধুবনী, সিন্দুর্না ইউপির পাটিকাপাড়া, হলদিবাড়ী, ডাউয়াবাড়ী, কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী, শৈইলমারী, নোহালী, চর বৈরাতি, আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা, পলাশী ও সদর উপজেলার ফলিমারীর চর খুনিয়াগাছ, রাজপুর,গোকুণ্ডা ইউনিয়নের তিস্তা নদীর তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করেছে।
হাতীবান্ধার চর সিন্দুর্না আনোয়ার হোসেন বলেন, তিস্তা নদীর পানি বৃহস্পতিবার রাত থেকে হুহু করে বাড়ছে। নদীর তীরবর্তী হওয়ায় কয়েকদিন থেকে রাতে ঘুম আসছে না চোখে। গত রাতে তিস্তা পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ঘরবাড়িতে পানি প্রবেশ করেছে। হাতীবান্ধা উপজেলার গড্ডিমারী ইউনিয়ন এর ৬ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জাকির হোসেন জানান, সন্ধ্যা থেকে ক্রমে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেয়ে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। এতে শতাধিক পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
এদিকে, লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক আবু জাফর জানান, বন্যাসহ যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। বন্যাকবলিত পরিবারগুলোর মাঝে তালিকা তৈরি করে দ্রুত খাদ্য সামগ্রী প্রদান করা হবে।