তেল নিয়ে তেলেসমাতি : দুষছেন একে-অন্যকে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৯:২৫ পিএম, ৫ মে,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:০৪ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
তেলের মূল্য প্রতিদিন বাড়ছে। তারপরও চাহিদা মতো তারা তেল পান না বাজারে। খুচরা বিক্রেতারা বলছেন, অর্ডার করলেও অনেক দিন থেকে চাহিদা অনুযায়ী সয়াবিন তেল পাচ্ছেন না তারা। পাইকাররা বলছেন, এক ও দুই লিটার অল্প পরিমাণে পাওয়া যাচ্ছে, তাও দাম বেশি। তবে পাঁচ লিটার তেল পাওয়া যাচ্ছে না। এদিকে ভোক্তা অধিকারের ভ্রাম্যমাণ আদালত কারওয়ান বাজারের পাইকারি মার্কেটে অভিযান চালিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরির উদ্দেশ্যে গুদামে রাখা হাজার লিটার তেল উদ্ধার করছেন। পাশাপাশি জরিমানাও করছেন।
সরকারের এক মন্ত্রী তো বলেই দিলেন, বিএনপির ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দিয়েছেন। কথা হচ্ছে, বিএনপি যেখানে মিছিল-সমাবেশ করতে রাস্তাতেই নামতে পারে না, সেখানে দ্রব্যমূল্য বাড়িয়ে দিয়ে গোটা দেশে অস্থিরতা তৈরি করে দিয়ে এত বড় ‘সাফল্য’ দেখিয়ে ফেলল! আবার আরেক মন্ত্রী বলছেন, প্রধানমন্ত্রী নিজেই বাজার পরিস্থিতি মনিটর করছেন। দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি ও জনজীবনে অস্থিরতা নিয়ে এক অর্থনীতিবিদের সঙ্গে কথা হচ্ছিল। মন্ত্রীদের এসব বক্তব্য নিয়ে তার ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া হচ্ছে, কোথায় তাঁরা মানুষকে আশ্বস্ত করবেন, উল্টো এসব কথাবার্তা বলে বিভ্রান্ত করছেন! এখন বেশি আলোচনা সেটি হচ্ছে ভোজ্য তেল। আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীদের চাপে দেশেও একাধিকবার সয়াবিন তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। এরপরেও বাজারে এখন সয়াবিন তেল নেই। বাজারে তেলের মজুত ঠেকাতে খোলা তেল বিক্রির ওপরেও নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে সরকার। এদিকে সয়াবিন তেলের ৬০ শতাংশই খোলা অবস্থা বিক্রি হয়, যার মূল ভোক্তা মূলত নিম্ন ও মাঝারি আয়ের মানুষেরা। বাড়তি দামের কারণে বোতলজাত সয়াবিন তেল কিনতেও সামর্থ্যহীন তারা। তখন টিসিবির ট্রাকের পেছনে মানুষের লাইন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর তো হবেই। টিসিবির ট্রাকের আশায় মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছে, কেউ পাচ্ছে কেউ পাচ্ছে না, হাতাহাতিতে জড়াচ্ছে, মানুষ ট্রাকের পেছনে পাগলের মতো দৌড়ছে, চলন্ত ট্রাকের ওপর হামলে পড়ছে। দেশে যেন দুর্ভিক্ষ লেগে গেছে!
একেক সময় একেক পণ্য বাজার থেকে উধাও হয়ে যায়। কখনো লবণ, কখনো চিনি, কখনো পেঁয়াজ। যেন পালা করে একেক পণ্যের ব্যবসায়ীরা ‘সমঝোতা’ করে নেন বা তাদের সুযোগ করে দেওয়া হয়। একেকবার একেক পণ্যের নামে লুট হয়ে যায়, ভোটের অধিকার হারানো জনগণের পকেট, খালি হয়ে যায় মধ্যবিত্তের সঞ্চয়। লোপাটের এই মিউজিক্যাল চেয়ার খেলায় এবার কি ভোজ্য তেলের ব্যবসায়ীদের পালা? তেমনটিই তো মনে হচ্ছে, জাতীয় ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামানের বক্তব্যে। গত বুধবার মিল মালিক ও বাজারের ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন মিল মালিকেরা বলছেন যথেষ্ট তেল মজুত আছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এক মাস ধরে অর্ডার (এসও) কেটে তেল পাচ্ছেন না, যা ১৫ দিনের মধ্যে পাওয়ার কথা। এর ফলে বাজারে দেখা দিয়েছে সয়াবিন তেলের সংকট। এমন পরিস্থিতিতে বাজার থেকে এক হাজার কোটি টাকা উঠিয়ে নেওয়া হয়েছে। তিনি হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, ‘এই টাকা কে নিল তা দেখা হবে, ধরা পড়লে কেউ ছাড় পাবে না’
দেশের বাইরে একের পর এক ‘বেগমপাড়া’ গড়ে ওঠছে। যতই অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের সাফল্যে আমরা বিভোর থাকি না কেন, সংসদে ষাট শতাংশেরও বেশি সাংসদ যে ব্যবসায়ী সে কথা তো সবারই জানা আছে। সেই মতবিনিময় সভায় উপস্থিত ছিলেন টিকে গ্রুপ, মেঘনা গ্রুপ, সিটি গ্রুপ, বসুন্ধরা গ্রুপের মতো সয়াবিন তেল উৎপাদনকারী কোম্পানিগুলোর প্রতিনিধি, পাইকারি ও ডিলারদের প্রতিনিধি। সেখানে তাদের পারস্পরিক দোষারোপে স্পষ্টই বোঝা যায়, ভোজ্য তেল নিয়ে কৃত্রিম সংকট তৈরি করা হয়েছে। গ্রুপগুলোর প্রতিনিধিরা বলছেন, ঠিকঠাক পণ্য সরবরাহ করা হচ্ছে। সরকার নির্ধারিত মূল্যেই পণ্য দেওয়া হচ্ছে। সরবরাহে কোথাও কোনো ঝামেলা নেই। গত তিন মাসে কোনো কোম্পানি কত টন সরবরাহ করেছে সেই ডেটাও তারা দিলেন। বরং তাঁদের কাছ থেকে পণ্য কিনে বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে বলে পাইকারি ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন তাঁরা। অন্যদিকে পাইকার ব্যবসায়ীদের বক্তব্য, ‘সরবরাহ ঘাটতি না থাকলে আমরা কেন মাল পাই না?’ তাঁদের আরও অভিযোগ, সরকার নির্ধারিত মূল্যেও পণ্য দেওয়া হচ্ছে না। এমনকি মিলে ঢুকতে ট্রাকপ্রতি ৫০ হাজার টাকা করেও নেওয়া হচ্ছে। তেলের বিক্রয় আদেশ (এসও) কিনে ট্রাক নিয়ে এক কোম্পানির মিল থেকে আরেক কোম্পানির মিলে ঘুরলেও সয়াবিন তেল পাচ্ছেন না তাঁরা। সয়াবিন তেলের বাজারের আধিপত্য হাতে গোনা কয়েকটি কোম্পানির হাতে। ফলে এই বাজার নিয়ন্ত্রণ করা সরকারের জন্য কঠিনতর কোনো ব্যাপার নয়। এরপরও সরকার সেটি পারল না কেন? উল্টো সরকারি সংস্থার কর্ণধারই দাবি করে বসলেন, বাজার থেকে হাজার কোটি টাকা লোপাট করে দেওয়া হয়েছে। এখন কৃত্রিম সংকট তৈরি করে এই টাকাটা লোপাট করল কারা? ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মতে, দেশে বছরে ভোজ্য তেলের চাহিদা ২০ লাখ মেট্রিক টন। সে অনুযায়ী এক মাসের চাহিদা এক লাখ ৫০ হাজার টনের মতো। এখন মিল মালিকেরা বলছেন, তারা চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করেছেন। কিন্তু পাইকারি ব্যবসায়ী ও ডিলারদের ভাষ্য বলছে ভিন্ন কথা। তাহলে এই পরিস্থিতির জন্য দায়ী কে বা কোন পক্ষ? কিসের ভিত্তিতেই বা টাকা লোপাটের এই দাবি করা হলো?
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের মহাপরিচালক বলছেন, ‘প্রতিদিন যদি ৫০০০ টন ভোজ্য তেলে চাহিদা থাকে, তাতে লিটারে ১০ টাকা করে বাড়লে মোট অঙ্কটা অনেক বড় হয়। এভাবে আনুমানিক একটা পরিসংখ্যান আমরা দিয়েছি।’ তার মানে টাকা লোপাটের অঙ্কটা আরও বড়। বাজার নিয়ন্ত্রণ না আসা পর্যন্ত সেই অঙ্ক বাড়তেই থাকবে। যদিও সেটি ৫ হাজার কোটি টাকা না হয়ে যায় সেই লক্ষ্যেই নাকি কাজ করছে অধিদফতর।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে বাজারে বাজারে অভিযান চালাচ্ছে ভ্রাম্যমাণ আদালত। অনিয়মকারী খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের মোটা অঙ্কের জরিমানাও করা হচ্ছে। মতবিনিময় সভায় পারস্পরিক দোষারোপের পর কোম্পানিগুলোর মিলে মিলেও তদারকি শুরু হয়েছে। এখন তেল নিয়ে এই তেলেসমাতি কি সহসা থামবে? নাকি লোপাটের টার্গেট পূরণ হয়নি এখনো! রোজার মাস আসতে আর বেশি দিন নেই। সয়াবিন তেল নিয়ে কারসাজি কি তত দিন পর্যন্ত চালিয়ে নেওয়া হবে? অন্য কোনো পণ্যের ব্যবসায়ীরা নিশ্চয়ই তাঁদের পালার জন্য অপেক্ষা করে আছেন! এভাবেই তো দেশের বাইরে একের পর এক ‘বেগমপাড়া’ গড়ে ওঠছে। যতই অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নের সাফল্যে আমরা বিভোর থাকি না কেন, সংসদে ষাট শতাংশেরও বেশি সাংসদ যে ব্যবসায়ী সে কথা তো সবারই জানা আছে। টাকা লোপাটকারীদের কাউকেই ছাড় দেওয়া হবে না বলে যে হুঁশিয়ারি, সেটি শেষ পর্যন্ত ফাঁকা বুলিই থেকে যাবে, এ নিয়ে কোনো সন্দেহ নেই।
বেসরকারি চাকরিজীবী ইসমাইল হোসেন। নিয়মিতই মাসের বাজার করেন কারওয়ান বাজার থেকে। আজ বৃহস্পতিবার সয়াবিন তেল কিনতে বাজারে গিয়ে কয়েকটি দোকান ঘুরেছেন কিন্তু তেল পাননি। পরে এক দোকানে পান এক লিটারের তেলের বোতল। দোকানি দাম চেয়েছেন ২০০ টাকা। তিনি ১৯০ টাকায় এক লিটার তেল কিনেছেন। তিনি বলেন, ‘প্রয়োজন ছিল ৫ লিটারের কিন্তু পেলাম না। এখন এক লিটারই কিনতে হলো ১৯০ টাকায়, তাও দশ দোকান ঘুরে। কারওয়ান বাজার, নিউমার্কেট ও হাতিরপুল বাজার ঘুরে একই অবস্থা দেখা গেছে। এসব বাজারে সয়াবিন তেল নেই বললেই চলে। হাতিরপুল এসে রোকসানা নামের একজন গৃহিণী বোতলজাত সয়াবিন তেল পাননি বলে জানান রাইজিংবিডিকে। তিনি বলেন, ‘দোকানিকে তেল না থাকার কারণ জিজ্ঞেস করলে উত্তর দেন, কোম্পানিরা না দিলে আমরা কী করবো? ঈদের আগে থেকে অর্ডার করার পরও দেয়নি। দু-একটি কোম্পানি সরবরাহ করে যা, সেই তেল নিলে এক লিটার ২০০ টাকায় বিক্রি করা লাগতো। আপনারা তো ২০০ টাকায় নিতেন না। এখন আমরা কী করবো? গ্রিন রোডের স্বপ্ন সুপার শপে গিয়ে দেখা গেছে, বোতলজাত কোনো সয়াবিন তেল তাদের ডিসপ্লেতে নেই। দায়িত্বরত কর্মী জানান, ঈদের আগেই তেল শেষ হয়ে গেছে। সেখানে কেনাকাটা করতে আসা মনির হোসেন বলেন, ‘অনেক দোকান ঘুরলাম কারো কাছে তেল নেই। ভাবলাম এখানে পাবো, অথচ এখানেও নেই।’
নিউমার্কেটে অনেক খুঁজে দুই লিটার তেলের বোতল কিনেছেন নয়ন নামের একজন চাকরিজীবী। তিনি বলেন, ‘তেল দরকার বলে দুই লিটার নিলাম ৩৯০ টাকায়। লিটারের দাম পড়লো ১৯৫ টাকা।
তেলের দাম জানতে চাইলে হোসেন স্টোরের আরিফ হোসেন বলেন, ‘সাপ্লাই নেই। পাঁচ লিটারের কোনো তেলের বোতল নেই অনেক দিন থেকে। রমজানের শুরু থেকে এখনো পর্যন্ত ডিলাররা পাঁচ লিটারের কোনো তেল সাপ্লাই করেনি। এক-দুই লিটার যা দিচ্ছে, ২০টা অর্ডার দিলে ৬টা দিচ্ছে। আমাদের দিচ্ছে এক লিটার তেল ১৮০ থেকে ১৯০ টাকায়। আমরা বিক্রি করছি ২০০ টাকায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কারওয়ান বাজারের একাধিক ব্যবসায়ী জানান, এখন যাদের কাছে তেল মজুত আছে, তারা সয়াবিন তেলের বোতলের মুখ খুলে সে তেল খোলা আকারে বিক্রি করছেন। এতে তাদের লাভ বেশি হচ্ছে, ঝুঁকিও কম। এক লিটার বোতলজাত সয়াবিন তেলের সরকারি রেট ১৬০ টাকা। কিন্তু কেজি হিসাবে ধরলে (এক কেজি সমান ১.০৯ লিটার) তা ১৭৫ টাকা পড়ে। কিন্তু বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২১০ টাকায়। তাই বেশি লাভের আশায় বোতলের তেল খুলে খোলা বিক্রি করছেন এসব ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি স্বীকার করে হাতিরপুলের ব্যবসায়ী মমিনুর রহমান বলেন, ‘এক লিটার বোতলের গায়ে রেট ১৬০ টাকা, কিন্তু আমাদের কিনতে হচ্ছে ১৮০ টাকার বেশি। ক্রেতারা গায়ের রেট দিতে চান, এ নিয়ে তর্ক-বিতর্ক হয়। তাই আমরা বোতল খুলে তেল বিক্রি করছি। এতে কারো সঙ্গে কোনো ঝামেলা হচ্ছে না। তেলের দাম বেশি-তারপরও সরবরাহ কমের কারণ জানতে চাইলে দেশের অন্যতম আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান সিটি গ্রুপের পরিচালক বিশ্বজিৎ সাহা বলেন, ‘সরকারের নির্ধারিত দামেই আমরা চাহিদা অনুযায়ী মিল থেকে তেল সরবরাহ করছি। আমাদের উৎপাদন বা সরবরাহে কোনো সংকট নেই। বিশ্ববাজারে সয়াবিন তেলের দাম বেড়েছে। সঙ্গত কারণে আমাদের বাজারেও তার প্রভাব পড়বে এমন ভাবনায় ডিলার ও খুচরা দোকানিরা তেল বিক্রি না করে মজুত করছেন। পরে বেশি দামে বিক্রি করবেন, এ কারণেই তারা তেলের সরবরাহের সংকট বলে অজুহাত দেখাচ্ছেন। বাজারে সয়াবিন তেলের সংকট বিষয়ে এই ব্যবসায়ী বলেন, ‘মিল মালিকরা তেলের সরবরাহ ঠিক রাখলেও ডিলার, পাইকার ও খুচরা দোকানিরা চাহিদা অনুযায়ী তেল বিক্রি করছেন না। যেহেতু ঈদ শেষ হয়েছে, তাই দ্রুত আমরা মিল মালিকদের প্রতিনিধি, পরিবেশক, পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতাদের ডাকবো। আলোচনা করে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করবো। তেলের মূল্য বৃদ্ধি, বাজারে তেলের সংকটসহ সার্বিক বিষয়ে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরের পরিচালক মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ার বলেন, ‘বাজারে সয়াবিন তেল সংকট নিয়ে আমাদের পর্যবেক্ষণ হচ্ছে, মিলগুলো তাদের সরবরাহ ঠিক রাখলেও ডিলার, পাইকার ও খুচরা দোকানিরা চাহিদা অনুযায়ী দোকান থেকে তেল বিক্রি করছেন না। তারা পর্যাপ্ত তেল মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করছেন। আমরা বিভিন্ন সময়ে অভিযানে গিয়ে তার প্রমাণ পেয়েছি। এ কারণে আমরা বেশ কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে অবৈধভাবে তেল মজুত করার দায়ে জরিমানাও করেছি। মনজুর মোহাম্মদ শাহরিয়ারের বক্তব্যের বিষয়ে দ্বিমত প্রকাশ করে বাংলাদেশ ভোজ্যতেল ব্যবসায়ী সমিতির সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী বলেন, পাইকারি বাজারে বেশিরভাগ ভোজ্যতেল বাল্ক আকারে বিক্রি হয়। কিন্তু অধিকাংশ মিল থেকে বাল্কে তেল বিক্রি করেনি। ঢাকায় বাল্কে তেল বিক্রি করেছে মাত্র তিনটি মিল এবং চট্টগ্রামে দুটি। এর মধ্যে ঢাকায় সিটি, মেঘনা, টি কে গ্রুপ আর চট্টগ্রামে এস আলম আর সিটি গ্রুপ। অন্য যেসব ভোজ্যতেলের প্রতিষ্ঠান আছে, তারা চাহিদা মতো তেল সরবরাহ করেনি। আমরা খোঁজ নিয়ে জেনেছি, এসব মিলে তেলের কোনো সংকট নেই। তাই সব মিল চাহিদা মতো সরবরাহ করলেই বাজার ঠিক হয়ে যাবে।