শ্রীপুরে এক পরিবারে ৭ অন্ধের দূর্বীসহ জীবন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১১ পিএম, ১৭ জানুয়ারী,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:৪৯ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
জোনাকী, বয়স এগার। পরিবারের সর্ব কনিষ্ঠ সদস্য সে। এ বয়সে তার বই খাতা নিয়ে স্কুলে যাবার কথা। দু’চোখ জন্মান্ধ। অন্ধত্ব কেড়ে নিয়েছে তার সব আনন্দ। সে জন্মের পর পৃথিবীর আলো দেখেনি। শুধু জোনাকী নয় একই পরিবারে রয়েছে আরও ছয় জন অন্ধ ব্যক্তি। সাত জন অন্ধের পরিবারে তেমন আয় উপার্জন না থাকয় দূর্বীসহ জীবন যাপন করছে তারা।
ভুক্ত ভোগীরা হলো গাজীপুরের শ্রীপুর পৌর এলাকার উজিলাব গ্রামের মৃত হোসেন আলীর ছেলে আমির হোসেন (৪০) মো. জাকির হোসেন (২৫) মেয়ে নাসরিন আক্তার (৩০) হাসিনা আক্তার (৩২) পুত্র বধু শিউলী আক্তার (৩০) নাতনি রুপা আক্তার (১২) ও জোনাকী (১০)।
জাকির হোসেন জানান, একই পরিবারে ভাই, ভাবি, দু’বোন, মেয়ে, ভাগ্নি সহ সাত জন অন্ধ। পরিবারের আর্থিক সচ্ছলতা নেই। কেউ কোন কাজকর্ম করতে পারেনা। অনুমান নির্ভর হয়ে সংসারের নিত্য প্রয়োজনীয় কাজ করে থাকেন তারা। অর্থের অভাবে কারো চিকিৎসা হয়নি। অন্ধত্ব আর অভাবের কারণে ছোট জোনাকীকে রেখে সংসার ছেড়ে স্ত্রী খাদিজা চলে গেছে বহু আগেই। অভাবে অর্ধাহারে অনাহারে দিন কাটে তাদের। অন্ধত্বকেই ভাগ্য বলে মেনে নিয়েছেন তারা।
সাত জন অন্ধেদের মধ্যে পাঁচ জন প্রতিবন্ধি ভাতা পান। ভিক্ষা করেন না তারা। সংসারের সামান্য আয় আর প্রতিবন্ধি ভাতার টাকায় খেয়ে না খেয়ে কোনো মতে চলে তাদের সংসার। তিন বেলা মুখের আহার জোটেনা। সংসারে আয়ের আরকোন পথ না থাকায় কোন ভাবে বেঁচে থাকাকেই দায় হয়ে দাড়িয়েছে। তিনি দাবী করেন সমাজের বিত্তবানরা সহায়তার হাত বাড়ালে এ অসহায় পরিবারটি নিয়ে মানবিক জীবন ফিরে পেতাম।
জাকির হোসেন আরও জানান, অসহায় পরিবারের পাশে দাড়িয়েছেন শ্রীপুরের জৈনা বাজার এলাকার ব্যবসায়ী মো.সাদ্দাম হোসেন অনন্ত। তিনি তাদের পরিবারকে সহায়তা করছেন। এখন মেয়ে জোনাকীর চোখের চিকিৎসার ব্যবস্থা ও করছেন তিনি।
ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন জানান, মানবিক দৃষ্টি কোন থেকেই পরিবারটির পাশে দাড়িয়েছি। সাদ্দাম হোসেনের সহযোগিতায় ঢাকার ইসপাহানি ইসলামীয়া চক্ষু ইনিস্টিটিউট হাসপাতালে ছোট্ট মেয়ে জোনাকীর চিকিৎসা চলছে। সাদ্দাম হোসেন সমাজের বিত্তবানদের এ অসহায় পরিবারের পাশে দাড়ানোর আহ্বান জানান।
উপজেলা সমাজসেবা কর্মকর্তা মো. মন্জুরুল ইসলাম জানান, পরিবারের ৫জন ভাতা পায়। বাকীদের ও ভাতার ব্যবস্থা করা হবে। চিকিৎসা সহ জরুরী প্রয়োজনে সহায়তা করা হবে। এছাড়া বিভিন্ন সংস্থার মাধ্যমে সহায়তা প্রদানের চেষ্টা চলছে।
শ্রীপুর পৌরসভার মেয়র আলহাজ্ব মো. আনিছুর রহমান জানান, আমি পরিবারটির বিষয়ে জানতে পেরেছি। তাদের সহায়তার ব্যবস্থা করা হবে।