ফরাসি বাস্তবতার বিরুদ্ধে স্প্যানিশ ম্যাজিকের লড়াই
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১১:৩৬ এএম, ৯ জুলাই,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০২:৪৭ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ইউরো কাপের প্রথম সেমিফাইনালটি মতাদর্শের লড়াই। ফ্রান্স মূলত নিরাপত্তাই প্রথম বা সেফটি ফাস্ট পদ্ধতিতে বিশ্বাসী। বিপরীতে স্পেনের নীতি জয় আর উল্লাস। দিদিয়ের দেশমের অধীনে ফরাসিরা বরাবরই নিজেদের দূর্গ সামলে আক্রমণে ওঠে। অনেকক্ষেত্রে বিরক্তকর হলেও সফল তারা।
ইউরোতে খেলা পাঁচ ম্যাচের চারটি গোল হজম করেনি ফরাসিরা। গত ৮ বছরে বড় আসরের চতুর্থ ফাইনালে খেলা হাতছানি এমবাপ্পে-গ্রিজম্যানদের। ঘরের মাঠে ২০১৬ সালের ফাইনালে পর্তুগালের কাছে হেরে যায় ফরাসিরা।
২০১৮ ও ২০২২ বিশ্বকাপের ফাইনালে খেলার পর আবারও মেজর টুর্নামেন্টে ফাইনালে খেলতে আর এক জয় দূরে ফ্রান্স। আন্তর্জাতিক ফুটবলে এ ধরনের ধারাবাহিকতা বিরল।
যদিও স্পেনও জানে কীভাবে দীর্ঘ সময় ধরে ভালো করতে হয়। ২০০৮ থেকে ২০১২, এ চার বছর স্বপ্নের মতো কেটেছে স্প্যানিশদের। ২০০৮ সালে ইউরো, ২০১০ সালে বিশ্বকাপ এবং ২০১২ সালে আবার ইউরো জয়ের মধ্য দিয়ে ইতিহাসের প্রথম দল হিসেবে তিনটি বড় শিরোপা জয়ের রেকর্ড গড়ে তারা।
তবে এরপর হঠাৎ ছন্দপতন হয় তাদের। ২০১২ ইউরো জয়ের পর বড় আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে মাত্র সাতটি ম্যাচ জেতে তারা। ২০২৩ সালে উয়েফা নেশন্স লিগের ফাইনাল জিতে আবারও সেনালী দিন ফিরে আনার সম্ভাবনা জাগিয়েছে স্পেন।
চলতি ইউরোতে তারাই একমাত্র দল যারা পাঁচ ম্যাচের সবকটিতেই জিতেছে। গোল করাতেও শীর্ষে (১১টি) স্পেন। সর্বোচ্চ ১০২ বার গোলের প্রচেষ্টা করেছে তারা। শুধু তাই নয় প্রতিপক্ষে গোলের প্রচেষ্টা রুখে দেওয়াতেও শীর্ষে (২৩০) স্পেন। অর্থ্যাৎ আক্রমণাত্মক এবং রক্ষণাত্মক, দুই ক্ষেত্রে এগিয়ে তারা।
স্পেনের হয়ে আক্রমণভাগে নেতৃত্ব দিচ্ছেন উইঙ্গার নিকো উইলিয়ামস ও লামিন ইয়ামাল। প্রথমজনের বয়স ২১ আর পরেরজনের মাত্র ১৬ বছর। ভয়হীন ফুটবল খেলতে তাদের মুক্ত করে দিয়েছেন কোচ লুইস দে লা ফুয়েন্তে।
ফলে স্প্যানিশদের আক্রমণে এক ধরনের সৃজনশীলতা তৈরি হয়েছে, যা ম্যাজিকেল ফুটবলকে অনুপ্রাণিত করে।
অন্যদিকে গভীর বাস্তবতা নিহিতে গঠিত ফ্রান্স। তারা এমন একটি দল প্রয়োজন পড়লে কীভাবে নির্মমভাবে ম্যাজিকেল ফুটবল ধ্বংস করতে হয়, তা তাদের ভালো জানা।
ফরাসি দলে এমন খেলোয়াড় রয়েছে যারা গতি আর সাহসিকতা দিয়ে একটি উত্তেজনাপূর্ণ খেলা তৈরি করে। ম্যাচ ঘুরিয়ে দেওয়ার জন্য কিলিয়ান এমবাপ্পের একটু সময় দরকার।
এবারের ইউরোতে গোল খরায় ভুগছেন তিনি। আসরের একমাত্র গোলটি এসেছে পেনাল্টি থেকে। ফর্মহীন এমবাপ্পে শেষ ৯ ম্যাচে করেছেন মাত্র ২ গোল। এমবাপ্পের অফ ফর্মের সঙ্গে গোল খরা চলছে ফ্রান্সেও।
বেশির ভাগ ম্যাচেই আত্মঘাতী গোলে জয় পেয়েছে ফরাসিরা। স্প্যানিশ ম্যাজিক্যাল ফুটবলের বিপক্ষে নিজেরা গোল করতে না পারলে কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হতে হবে ফ্রান্সকে।