‘সুপার এইট’ মিশনে বাংলাদেশের সামনে এবার ডাচরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪২ পিএম, ১৩ জুন,বৃহস্পতিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৮:৩৩ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যুক্তরাষ্ট্র পর্বে দুই ম্যাচ খেলার পর বাংলাদেশ দল এখন ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে। টুর্নামেন্টে বাংলাদেশ কতদূর যাবে তা বলা যাচ্ছে না এখনই। তবে পরের সবগুলো ম্যাচই বাংলাদেশকে খেলতে হবে ওয়েস্ট ইন্ডিজে। এদিকে, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের পর নিউইয়র্কে দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হারলেও সুপার এইটে যাওয়ার সম্ভাবনা এখনও টিকে আছে বাংলাদেশের। বৃহস্পতিবার ডাচদের হারাতে পারলেই অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যাবে বাংলাদেশের সুপার এইট পর্ব। বৃহস্পতিবারের ম্যাচটি রাত সাড়ে ৮টায় সরাসরি সম্প্রচার করবে নাগরিক টেলিভিশন।
আজকে এই ম্যাচ দিয়ে সেন্ট ভিনসেন্টে অবস্থিত আর্নোস ভ্যালে গ্রাউন্ডের অচলায়তন ভাঙছে। এই মাঠে সর্বশেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়েছিল ঠিক ১০ বছর আগে। ২০১৪ সালে দ্বি-পাক্ষিক সিরিজে প্রথম টেস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিপক্ষ ছিল বাংলাদেশই। এরপর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রায় নির্বাসিত কিংসটাউনের এই মাঠ। হয়নি সিপিএলের কোনও ম্যাচও। এখানে আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টি ম্যাচই হয়েছে স্রেফ দুটি, তাও সেই ২০১৩ সালে। সেই দুই ম্যাচে স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্রতিপক্ষ ছিল পাকিস্তান।
আজ রাতে মাঠে নামার আগে দুই দলই একই সমীকরণে সহ-অবস্থান করছে। নিউইয়র্কে দুই দল সর্বশেষ দক্ষিণ আফ্রিকার কাছে হেরে এসেছে। নেদারল্যান্ডস তাদের প্রথম ম্যাচ জিতেছে নেপালের বিপক্ষে ৬ উইকেটে, আর বাংলাদেশ জিতেছে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে। বৃহস্পতিবার তৃতীয় ম্যাচে মাঠে নামার আগে একটি জায়গাতে খানিটকা এগিয়ে ডাচরা। ম্যাচের আগে ৪ দিন বিরতি পেয়েছে নেদারল্যান্ডস, অন্যদিকে বাংলাদেশ পেয়েছে মাত্র দেড় দিন। একবেলা অনুশীলন করে বাংলাদেশ দল চেষ্টা করেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের কন্ডিশনে মানিয়ে নিতে। সাম্প্রতিক ব্যাটিং পারফরম্যান্সে ডাচদের চেয়ে খানিকটা পিছিয়ে থাকলেও সার্বিক পারফরম্যান্সে অনেকটুকুই এগিয়ে বাংলাদেশ। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের মঞ্চে নেদারল্যান্ডসকে দুই বার হারিয়েছে শান্তরা। ২০১৬ সালে ধর্মশালায় এবং ২০২২ সালে হোবার্টে ডাচদের বিপক্ষে তারা ম্যাচ জিতেছে। সব মিলিয়ে চারবারের সাক্ষাতে ডাচদের বিপক্ষে তিন ম্যাচ জিতেছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। এবারও হয়তো এই ধারা অব্যহত রাখতে পারবে বাংলাদেশ দল।
তবে সেটি করতে হলে ব্যাটারদের ফর্মে ফেরা জরুরি। টপ অর্ডার ব্যাটাররা আগের দুই ম্যাচে কোনও প্রভাব রাখতে পারেননি। যুক্তরাষ্ট্রের উইকেটগুলোতে ব্যাটিং করাটা বেশ চ্যালেঞ্জিং ছিল। ওই কারণে খুব বেশি রানও হয়নি স্কোরবোর্ডে। এবার ভেন্যু পাল্টানোর পর ব্যাটাররা ছন্দে ফিরতে পারেন কিনা সেটা দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেটপ্রেমী দর্শকরা। মাহমুদউল্লাহ আর তাওহীদ হৃদয় ছাড়া কোনও ব্যাটার আগের দুই ম্যাচে প্রভাব রাখতে পারেননি। সাকিব আল হাসান এখনও নিষ্প্রভ; সেটিই বড় ঘাটতি হয়ে দাঁড়িয়েছে।
শান্তও অবশ্য দলের ব্যাটিং নিয়ে চিন্তিত নন। তার মতে প্রতিদিন সবাই ভালো করবে না, ‘দুই-তিনজন ভালো ব্যাটিং করেছে। লিটন, হৃদয়, রিয়াদ (মাহমুদউল্লাহ) ভাই ভালো টাচে আছে। টি-টোয়েন্টিতে যেদিন যে খেলবে, তার শেষ করে আসাটা গুরুত্বপূর্ণ। কখনও আশা করি না, সাত ব্যাটার ভালো খেলবে। যে সেট হচ্ছে সে যেন ম্যাচ শেষ করে আসে। অবশ্যই ওপর থেকে শেষ করে আসতে পারলে ভালো।’
এমনিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠগুলোতে স্পিনাররা সুবিধা পেয়ে থাকেন। সেজন্য আর্নোস ভ্যালে গ্রাউন্ডে দুই দলেরই স্পিন সহায়ক উইকেট দেখা যেতে পারে। সেক্ষেত্রে বাংলাদেশ দলে এই ম্যাচেও পরিবর্তন আসতে পারে। জাকের আলী অনিকের পরিবর্তে একাদশে আসতে পারেন শেখ মেহেদী হাসান কিংবা তানভীর ইসলাম। ব্যাটিং প্রশ্নের জন্ম দিলেও এখন পর্যন্ত বোলিং পারফরম্যান্স দুর্দান্ত।
দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হারলেও স্লো উইকেটে ভালোই লড়াই করেছে বাংলাদেশ। ডাচদের বিপক্ষে ম্যাচের আগে শান্ত বলেছেন, বাংলাদেশ দলের সুপার এইটে যাওয়া উচিত, ‘আমরা গত কয়েকটি ম্যাচ যেভাবে খেলেছি, সেটি দারুণ। ছেলেরা পরিশ্রম করছে। আগামী ম্যাচে জয়ের প্রত্যাশা আছে। এখন যে পর্যায়ে আছি, আমার মনে হয় বাংলাদেশের সুপার এইটে যাওয়া উচিত। যুক্তরাষ্ট্রের মতো এখানেও দর্শক সমর্থন পাবো আশা করছি। সবমিলিয়ে আমাদের প্রত্যাশা পরের পর্বে যাওয়া।’
ডাচদের হারাতে পারলে সুপার এইটে যাওয়ার পথটা সহজ হয়ে যাবে। নয়তো শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে সমীকরণের মারপ্যাঁচে পড়তে হবে। বাংলাদেশ দল নিশ্চিয়ই এমন কিছুর সামনে পড়তে চাইবে না। তবে শঙ্কাও আছে। ভারতে অনুষ্ঠিত ২০২৩ ওয়ানডে বিশ্বকাপে নেদারল্যান্ডসের কাছে ৮৭ রানের হারের লজ্জা পেয়েছিল বাংলাদেশ। ওই হারের কারণে সমালোচনার মুখে পড়েছিল লাল-সবুজের জার্সিধারীরা। এবার কুড়ি ওভারের বিশ্বকাপে একই দলের বিপক্ষে দেখা হচ্ছে। শান্তরা নিশ্চয়ই ‘বদলা’ নেওয়ার অপেক্ষাতে প্রহর গুণছেন!