ব্যাটিং ব্যর্থতায় তীরে এসে তরী ডুবাল বাংলাদেশ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩৭ পিএম, ১১ জুন,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০২:১৮ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ। নিউইয়র্কের নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টস জিতে ব্যাট করার সিদ্ধান নেয় প্রোটিয়ারা। আগে ব্যাট করতে নেমে টাইগার বোলারদের তোপে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রানের সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশ ব্যাটারদের ব্যাটিং ব্যর্থতায় ২০ ওভারে ৭ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রান করে। তাতে ৪ রানে জয়ে সুপার এইট নিশ্চিত করে দক্ষিন আফ্রিকা।
১১৪ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাংলাদেশের হয়ে ইনিংস শুরু করতে নামেন অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত ও তানজিদ তামিম। রানা তাড়া করতে প্রথম ওভারে ১ রান নেন টাইগাররা। এরপর ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে রাবাদাকে দুই বলে টানা দুটি চার হাঁকান তামিম।
তবে তার করা ওভারের শেষ বলে উইকেটের পিছে ধরা পড়েন তামিম। যাবার আগে ৯ রান করেন এই ব্যাটার। এরপর দ্বিতীয় উইকেটে ব্যাট হাতে আসেন লিটন কুমার দাস। তাকে সঙ্গে নিয়ে ব্যাট করতে থাকেন শান্ত। তবে উইকেটে থিতু হয়ে পাওয়ার প্লের শেষে উইকেট বিলিয়ে দিয়ে আসেন লিটন।
এরপর তিন নম্বরে ব্যাট করতে আশা সাকিব দায়িত্বহীনতার পরিচয় দিয়ে সাজঘরে ফেরেন। প্যাভিলিয়নে যাবার ৪ বলে ৩ রান করেন তিনি। এরপর দ্রুত আউট হন শান্তও। তাতে চাপে পড়ে বাংলাদেশ।
সেই চাপ সামলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে সঙ্গে নিয়ে হাল ধরেন তাওহিদ হৃদয়। দেখেশুনে খেলতে থাকেন এই দুই ব্যাটার। ৪৪ রানের জুটিতে বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান তারা। তবে দলীয় ৯৪ রানে হৃদয় আউট হলে ভাঙে এই জুটি। এরপর লড়াই চালিয়ে যান মাহমুদউল্লাহ।
শেষ ২ বলে যখন বাংলাদেশের জয়ের জন্য প্রয়োজন ৬ রান। লং অনে ব্যাট চালান রিয়াদ। তবে অল্পের জন্য বাউন্ডারি লাইনে মার্করামের হাতে ক্যাচ হন তিনি। সেইসঙ্গে বাংলাদেশ জয়ের স্বপ্নও শেষ হয়ে যায়। শেষ পর্যন্ত ৭ উইকেট হারিয়ে ১০৯ রানে থামে বাংলাদেশ। তাতে ৪ রানের জয় পায় প্রোটিয়ারা।
এর আগে নাসাউ কাউন্টি ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রোটিয়াদের হয়ে ইনিংস শুরু করতে নামেন কুইন্টন ডি কক ও রেজা হেনড্রিকস। গত ম্যাচের মতোই বাংলাদেশের বোলিং ইনিংস আজও ওপেন করেন তানজিম হাসান সাকিব। প্রথম ওভারে কুইন্টন ডি ককের কাছে টানা ছয়-চার হজম করেন তানজিম হাসান সাকিব।
শেষ বলে স্ট্রাইকে আসেন রেজা হেনড্রিক্স। বাংলাদেশি বোলারের মুখোমুখি হয়ে নিজের প্রথম বলেই আউট হন তিনি। তানজিমের এলবিডব্লিউর আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। দলীয় ১১ রানে প্রথম উইকেট হারায় দক্ষিণ আফ্রিকার। নিজের দ্বিতীয় ওভারে বল হাতে নিয়ে আরেকবার দক্ষিণ আফ্রিকার ব্যাটিং অর্ডারে আঘাত করলেন তানজিম হাসান সাকিব।
আগের ওভারে তাকে টানা ছয়-চার মারা কুইন্টন ডি ককের অফস্টাম্প ভাঙেন বাংলাদেশি পেসার। তৃতীয় বলে পুল করতে গিয়ে প্রোটিয়া ব্যাটার বলে ব্যাট ছোঁয়াতে পারেননি। ১১ বলে ১৮ রান করেন ডি কক। তাতে প্রোটিয়াদের ১৯ রানে দ্বিতীয় উইকেটের দেখা পায় বাংলাদেশ।
এরপর প্রোটিয়া অধিনায়ক এইডেন মার্করাম ও ট্রিস্টান স্টাবস মিলে শুরু ধাক্কা সামাল দেওয়ার চেষ্টা করেন। তবে দলীয় ২৩ রানে আরও জোড়া উইকেট হারিয়ে বিশাল চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। ৮ বলে ৪ রান করা মার্করামকে সাজঘরে ফেরান তাসকিন আহমেদ। আর স্টাবসকে নিজের তৃতীয় শিকার বানান তানজিম সাকিব।
তাতে ২৩ রানে চার উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে প্রোটিয়ারা। সেখান থেকে চাপ সামলিয়ে দলকে এগিয়ে নিতে থাকেন হেনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার। ৭৯ রানের জুটি গড়েন এই দুই ব্যাটার। তবে দলীয় ১০২ রানে ক্লাসেনকে আউট করে বাংলাদেশকে ব্রেক থ্রু এনে দেন তাসকিন। সাজঘরে যাবার আগে ৪৬ রান করেন তিনি।
এরপর রিশাদের ঘূর্নিতে দ্রুত ফেরেন মিলারও প্যাভিলিয়নে যাবার আগে ২৯ রান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ১১৩ রান সংগ্রহ পায় দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশের হয়ে বল হাতে সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন তানজিম সাকিব।