বিশ্বকাপ খেলতে যুক্তরাষ্ট্রের পথে বাংলাদেশ দল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:৩৬ পিএম, ১৬ মে,বৃহস্পতিবার,২০২৪ | আপডেট: ১২:৩০ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
২ জুন বিশ্বকাপ শুরু হলেও বাংলাদেশের বিশ্বকাপ শুরু হবে ৮ জুন। বিশ্বকাপের এখনও অনেকটা সময় বাকি থাকলেও বুধবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটায় যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে উড়াল দিয়েছেন বাংলাদেশের ক্রিকেটাররা।
সেখানে গিয়ে অনুশীলন সেরে স্বাগতিক যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে তিনটি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ দল। এরপর আরও দুটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে নামবে বিশ্বকাপের মূল মঞ্চে। সব মিলিয়ে বিশ্বকাপের আগে প্রস্তুতিতে কোনো ঘাটতি রাখছে না বাংলাদেশ। এখন প্রত্যাশা সাফল্যের।
একটু আগে ভাগেই ক্রিকেটাররা চলে যান বিমানবন্দরে। বেশ কয়েকজন ক্রিকেটার ব্যক্তিগত গাড়িতে করে বিমানবন্দরে এলেও কিছু ক্রিকেটার বিসিবির গাড়িতে করে স্টেডিয়াম থেকে বিমানবন্দরে পৌঁছান। অফ স্পিন অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী হাসানের সঙ্গে বাসে ছিলেন তানজিদ হাসান তামিম, জাকের আলী অনিক, রিশাদ হোসেন, তানজিম হাসান সাকিব ও রিজার্ভে থাকা আরেক ক্রিকেটার হাসান মাহমুদ।
এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ‘ডি’ গ্রুপে রয়েছে বাংলাদেশ। যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ হিসেবে রয়েছে শ্রীলঙ্কা, দক্ষিণ আফ্রিকা, নেদারল্যান্ডস এবং নেপাল। আগামী ৮ জুন শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু করবে বাংলাদেশ।
বিশ্বকাপের মূল পর্বে খেলতে নামার আগে ১ জুন নিউ ইয়র্কে ভারতের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে আরেকটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলার কথা থাকলেও সেটার সম্ভাবনা ক্ষীণ। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের কন্ডিশনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সহ-আয়োজক দেশটির সঙ্গে তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলে বিশ্বকাপের মঞ্চে মাঠে নামবে বাংলাদেশ। আগামী ২১ মে ,২৩ এবং ২৫ মে ম্যাচগুলো মাঠে গড়াবে।
প্রতিটি বিশ্বকাপের আগেই বড় স্বপ্ন নিয়ে দেশ ছাড়ে বাংলাদেশ। কিন্তু প্রতিবারই ফিরতে হয় খালি হাতে। এখন অব্দি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশ পেরুতে পারেনি দ্বিতীয় রাউন্ড। সর্বোচ্চ সাফল্য ২০২২ বিশ্বকাপে দুটি দলকে হারনো। এবার যখন দেশ ছাড়ছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা। তখন তাদের পায়ের নিচের মাটিটা খুব বেশি শক্ত অবস্থায় নেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সাদামাটা ক্রিকেট খেলে অনেকটা অস্বস্তি নিয়েই দেশ ছাড়ছে লাল-সবুজ জার্সিধারীরা।
যদিও বাংলাদেশের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত দেশ ছাড়ার আগে গনমাধ্যমকে বলেছেন ছোট ছোট পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়নের মাধ্যমে সাফল্য পেতে চান তিনি, আমার মনে হয় আমি যে কথাটা বলেছিলাম তারপরেও বাংলাদেশের সবাই প্রত্যাশা করবেই। আমি নিজেও প্রত্যাশা করি এবং আমাদের প্রত্যেকটা খেলোয়াড় প্রত্যাশা করবে যে আমরা অনেক ভালো ক্রিকেট খেলব। আমরা যদি ছোট ছোট পরিকল্পনা নিয়ে আগাই যে আমরা কীভাবে গ্রুপ পর্ব পার করব তাহলে পরিকল্পনা করাটা সহজ হয়।
এবারের পর আরেকটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হবে ২০২৬ সালে। ততদিন পর্যন্ত মাহমুদউল্লাহ ও সাকিব আল হাসানের খেলা চালিয়ে যাওয়াটা কঠিন। তাই অনেকের মতে ৩৭ পেরুনো সাকিব ও ৩৮ পেরুনো মাহমুদউল্লাহর এটিই হয়তো শেষ বিশ্বকাপ। এই দুই অভিজ্ঞ তারকাকে সুন্দর কিছু স্মৃতি উপহার দিতে চান অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত, ‘জানি না এটাই তাদের শেষ বিশ্বকাপ কি না। এটা ধারণা। আমরা যারা আছি, অপেক্ষাকৃত তরুণ, আমরা অবশ্যই চাইব, ওনারা এত লম্বা সময় ধরে খেলছেন, তাদের একটা ভালো স্মৃতি দিতে চাই। ভালো একটা বিশ্বকাপ তাদের আমরা উপহার দিলাম, এটা অবশ্যই আমাদের দায়িত্ব।
বিশ্বকাপে রওনা হওয়ার আগে বুধবার মিরপুরে সাংবাদিকদের সঙ্গে বিশ্বকাপ নিয়ে নিজেদের লক্ষ্য ও সম্ভাবনার কথা জানিয়ে গেছেন প্রধান কোচ চান্ডিকা হাথুরুহিংসে।
এ নিয়ে নবমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলতে যাচ্ছে বাংলাদেশ। তবে আগের আসরগুলোর দিকে তাকালে খুব একটা সাফল্য নেই দলগতভাবে। তবে আগের আসরগুলোতে ভালো না করলেও এবারের বিশ্বকাপে বাংলাদেশ দলকে নিয়ে ভালো সম্ভাবনা দেখছেন হাথুরু, ‘প্রতিটা টুর্নামেন্টে আমাদের আগের চেয়ে ভালো করার সুযোগ। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেট আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জের। আমরা র্যাঙ্কিংয়ে কোথায় আছি, সেটাতেও দেখা যায়। এখানে অস্বীকার করার কিছু নেই। কিন্তু আমাদের যে প্রস্তুতি, সেটার হিসাবে বলতে পারি আগের চেয়ে ভালো করার সুযোগ আছে।’
বিশ্বকাপে নিজেদের লক্ষ্যের কথা জানিয়ে হাথুরু বলেন, ‘আইসিসি ইভেন্টের বাইরে আমরা ভালো ক্রিকেট খেলেছি। দেশেরও প্রত্যাশা আছে যেন আমরা বড় কিছু করতে পারি। আমাদের প্রাথমিক লক্ষ্য গ্রুপ পর্ব পার করা। তবে আমাদের ওই দেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রে খেলা আমাদের সবার জন্যই নতুন অভিজ্ঞতা। তাদের টাইমজোন, আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নিতে হবে। হয়তো দু-একটি সমন্বয়ও চেষ্টা করব। তার মানে মূল খেলোয়াড়দের বিশ্রাম দেওয়া...।’