সুইজারল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে নকআউট পর্বে ব্রাজিল
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৬:৪৩ এএম, ২৯ নভেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৫১ এএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে কাল বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ ছিল ব্রাজিলের। নেইমার বিহীন ব্রাজিল কেমন খেলে তাও ছিল দেখার বিষয়। ইনজুরির কারণে দলে ছিলেন না ডিফেন্ডার দানিলোও। সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে অতীত ইতিহাস ভালো ছিল না। বিশ্বকাপে সুইসদের কখনো হারাতে পারেনি সেলেসাওরা। গত বিশ্বকাপেও গ্রুপ পর্বে সুইসদের সঙ্গে ড্র করেছিল ব্রাজিল। তবে এবার এসব চ্যালেঞ্জ উতরিয়ে নতুন ইতিহাস লিখলো পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা।
সুইজারল্যান্ডকে ১-০ গোলে হারিয়ে ‘জি’ গ্রুপ থেকে প্রথম দল হিসেবে শেষ ষোলো নিশ্চিত করলো সেলেসাওরা। কাল দোহার স্টেডিয়াম ৯৭-এ ব্রাজিলের হয়ে জয়সূচক একমাত্র গোলটি করেন কাসেমিরো।
নেইমার বিহীন ব্রাজিল দলের আক্রমণ ভাগে তারকার অভাব ছিল না। কিন্তু নেইমারের মতো সৃষ্টিশীল ফুটবলারের অভাব তো পূরণীয় নয়।
পিএসজি ফরোয়ার্ডের অভাব টের পাওয়া গেল শুরু থেকেই। তার উপস্থিতিতে যতটা ধারাল হয়, তার ধারেকাছেও ছিল না ব্রাজিলের আক্রমণ। তবে ম্যাচে প্রথম সুযোগটি তৈরি করে তারাই। অসুস্থতা কাটিয়ে খেলা লুকাস পাকেতার ফ্লিকে খুব ভালো জায়গায় বল পেয়ে যান রিচার্লিসন। একটুর জন্য তিনি ডি-বক্সে ভিনিসিউস জুনিয়রকে বল পাঠাতে পারেননি। ঠাণ্ডা মাথায় ক্লিয়ার করেন নিকো এলভেদি। সাত মিনিট পর একটুর জন্য মেলেনি গোল।
সুইজারল্যান্ডের চারজনের ঘেরের মধ্য থেকেই ভিনিসিউস খুঁজে নেন পাকেতাকে। তার ক্রসে সুযোগ ছিল রিচার্লিসনের সামনে। কিন্তু গত ম্যাচে জোড়া গোল করা এই ফরোয়ার্ড পারেননি স্লাইড করে বলে পা ছোঁয়াতে। সেই সুযোগে বিপদমুক্ত করেন এলভেদি। ২৭তম মিনিটে সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া হয় ব্রাজিলের। বার্সেলোনা ফরোয়ার্ড রাফিনিয়ার চমৎকার ক্রসে ভিনিসিউসের কাছের পোস্টে নেওয়া দুর্বল ভলি ঠেকিয়ে দেন ইয়ান সোমার। বেঁচে যায় সুইজারল্যান্ড।
দ্বিতয়ার্ধের শুরুতেই নিষ্প্রভ পাকেতাকে তুলে রিয়াল মাদ্রিদের উইঙ্গার রদ্রিগোকে মাঠে নামান কোচ তিতে। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতে ব্রাজিলের রক্ষণে চাপ তৈরি করে সুইসরা। ৫২ মিনিটে ভালো একটি আক্রমণও করে তারা। কিন্তু সেটা সুইজারল্যান্ডের ফরোয়ার্ড ব্রিল এমবোলা পর্যন্ত পৌঁছায়নি ভিনিসিউস শুয়ে পড়ে বলটি ঠেকানোয়। সুইজারল্যান্ডের এই আক্রমণটির পরের সময়টা শুধুই ব্রাজিলের। ৫৬ মিনিটে ভিনিসিউসের বাড়ানো বল পায়ে লাগাতে পারলেই গোল পেতেন রিচার্লিসন। কিন্তু আগের ম্যাচের নায়ক রিচার্লিসনের কিছুই যেন ঠিকঠাকভাবে হচ্ছিল না। অবশেষে ৬৪ মিনিটে সুইজারল্যান্ডের জালে বল পাঠান ভিনিসিউস।
মাঝমাঠ থেকে আসা পাস ধরে কাসেমিরো বল বাড়ান বাঁদিকে থাকা রিয়াল মাদ্রিদের এই ফরোয়ার্ডকে। পায়ের কারুকাজে এক সুইস ডিফেন্ডারকে বোকা বানিয়ে তিনি অসাধারণ শটে বল পাঠান জালে। কিন্তু মেলেনি গোল, ভিএআরের সাহায্য নিয়ে রেফারি বাজান অফসাইডের বাঁশি। আক্রমণের শুরুতে অফসাইডে ছিলেন রিচার্লিসন।
এরপরেই জোড়া পরিবর্তন আনেন তিতে। রিচার্লিসনের পরিবর্তে গ্যাব্রিয়েল জেসুস ও রাফিনহাকে উঠিয়ে অ্যান্টনিকে মাঠে নামান ব্রাজিলের মাস্টার মাইন্ড। এরফলও আসে দ্রুতই। ৮৩ মিনিটে ভিনিসিউসের কাছ থেকে বল পেয়ে বুলেট গতির শটে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন কাসেমিরো। মানুয়েল আকনজির গায়ে মৃদু স্পর্শ করে একটু দিক পাল্টানো বল ঠেকানোর কোনো সুযোগই ছিল না গোলরক্ষকের। এই গোলের উৎস ছিলেন জেসুস।
চার মিনিট পর কাছাকাছি জায়গা থেকে কাছের পোস্টে রদ্রিগোর শট কর্নারের বিনিময়ে ঠেকান সোমার। যোগ করা সময়ের তৃতীয় মিনিটে প্রতি-আক্রমণ থেকে ব্যবধান বাড়ানোর দারুণ সুযোগ হাতছাড়া করেন ভিনিসিউস। ওয়ান-অন-ওয়ানে তিনি এড়াতে পারেননি আকনজির চ্যালেঞ্জ। পরের মিনিটে এই ডিফেন্ডার ব্যর্থ করে দেন রদ্রিগোর চেষ্টা। কাসেমিরোর গোলের পরও বেশ কয়েকটি আক্রমণ করে ব্রাজিল। কিন্তু গোলের দেখা আর পায়নি। তাতে কী, বিশ্বকাপে এই প্রথম সুইজারল্যান্ডের বিপক্ষে জয় তো পেয়েছে তারা।
এই জয়ের পর ‘জি’ গ্রুপে ২ ম্যাচ থেকে ৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে ব্রাজিল। সমান ম্যাচে ৩ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে সুইজারল্যান্ড। তৃতীয় স্থানে থাকা ক্যামেরুনের পয়েন্ট ১। চতুর্থ স্থানে থাকা সার্বিয়ার পয়েন্টও ১।