বাংলাদেশের বিপক্ষে জিম্বাবুয়ের টি-টোয়েন্টি সিরিজ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৮:২৩ এএম, ৩ আগস্ট,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০২:১০ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
রান পেলেন না লিটন দাস। তাতেই যেন সব ওলট-পালট। ঢাকা লিগে এগারো’শ -এর বেশি রান করে বিশ্বরেকর্ড করা এনামুল হক বিজয় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মানানসই কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা যায়। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদকে কেন টি-টোয়েন্টি খেলাতে হবে তা নিয়ে আরও একবার টিম ম্যানেজমেন্টকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়।
শুধু তাদের দুজনই নয়, অভিষিক্ত পারভেজ হোসেন ইমন, নাজমুল হোসেন শান্ত, মোসাদ্দেক হোসেনরা টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটটা বোঝেন কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন তুলতে পারে যে কেউ! দল জিতলে ভুলগুলো আড়াল হয়। হারলে তা প্রকশ্যে আসে। মঙ্গলবার তেমনই একটি দিন কাটালো বাংলাদেশ।
তালগোল পাকানো এমন দিনে জিম্বাবুয়ে প্রথমবারের মতো বাংলাদেশের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতলো। হারারেতে আগে ব্যাটিং করে ৮ উইকেটে ১৫৬ রান তোলে জিম্বাবুয়ে। জবাবে বাংলাদেশে ১৪৬ রানের বেশি করতে পারেনি। ১০ রানের জয়ে ২-১ ব্যবধানে সিরিজ জিতে যায় জিম্বাবুয়ে।
এই হারের জন্য নির্দিষ্ট কাউকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো ভুল হবে। গোটা দলটাই ম্যাচটা ডুবিয়েছে। নিয়ন্ত্রণে থাকা বোলিং এক সময়ে এলোমেলো হয়ে যায় রায়ান বার্লের ঝড়ে। তাকে সঙ্গ দেন লুক জংউই। ১৪ ওভার শেষে জিম্বাবুয়ের রান ছিল ৬ উইকেটে ৭৬। নাসুমের করা ১৫তম ওভারে ৫ ছক্কা ও ১ চারে ৩৪ রান তুলে হাত খুলেন বার্ল। পরের ওভারে হাসান মাহমুদকে ২টি চার মারেন জংউই। ১৭তম ওভারে মেহেদীকে ছক্কা উড়ান বার্ল ও জংউই এবং ১৮তম ওভারে জংউই -এর ব্যাট থেকে আসে আরেকটি ছক্কা।
এই ৪ ওভারে জিম্বাবুয়ে ৭০ রান তুলে বাংলাদেশকে ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। এরপর বোলিংয়ে আর ফিরতে পারেনি অতিথিরা। ম্যাচসেরা নির্বাচিত হওয়া বার্ল ২৮ বলে ৬ ছক্কা ও ২ চারে ৫২ রান করেন। জংউই’র ২০ বলে ৩৫ রানের ইনিংসটি ছিল সময়োপযোগী।
বোলিংয়ে নিয়ন্ত্রণ হারানোর দিনে গ্রাউন্ড ফিল্ডিং ছিল বাজে। আফিফ ক্যাচ মিস করেছেন, হাত ফঁসকে বাউন্ডারি দিয়েছেন, একাধিক রানও দিয়েছেন। প্রথম দুই ম্যাচে লিটন ভালো শুরু এনে দেওয়ায় বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ে তেমন প্রভাব পড়েনি। কিন্তু সিরিজ নির্ধারণী ম্যাচে ডানহাতি ওপেনারকে ১৩ রানে ফিরিয়ে পেসার নউয়ুচি স্বাগতিকদের এগিয়ে দেন।
এরপর শুরু হয় বাংলাদেশের হ-য-ব-র-ল ব্যাটিং প্রদর্শনী। লক্ষ্য নাগালেই ছিল। কিন্তু ব্যাটসম্যানদের ব্যাটিং অ্যাপ্রোচ ছিল বাজে। স্পিনারদের বিপক্ষে যেভাবে সাবলীল ব্যাটিং করার কথা ছিল তা যেন ভুলেই গিয়েছিলেন এনামুল হক। পারভেজ ইমন নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলতে পারেননি। দলের প্রয়োজন মেটাতে পারেননি শান্ত, মাহমুদউল্লাহ কেউ-ই।
এনামুল ১৩ বলে ১৪ রান করে মাধেভেরের বলে বোল্ড হন। শান্ত ২০ বলে করেন ১৬ রান। স্কুপ করতে গিয়ে উইলিয়ামসের বলে আউট হন। বিরক্তিকর ব্যাটিংয়ে মাহমুদউল্লাহ ২৭ বলে ২৭ রান করেন। মোসাদ্দেক অধিনায়কত্বের প্রথম ম্যাচে গোল্ডেন ডাকের তিক্ত স্বাদ পান।
লড়াই করেছেন আফিফ হোসেন। তাকে সঙ্গ দিয়েছেন মেহেদী হাসান। কিন্তু তাদের ব্যাটিংয়ে ছিল না জোর। পাওয়ার হিটিংয়ে ছিল দুর্বল। বাউন্ডারি খুঁজে পেতে তাদের ঘাম ঝরাতে হয়েছে। আফিফ ২৭ বলে ৩৯ রান করে অপরাজিত থাকেন। মেহেদীর ব্যাট থেকে আসে ২২ রান।
প্রশ্নবিদ্ধ পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ সিরিজ হেরেছে। এই সিরিজে পাওয়ার তেমন কিছুই নেই। লিটনের দুই ম্যাচে রান, সোহানের প্রথম ম্যাচে বিস্ফোরক ব্যাটিং, মোসাদ্দেকের পাঁচ উইকেট…অথচ দলগত পারফরম্যান্সে বাংলাদেশ ফেল! তবে জিম্বাবুয়ে যেভাবে দাপট দেখিয়ে বাংলাদেশকে হারিয়েছে তাতে করতালি তাদের প্রাপ্য।