রোমার ইতিহাস গড়ার রাতে মরিনিওর অনন্য কীর্তি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১২:০৭ পিএম, ২৬ মে,বৃহস্পতিবার,২০২২ | আপডেট: ০১:৫৫ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
এই মৌসুমটা কিছু ক্লাবের সমর্থক কখনো ভুলতে পারবেন না। যেমন ধরুন ফরাসি ক্লাব নঁতে—২১ বছর পর এবার প্রথমবারের মতো শিরোপা জিতেছে (ফ্রেঞ্চ কাপ)। স্প্যানিশ ক্লাব রিয়াল বেতিস—১৭ বছর পর মুখ দেখেছে শিরোপার (কোপা দেল রে)। ইতালিয়ান ক্লাব এসি মিলান ১১ বছরের মধ্যে প্রথম দেখা পেয়েছে লিগ শিরোপার। জার্মান কাপ জিতে প্রথম শিরোপা ঘরে তুলেছে জার্মানির ক্লাব আরবি লাইপজিগ। জার্মানির আরেক ক্লাব আইনট্রাখট ফ্রাঙ্কফুর্ট ২২ বছর পর প্রথম দেখা পেয়েছে ইউরোপিয়ান শিরোপার।
আর কাল রাতে আলবেনিয়ায় ইউরোপা কনফারেন্স লিগের ফাইনালে ডাচ ক্লাব ফেইনুর্দকে ১-০ গোলে হারিয়ে শিরোপার দেখা পেয়েছে এএস রোমাও। নিজেদের ক্লাব ইতিহাসে এই প্রথম ইউরোপে গুরুত্বপূর্ণ কোনো টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতল ইতালিয়ান ক্লাবটি।
ম্যাচের ৩২ মিনিটে রোমার হয়ে গোল করেন ইতালিয়ান মিডফিল্ডার নিকোলো জানিলো। ইউরোপে তৃতীয় স্তরের টুর্নামেন্ট কনফারেন্স লিগ এবারই প্রথম চালু হয়েছে। রোমা ১৯৬১ সালে ইন্টার-সিটি ফেয়ারস কাপ জিতলেও সেটি ব্যাপ্তিতে এত বড় ছিল না। এত দিন ইউরোপে সেটাই ছিল রোমার প্রথম ও একমাত্র শিরোপা।
তবে ফেইনুর্দের পক্ষে ভাগ্য সহায় ছিল না। বিরতির পর দুবার রোমার গোলপোস্ট কাঁপিয়েও জয়ের দেখা পায়নি ক্লাবটি। এর মধ্য দিয়ে রোমা কোচ জোসে মরিনিও ইতিহাসের পাতায়ও নাম লেখালেন। প্রথম কোচ হিসেবে চারটি আলাদা ক্লাবের হয়ে ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্ট জয়ের রেকর্ড গড়লেন এই পর্তুগিজ কোচ।
তিরানায় ন্যাশনাল অ্যারেনার গ্যালারি তেমন বড় ছিল না। এ কারণে দর্শকসংখ্যা কয়েক হাজারের বেশি ছিল না। কিন্তু রোমে রোমার সমর্থকেরা বসে থাকেননি। স্তাদিও অলিম্পিকো স্টেডিয়ামে বড় পর্দায় ম্যাচটি দেখানোর ব্যবস্থা করা হয়। প্রায় ৫০ হাজার রোমা সমর্থক ম্যাচটি দেখে জয়ের পর রাস্তায় বিজয় মিছিল বের করেন।
ফাইনালের আগে তিরানায় দুই দলের সমর্থকদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষও হয়। ১৯ পুলিশ কর্মকর্তা এবং পাঁচ আলবেনিয়ান নাগরিক আহত হন। এর মধ্যে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে ছুরিকাহত করা হয়।
ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠে শতভাগ জয়ের রেকর্ড অক্ষুণ্ন রাখলেন রোমা কোচ মরিনিও। পাঁচটি ফাইনালেই জিতলেন তিনি। ম্যাচে শেষ বাঁশি বাজার পর হাতের পাঁচ আঙুল দেখিয়ে তা দর্শকদেরও বোঝান রোমার এই কোচ। একদম তাঁর কৌশল অনুযায়ীই খেলাটা হয়েছে—আগে গোল করে এগিয়ে যাও, এরপর শুধু গোল ঠেকাও আর গোল ঠেকাও!
চলতি মৌসুমের আগে রোমার কোচ হয়ে আসেন মরিনিও। তার হাত ধরে দীর্ঘ এক যুগ পর ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতল ইতালির কোনো ক্লাব। সর্বশেষ ২০১০ চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে শিরোপা জিতেছিল ইন্টার মিলান। সেটাই ছিল ইউরোপিয়ান টুর্নামেন্টে ইতালিয়ান কোনো ক্লাবের সর্বশেষ শিরোপা জয়। তখন ইন্টারের কোচ কে ছিলেন? সেই মরিনিও-ই!
ইতালির জিওভান্নি ত্রাপাত্তোনির পর দ্বিতীয় কোচ হিসেবে ইউরোপে পাঁচটি বড় টুর্নামেন্টের শিরোপা জিতলেন মরিনিও। জয়ের পর কান্নাভেজা কণ্ঠে পর্তুগিজ এই কোচ বলেছেন, ‘মাথার মধ্যে অনেক কিছু ঘুরপাক খাচ্ছে। রোমায় মাত্র ১১ মাস হলো এসেছি। তবে আসার পরই বুঝতে পেরেছিলাম সমর্থকেরা এমন একটা মুহূর্তের অপেক্ষায় ছিলেন। ছেলেদের বলেছিলাম, রাতটা ইতিহাস লেখার, আমাদের ইতিহাস লিখতে হবে এবং আমরা তা পেরেছি।’