৩৩২ রানের ব্যবধানে হেরে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৩:২৩ পিএম, ১১ এপ্রিল,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৫:৩১ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
৩৩২ রানের বিশাল ব্যবধানে হারল বাংলাদেশ। ডারবান টেস্টে হেরেছিল ২২০ রানে। দুই টেস্টেই বড় হারে হোয়াইটওয়াশ হয়েছে মুমিনুল হকের দল। ৩৮৬ রানে পিছিয়ে থেকে চতুর্থ দিন দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নামে বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে জমা ছিল ২৭ আর হাতে ছিল ৭ উইকেট। ১ ঘণ্টা পেরোনোর আগেই বাংলাদেশ অলআউট হয় ৮০ রানে।
মহারাজ একাই নেন ৭ উইকেট। বাংলাদেশের হয়ে সর্বোচ্চ ২৭ রানের ইনিংস খেলেন লিটন দাস। মেহেদি হাসান মিরাজ ২০ ও তামিম ইকবাল করেন ১৩ রান। এ ছাড়া দুই অঙ্কের মুখ দেখেননি কোনো ব্যাটসম্যান।
টস জিতে ব্যাটিং করতে নেমে প্রথম ইনিংসে ৪৫৩ রনে অলআউট হয় দক্ষিণ আফ্রিকা। বাংলাদেশ প্রথম ইনিংসে ২১৭ রানের বেশি করতে পারেনি। সফরকারীদের ফলোঅনে না ফেলে ২৩৬ রানে এগিয়ে থেকে আবার ব্যাটিংয়ে নামে স্বাগতিকরা। ৬ উইকেটে ১৭৬ রানে ইনিংস ঘোষণা করলে বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়ায় ৪১৩। গতকাল শেষ বিকেলে খেলেতে নেমে ২৭ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। ডারবান টেস্টের পুনরাবৃত্তিই যেন হল। দিনের শুরুতে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার মিছিলে হার মানতে হয়।
সংক্ষিপ্ত স্কোর-
বাংলাদেশ, দ্বিতীয় ইনিংস: ৮০/১০ (২৩ ওভার)
দক্ষিণ আফ্রিকা, দ্বিতীয় ইনিংস: ১৭৬/৬ ডিক্লে. (৩৯.৫ ওভার)
বাংলাদেশ প্রথম, ইনিংস: ২১৭/১০ (৭৪.২ ওভার)
দক্ষিণ আফ্রিকা, প্রথম ইনিংস: ৪৫৩/১০ (১৩৬.২ ওভার)
মহারাজের ঘুর্ণিতে এবার পরাস্ত মেহেদী হাসান মিরাজ ও খালেদ আহমেদ। ৮০ রানে ৯ উইকেট হারিয়ে বড় হারের পথে বাংলাদেশ। মহারাজ একাই নিয়েছেন ৭ উইকেট। এগিয়ে এসে মারতে গিয়ে স্ট্যাম্পিং হয়ে ফিরলেন লিটন দাস। দারুণ খেলতে থাকা লিটনের বল বাছাইটা ভুল হয়েছে। হালকা টার্ন করে বল চলে যায় উইকেটরক্ষকের হাতে। মুহুর্তেই বেল ভেঙে দেন ভেরিয়েন্নে। লিটনের ব্যাট তখন হাওয়ায় ভাসছে। ৩৩ বলে ৫ চারে ২৭ রান করেন লিটন। বাংলাদেশ ইনিংসে এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ। আবারও ৫ উইকেটের দেখা পেলেন কেশব মহারাজ।
সুইপ করতে গিয়ে সাজঘরে ফেরেন মুমিনুল হক। এরপর ক্রিজে এসে বড় শট খেলতে গিয়ে ইয়াসির আলী বিদায় নেন দ্রুত। হার্মারের বলে স্লগ সুইপ করতে গিয়ে ক্যাচ তুলে দেন ডিপ মিড উইকেটে। সেখানে দাঁড়ানো ফিল্ডার লিজাড উইলিয়ামসকে এক বিন্দু সরতে হয়নি। জায়গায় দাঁড়িয়ে ক্যাচ ধরেন। ০ রানে আউট হন ইয়াসির। ক্রিজে লিটন দাসের সঙ্গী হলেন মেহেদি হাসান মিরাজ।
গুরুত্বপূর্ণ সময়ে অহেতুক সুইপ শট খেলতে গিয়ে বিদায় নিলেন মুমিনুল হক। মুহুর্ত আগেই বিদায় নিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। অধিনায়ক মুমিনুলের উচিৎ ছিল ধৈর্য নিয়ে খেলা। কিন্ত সেটাই করতে পারেননি তিনি। কেশব মহারাজের বলে সুইপ করতে গিয়ে ব্যাটের কানায় লেগে বল উঠে যায় উপরে। স্কয়ার লেগে ক্যাচ ধরেন রিকেলটন। ২৫ বলে ৫ রান করেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
দিনের শুরুতেই সাজঘরে ফিরলেন মুশফিকুর রহিম। প্রথম ওভারে এলবিডব্লিউ থেকে অল্পের জন্য রক্ষা পেয়েছিলেন মুশফিক। কিন্তু এবার ক্যাচই দিলেন স্লিপে। কেশব মহারাজের আউটসাইড অফের বল ড্রাইভ করতে চেয়েছিলন মুশফিক। কিন্তু বল টার্ন করায় কানায় লেগে যায় স্লিপে। বামে ঝাঁপিয়ে পড়ে দারুণ ক্যাচ ধরেন ডিন এলগার। ৮ বলে ১ রান করেন এই ব্যাটসম্যান।
ডারবান টেস্টের চারদিন ম্যাচে সমান-সমান লড়াই করার পর পঞ্চম দিন সকালে মুখ থুবড়ে পড়েছিল বাংলাদেশের ব্যাটিং। ৫৫ মিনিটে অলআউট হতে হয় ৫৩ রানে। ২২০ রানে সেই ম্যাচে হারের পর মুমিনুল হক বলেছিলেন আরামে ঘুরে দাঁড়াতে পারবে তার দল। কিন্তু পোর্ট এলিজাবেথ টেস্টেও সেই ডারবানের আভাস। সোমবার (১১ এপ্রিল) চতুর্থ দিন শেষেই বড় হারের শঙ্কা বাংলাদেশ শিবিরে। অপেক্ষা করছে অগ্নি পরীক্ষা। ৩৮৬ রানে পিছিয়ে দিন শুরু করেছে বাংলাদেশ। আগের দিনের অপরাজিত মুমিনুল হকের সঙ্গে নামেন নতুন ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহিম।
মাহমুদুল হাসান জয়, নাজমুল হোসেন শান্তর পর বিদায় নিলেন তামিম ইকবালও। দশম ওভারের প্রথম বলে তামিমের আউটের পর দিনের খেলার ইতি টানেন আম্পায়ার। তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩ উইকেট হারিয়ে ২৭ রান। দক্ষিণ আফ্রিকা লক্ষ্য দিয়েছে ৪১৩ রান। বাংলাদেশ এখনো পিছিয়ে আছে ৩৮৬ রানে।
প্রথম ইনিংসে ৫ উইকেটে ১৩৯ রান নিয়ে আজ দিন শুরু করে বাংলাদেশ। মুশফিক-ইয়াসির জুটিতে শুরুতে ভালো বার্তা দিলেও শেষ পর্যন্ত মুখ থুবড়ে পড়ে বাংলাদেশের ব্যাটিং। ২১৭ রান অলআউট হয় সফরকারীরা। দ্বিতীয় ইনিংসে খেলতে নেমে দ্রুতগতিতে রান তোলে প্রোটিয়ারা। ৬ উইকেটে ১৭৬ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। বাংলাদেশের সামনে লক্ষ্য দাঁড়য় ৪১৩ রান। বাংলাদেশ খেলতে নেমে প্রথম ওভারে জয়ের উইকেট হারায়। এরপর একে একে ফেরেন শান্ত-তামিম। মহারাজের ঘূর্ণিতে জয় ফেরেন শূন্য রানে, আর শান্ত ৭ রানে। ১৩ রানে তামিম পরাস্ত হন হার্মারের ঘূর্ণিতে।