৭ মাসে বাণিজ্যিক ব্যাংকের রিজার্ভ ১ বিলিয়ন ডলারের বেশি কমেছে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৪০ পিএম, ২১ মে,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ০১:৪৯ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
গত সাত মাসে দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর রিজার্ভ কমেছে ১ দশমিক ১৩ বিলিয়ন ডলার। ব্যাংকগুলোর দায় পরিশোধের তুলনায় ডলার প্রবাহ কমে যাওয়ার কারণেই মূলত এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ মাসিক প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, গত এপ্রিল শেষে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে থাকা ডলারের স্থিতি দাঁড়িয়েছে ৫০৪ কোটি ৭৩ লাখ। যেখানে গত বছরের একই সময়ে ছিল ৫৪৯ কোটি ৭৭ লাখ ডলার।
চলতি অর্থবছরের প্রথম মাস জুলাইয়ে বাণিজ্যিক ব্যাংকের ডলার স্থিতি ছিল ৫৯০ কোটি ৫ লাখ। এর পরের মাস আগস্টে তা কিছুটা কমে ৫৮০ কোটি ৮৭ লাখ ডলারে দাঁড়ায়। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ব্যাংকগুলোর কাছে সবচেয়ে বেশি ৬১৭ কোটি ৪০ লাখ ডলার ছিল। এরপর থেকে তা ক্রমেই কমতে থাকে। এর মধ্যে চলতি অর্থবছরের অক্টোবরে ৫৯২ কোটি ৪০ লাখ, নভেম্বরে ৫৯৭ কোটি ৯ লাখ, ডিসেম্বরে ৫৫৫ কোটি ৯৭ লাখ, জানুয়ারিতে ৫৮৪ কোটি ৪২ লাখ, ফেব্রুয়ারিতে ৫৫৩ কোটি ৪৫ লাখ ও মার্চে ৫৪৩ কোটি ৯৪ লাখ ডলারের রিজার্ভ ছিল দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছে।
জানতে চাইলে সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) নির্বাহী পরিচালক ড. ফাহমিদা খাতুন বলেন, আমদানি নিয়ন্ত্রণ করা সত্ত্বেও দায় মেটাতে ব্যাংকগুলোকে কিছু ডলার ব্যয় করতে হচ্ছে। অন্যদিকে রফতানি আয় ও রেমিট্যান্সের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত মাত্রায় ডলার আসছে না। এ কারণেই ব্যাংকগুলোর ডলারের রিজার্ভ কমে গেছে। কমেছে তাদের দায় শোধের সক্ষমতাও।
এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় দূরদর্শী নীতি গ্রহণ জরুরি জানিয়ে এ অর্থনীতিবিদ আরো বলেন, ‘লারের দর নির্ধারণের ক্ষেত্রে যে ক্রলিং পেগ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে, কোনো কারণে যেন এ থেকে পিছিয়ে না আসা হয়। তবে এটি একটি মধ্যবর্তী পন্থা, শেষ পর্যন্ত আমাদের পুরোপুরি বাজারভিত্তিক বিনিময় হারের দিকেই যেতে হবে। এতে হয়তো একলাফে ডলারের দাম বেড়ে যাবে, কিন্তু পরিস্থিতি উত্তরণে এটি সহ্য করতে হবে আমাদের। ডলারের দাম বাজারভিত্তিক হয়ে গেলে রফতানি অর্থ প্রত্যাবাসনে গতি আসবে। পাশাপাশি রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে প্রবাসীদের উদ্বুদ্ধ করতে হবে। যদি ডলারের প্রবাহ বাড়ে তাহলে পরিস্থিতির উন্নতি হবে।
উল্লেখ্য, আমদানি দায় ও ঋণ পরিশোধের জন্য দেশের বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো তাদের বিদেশি হিসাবে (নস্ট্রো অ্যাকাউন্ট) ডলার জমা রাখে। গত অর্থবছর শেষে ব্যাংকগুলোর কাছে থাকা ডলারের রিজার্ভ বেড়েছিল ৬ শতাংশের বেশি। চলতি অর্থবছরে তা ক্রমেই নিম্নমুখী।