সর্বজনীন পেনশনের গ্রাহক এক লাখ ছাড়াল
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৫৬ পিএম, ৩০ এপ্রিল,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ১০:৪২ এএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
সর্বজনীন পেনশন কর্মসূচির (স্কিম) গ্রাহক এক লাখ ছাড়িয়েছে। ২০২৩ সালের ১৭ আগস্ট চালু হওয়ার ৮ মাস ১২ দিনের মাথায় এক লাখ গ্রাহকের এ মাইলফলক অর্জিত হয়েছে বলে জানিয়েছে জাতীয় পেনশন কর্তৃপক্ষ। আজ সোমবার কর্তৃপক্ষ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে আরও দাবি করেছে, এটি ‘উল্লেখযোগ্য অর্জন’।
বর্তমানে চালু রয়েছে চার ধরনের পেনশন কর্মসূচি। পেনশন কর্তৃপক্ষ জানায়, এগুলোতে আজ পর্যন্ত চাঁদা পরিশোধ করেছেন ১ লাখ ১ হাজার ৩৩৮ জন। চাঁদার পরিমাণ ৫২ কোটি ৩৮ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সর্বজনীন পেনশনকে জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছাতে মাঠ প্রশাসনকে সক্রিয়ভাবে যুক্ত করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মাধ্যমে জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে গঠন করা হয়েছে সর্বজনীন পেনশন কার্যক্রম বাস্তবায়ন ও সমন্বয় কমিটি এবং মাঠ প্রশাসনকে সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
পেনশন কর্তৃপক্ষ বলেছে, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তাদেরও বিভাগভিত্তিক তদারকির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা (ইউএনও) নিয়মিতভাবে বিভাগ, জেলা ও উপজেলাভিত্তিক নিবন্ধন তদারকি ও বাস্তবায়ন করছেন। বিভাগীয় পর্যায়ে সর্বজনীন পেনশন মেলা ও কর্মশালার আয়োজন করে সব শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ১৯ এপ্রিল রাজশাহীতে বিভাগীয় পেনশন মেলা ও কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। পরে বাকি সাত বিভাগেও হবে বিভাগীয় মেলা।
পেনশন কর্তৃপক্ষ জানায়, বেশি চাঁদা জমা দিয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা। তাঁদের জন্য চালু করা প্রগতি স্কিমে ১৪ হাজার ৭৮৪ জন চাঁদা জমা দিয়েছেন ২৪ কোটি ২০ লাখ ৬ হাজার ৫০০ টাকা। বার্ষিক আয় ৬০ হাজার টাকার কম, এমন শ্রেণির মানুষের জন্য চালু হয়েছে সমতা স্কিম। এ স্কিমে চাঁদা দিয়েছেন ৫৪ হাজার ৪৫৫ জন। তাঁদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ৭ কোটি ২৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা।
প্রবাসী বাংলাদেশিদের জন্য চালু রয়েছে প্রবাস স্কিম। এ স্কিমের আওতায় ৬৩৩ জনের জমা চাঁদার পরিমাণ ৩ কোটি ৫ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা। কৃষক, রিকশাচালক, শ্রমিক, কামার, কুমার, জেলে, তাঁতি ইত্যাদি পেশার ব্যক্তিদের জন্য চালু সুরক্ষা স্কিমের আওতায় ৩১ হাজার ৪৬৬ জন চাঁদা দিয়েছেন ১৭ কোটি ৮৪ লাখ ৩৪ হাজার ৫০০ টাকা। পেনশন কর্তৃপক্ষ জানায়, চাঁদা বাবদ জমা পড়া টাকার বেশির ভাগই ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ করা হয়েছে।
প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা এবং সমতা—চলমান এ চার স্কিমের বাইরে প্রত্যয় নামে আরেকটি স্কিম চালু হবে স্বশাসিত, স্বায়ত্তশাসিত, রাষ্ট্রায়ত্ত, সংবিধিবদ্ধ বা সমজাতীয় সংস্থা এবং তাদের অধীনস্থ অঙ্গপ্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য। আগামী ১ জুলাইয়ের পর থেকে যাঁরা এসব প্রতিষ্ঠানে চাকরিতে যোগ দেবেন, তাঁদের জন্য প্রযোজ্য হবে এ স্কিম।
সর্বজনীন পেনশন স্কিমে ১৮ থেকে ৫০ বছর বয়সী একজন সুবিধাভোগী ৬০ বছর বয়স পর্যন্ত এবং ৫০ বছরের ঊর্ধ্বে একজন সুবিধাভোগী ন্যূনতম ১০ বছর চাঁদা দিয়ে আজীবন পেনশন সুবিধা ভোগ করবেন। পেনশনে থাকাকালে ৭৫ বছর বয়স পূর্ণ হওয়ার আগে মারা গেলে পেনশনারের নমিনি পেনশন স্কিম গ্রহণকারীর ৭৫ বছর পূর্ণ হওয়ার অবশিষ্ট সময় পর্যন্ত পেনশন পাবেন। চাঁদাদাতা কমপক্ষে ১০ বছর চাঁদা দেওয়ার আগে মারা গেলে জমা করা অর্থ মুনাফাসহ নমিনিকে ফেরত দেওয়া হবে। চাঁদাদাতার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কেবল তাঁর জমা করা অর্থের সর্বোচ্চ ৫০ শতাংশ ঋণ হিসেবে উত্তোলন করা যাবে।