জমেছে নতুন নোটের ব্যবসা, কিনতে হচ্ছে বেশি দামে
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৭ পিএম, ৬ এপ্রিল,শনিবার,২০২৪ | আপডেট: ১২:৪৭ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
কয়েক দিন পরেই পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপন হবে। এ সময় ঈদ সালামি, জাকাত এবং ফিতরাও দেওয়ার জন্য অনেকেই নতুন নোট সংগ্রহ করেন। ফলে চাহিদা বাড়ায় রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে নতুন নোট বেচাকেনার অস্থায়ী দোকান। সময় যত গড়াচ্ছে, নতুন নোটের ব্যবসা তত জমে উঠছে।
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গত রোববার (৩১ মার্চ) থেকে নতুন নোট বিনিময় শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক, যা চলবে আগামী ৯ এপ্রিল পর্যন্ত।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়সহ বিভিন্ন শাখার কাউন্টারের মাধ্যমে ৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকা মূল্যমান পর্যন্ত নতুন নোট বিশেষ ব্যবস্থায় বিনিময় করছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
সাপ্তাহিক ও সরকারি ছুটির দিন ছাড়া ঢাকা অঞ্চলের বিভিন্ন তপশিলি ব্যাংকের ৮০টি শাখার মাধ্যমেও গ্রাহকরা নতুন নোট সংগ্রহ করতে পারবেন। পাশাপাশি একই ব্যক্তি একাধিকবার নতুন নোট নিতে পারবেন না বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
তবে ব্যাংকে থেকে নতুন নোট সংগ্রহের জন্য অনেক সময় দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। আবার অফিস সময়ের মধ্যে অনেকের পক্ষে নতুন নোট সংগ্রহ করা সম্ভব হয় না। ফলে তারা ঝামেলাহীনভাবে সুবিধাজনক সময়ে নতুন নোট সংগ্রহ করতে চান। মূলত এ শ্রেণির গ্রাহকেরাই অস্থায়ী দোকানগুলোর নতুন নোটের ক্রেতা। তবে এসব দোকান থেকে নোটভেদে প্রতি বান্ডিলে (১০০টি নোট) ১০০ থেকে ২০০ টাকা বেশি গুনতে হচ্ছে।
গুলিস্তান ঘুরে দেখা গেছে, মৌসুমি ব্যবসায়ীরা নতুন নোটের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। এখানে ৪০ থেকে ৫০ জন দোকানি দুই টাকা থেকে শুরু করে ১০০ ও ২০০ টাকা পর্যন্ত নোটের নতুন বান্ডিল বিক্রি করছেন। একের পর এক ক্রেতাও আসছেন, নতুন নোট বিক্রিতে ব্যস্ত সময় পর করছেন বিক্রেতারা।
বিক্রেতারা জানান, এখন বেশি পরিমাণে নতুন নোট কিনছেন পেশাজীবী ও ব্যবসায়ী শ্রেণির লোকজন। ২৭ রমজানের পরে গ্রামে ফেরা ও শ্রমজীবী ক্রেতার সংখ্যা বাড়বে।
বিক্রেতারা আরও জানান, নতুন টাকা সংগ্রহের জন্য ব্যাংকগুলোয় তাদের ঢুকতে দেওয়া হয় না। ফলে ব্যাংক থেকে সরাসরি নতুন নোট কিনতে পারেন না তারা। বিভিন্ন ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মাধ্যমে তারা নতুন নোট সংগ্রহ করেন। এ নোটগুলো বিক্রেতাদের হাতে আসে কয়েক হাত ঘুরে। ফলে নতুন নোটের দামও বেড়ে যায়।
নতুন নোটের দরদাম করছিলেন চাকরিজীবী শামছুজ্জামান তুর। তিনি বলেন, ব্যাংকে অনেক ভিড় থাকে। কাঙ্ক্ষিত পরিমাণে পাওয়াও যায় না। এখানে অতিরিক্ত টাকার বিনিময়ে হলেও তেমন ভোগান্তি নেই। কিন্তু গত বছরের চেয়ে এ বছর অনেক বেশি দাম চাচ্ছেন বিক্রেতারা। ২০০-৩০০ টাকাও বাড়তি দাবি করছেন প্রতি বান্ডিলে।
বান্ডিলের দাম কেমন
১০ টাকার একটি বান্ডিলের (১০০টি নোট) মূল্যমান ১ হাজার টাকা। তবে নতুন নোটের এমন একটি বান্ডিল সেখানে ১ হাজার ১৫০ টাকা থেকে এক হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অর্থাৎ প্রতি বান্ডিলে ক্রেতাদের বাড়তি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা গুনতে হচ্ছে। ২০ টাকার বান্ডিলের জন্যও ১৫০ টাকা থেকে ২০০ টাকা বাড়তি দিতে হচ্ছে।
এভাবে নতুন ২ টাকার বান্ডিলের জন্য ১২০ টাকা, ৫ টাকার বান্ডিলের জন্য ১২০-১৫০ টাকা, ৫০ এবং ১০০ টাকার বান্ডিলের জন্য ১৫০-২০০ টাকা এবং ২০০ টাকার বান্ডিলের জন্য ১০০-১৪০ টাকা করে বাড়তি দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের।
বিক্রেতারা জানান, ঈদের সময় ঘনিয়ে এলে, নতুন নোটের দাম বাড়তে থাকে। তবে একটু দরাদরি করে নিলে দামে কিছুটা ছাড় দেওয়া হয়।
কোন নোটের চাহিদা বেশি
বিক্রেতারা বলেন, ১০ ও ২০ টাকার নতুন নোটের চাহিদা এ বছর সবচেয়ে বেশি। এরপর ২ ও ৫ টাকার নোট বেশি বিক্রি হচ্ছে। তবে সচ্ছল ক্রেতারা বেশি পরিমাণে ৫০ ও ১০০ টাকার নোটও কিনছেন।
বিক্রেতারা জানান, ২, ৫, ১০, ২০, ৫০ ও ১০০ টাকার নোট বেশি বিক্রি হয় ঈদ সালামির জন্য।
অন্যদিকে, জাকাত-ফিতরা দেওয়ার জন্য ৫০, ১০০ ও ২০০ টাকার নোট বেশি কেনেন ক্রেতারা। এসব নোটের বড় অংশ বিক্রি হয় ২৭ রোজার মধ্যেই।