ডলার ও এলসি সংকটে ইস্পাত পণ্য ও সিমেন্টের বিক্রি কমছে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫:০৮ পিএম, ২৭ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০৫:৫০ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
দেশের বাজারের চলমান ডলার ও এলসি সংকটের কারণে ইস্পাত পণ্য ও সিমেন্টের বিক্রি কমছে। অপরদিকে উৎপাদন খরচ বাড়ছে। বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রভাবে ইস্পাত পণ্যেও দাম বেড়েছে প্রতি টনে গড়ে দুই হাজার ৫০০ টাকা এবং সিমেন্টে প্রতি ব্যাগে দাম বেড়েছে ২০ টাকা, যার চূড়ান্ত ভার পড়বে সাধারণ ভোক্তাদের ব্যয়ে। এতে আরও বিক্রয় সংকোচন হবে।
দেশে বড় ও মাঝারি আকারে ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর সম্মিলিত উৎপাদন সক্ষমতা ৯০ লাখ টন। এর মধ্যে বর্তমানে ব্যবহƒত হচ্ছে ৪০ লাখ টন। কভিড সংক্রমণের কারণে বিক্রয় হচ্ছে ২৫-৩০ লাখ টনে নেমে এসেছে। আর চলমান ডলার ও এলসি সংকটে ইস্পাতের দাম বাড়ায় বিক্রি কমেছে আরও ২০ লাখ টন। অথচ এ খাতে উদ্যোক্তাদের মোট বিনিয়োগের পরিমাণ ৫০-৬০ হাজার কোটি টাকা। আর বাজারের বার্ষিক আকার প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকা। যদিও এ খাতের বিএসআরএম, এমএইচ স্টিল রি-রোরিং মিলস, পিএইচপি ইন্টিগ্রেটেড স্টিল মিলস, কেআর স্টিল মিলস, ইউনিটেক্স স্টিল মিলস, কুনমিং স্টিলসহ কয়েকটি নতুন কোম্পানি বিনিয়োগে আসছে, তাদের কারখানা নির্মাণের কাজও চলমান আছে। যদিও একসময় আমদানিনির্ভর ছিল দেশের ইস্পাত খাত। দেশীয় উদ্যোক্তারা সক্ষমতা বাড়াতে এনেছেন বৈচিত্র্য। এর অংশ হিসেবে ইস্পাত উৎপাদনে যুক্ত হয়েছে নতুন প্রযুক্তিও। সময়ের ব্যবধানে ম্যানুয়াল থেকে অটোমেটিক মিল, অটো থেকে ইলেক্ট্রনিক আর্ক ফানের্স। আর সর্বশেষ যুক্ত হলো কোয়াস্টাম আর্ক ফার্নেস, যা ইস্পাত খাতে উৎপাদন বাড়িয়েছে জ্যামিতিক হারে এবং কমেছে উৎপাদন ব্যয়ও। কিন্তু দেশের মোট ১২৫টি সিমেন্ট কারখানা থাকলেও ৩৩টি সিমেন্ট কোম্পানি সক্রিয় ভূমিকা পালন আছে। আর সম্মিলিত উৎপাদন সক্ষমতা চার কোটি ৫০ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে চার কোটি মেট্রিক টন হলো কার্যকর ক্ষমতা। দেশের সিমেন্টের বাজারে ৮০ শতাংশ নিয়ন্ত্রণে আছে শাহ্? সিমেন্ট, বসুন্ধরা সিমেন্ট, সেভেন রিংস সিমেন্ট, ফ্রেশ সিমেন্ট, হাইডেলবার্গ সিমেন্ট, প্রিমিয়ার সিমেন্ট, এমআই সিমেন্ট ও লাফার্জ সুরমা সিমেন্ট।
সিমেন্টের দাম বাড়ানোর কারণ বলতে গিয়ে সেভেন রিংস সিমেন্ট লিমিটেডের কর্মকর্তা ইফতেখার উদ্দিন বলেন, গ্যাস ও বিদ্যুতের কারণে আমাদের প্রতি সিমেন্ট ব্যাগে ২০ টাকা বাড়ানো হচ্ছে। অথচ আমাদের বিক্রি কমছে।
ডায়মন্ড সিমেন্ট মিলস লিমিটেডের ডিজিএম আবদুর রহিম বলেন, সাম্প্রতিক সময়ে বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণে আমাদের খরচ ৪০ টাকার মতো বেড়েছে। তাই শুরুতে ব্যাগপ্রতি ২০ টাকা দাম সমন্বয় করা হচ্ছে।
বিএসআরএম গ্রুপের উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক তপন সেনগুপ্ত বলেন, শুধু বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর কারণে আমাদের প্রতি টন রডের দাম বেড়েছে এক হাজার ২০০ টাকা। আর গ্যাসের দামের কারণেও দাম বাড়বে। যদিও ইস্পাত উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ভালোই চাপে আছে। একদিকে উৎপাদন ব্যয় বাড়ছে, অন্যদিকে বিক্রি কমছে। এভাবে হলে তো সবকিছু স্থবির হয়ে পড়বে।