দু-এক মাসের মধ্যে এলসি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে : গভর্নর
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৪৬ পিএম, ২৪ জানুয়ারী,মঙ্গলবার,২০২৩ | আপডেট: ০৭:২২ এএম, ১৮ ডিসেম্বর,
বুধবার,২০২৪
বর্তমানে ঋণপত্র (এলসি) খোলা নিয়ে যে পরিস্থিতি বিরাজ করছে, তা আগামী দু-এক মাসের মধ্যে স্বাভাবিক হতে পারে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
আজ মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যালয়ে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডিসিসিআই) নবনির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে এমন কথা বলেন তিনি। ডিসিসিআই সভাপতি মো. সামীর সাত্তারের নেতৃত্বে সাক্ষাৎকালে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি এস এম গোলাম ফারুক আলমগীর, সহসভাপতি মো. জুনায়েদ ইবনে আলীসহ পর্ষদের অন্যান্য সদস্য। অর্থনীতি এখন তিনটি প্রধান চ্যালেঞ্জের মুখে বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের নীতি সুদহার বৃদ্ধি ও চীনের বর্তমান করোনা পরিস্থিতি-এই তিন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। তবে এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও আমাদের অর্থনীতি বেশ স্থিতিশীল বলে মনে করেন গভর্নর। আগামী দু-এক মাসের মধ্যে ঋণপত্রের পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে পারে বলে আভাস দেন তিনি। আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের সরবরাহ নিরবচ্ছিন্ন রাখতে বাংলাদেশ ব্যাংকের সহায়তা চান ডিসিসিআই সভাপতি মো. সামীর সাত্তার।
তিনি বলেন, ঋণপত্র নিষ্পত্তিতে পর্যাপ্ত বৈদেশিক মুদ্রা সরবরাহে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে সহায়তা করতে পারে বাংলাদেশ ব্যাংক। রমজানে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করতে বাংলাদেশ ব্যাংক কাজ করছে বলে জানান আব্দুর রউফ তালুকদার।
তিনি বলেন, রমজানের জন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আমদানিতে এলসি মার্জিন ন্যূনতম করাসহ বেশ কিছু নীতিগত পদক্ষেপ নিয়ে কাজ চলছে। এ ছাড়া প্রবাসী আয়ের (রেমিট্যান্স) প্রবাহ বাড়াতে সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক কিছু নীতিগত পরিবর্তন এনেছে বলে ডিসিসিআই নেতাদের জানান আব্দুর রউফ তালুকদার।
গভর্নর বলেন, প্রবাসী আয় পাঠাতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমাদানের বিধান শিথিল করা, স্থানীয় ব্যাংক কর্তৃক মাশুল মওকুফ ও রেমিট্যান্স আহরণে মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসকে (এমএফএস) সম্পৃক্ত করা হচ্ছে। ফলে ভবিষ্যতে প্রবাসী আয়ের প্রবাহ আরও বাড়বে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
ডিসিসিআই সভাপতি মো. সামীর সাত্তার বলেন, অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্ব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে বেসরকারি খাতে ঋণপ্রবাহ বাড়ানো প্রয়োজন। পাশাপাশি খেলাপি ঋণ নিয়ন্ত্রণে সুশাসন নিশ্চিত এবং অভ্যাসগত খেলাপিদের কাছ থেকে দ্রুত ঋণ পুনরুদ্ধারে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার পরামর্শ দেন সামীর সাত্তার। সে জন্য ব্যাংকিং আইনে প্রয়োজনীয় সংস্কার আনারও পরামর্শ দেন তিনি। বৈঠকে সময়োপযোগী মুদ্রানীতি ঘোষণা করায় বাংলাদেশ ব্যাংককে ধন্যবাদ জানান ঢাকা চেম্বারের সভাপতি মো. সামীর সাত্তার।
তিনি বলেন, এবারের মুদ্রানীতিতে উল্লিখিত সহায়ক নীতি ও নির্দেশিকা দেশের বেসরকারি খাতের পাশাপাশি আর্থিক খাতকে ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করবে।
মো. সামীর সাত্তার আরও বলেন, দেশের সিএমএসএমই খাতের স্বার্থে ঋণ সহায়তাপ্রাপ্তি ও ক্রেডিট গ্যারান্টি স্কিমের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র প্রদানের প্রক্রিয়া সহজ করা প্রয়োজন। এ ছাড়া তরুণ ও উদ্ভাবনী স্টার্টআপগুলোর ঋণ পাওয়া সহজ করতে ডকুমেন্টেশন প্রক্রিয়া সহজ করার আহ্বান জানান তিনি।