ভরা মৌসুমেও সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বেড়েছে সবজির
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৪১ পিএম, ২০ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ১০:১৫ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
ভরা শীতের মৌসুম হলেও রাজধানীর বাজারে মিলছে না স্বস্তি। সরবরাহ ভালো থাকার পরও এক সপ্তাহের ব্যবধানে শাক-সবজির দাম কেজিতে ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। পাশাপাশি বেড়েছে ডিমের দামও।
তবে মাছ ও মাংসের বাজারও অন্যান্য সময়ের মতো এখনো চড়া। বাজারের এমন চড়া অবস্থা নিয়ে ক্ষুব্ধ ক্রেতারা। সপ্তাহের ব্যবধানে দাম বাড়ার কোনো কারণই খুঁজে পাচ্ছেন না তারা। তবে বিক্রেতারা বলছেন, পরিবহন খরচ আগের চেয়ে বেশি দিতে হচ্ছে, তাই দাম বেড়েছে। এক সপ্তাহের ব্যবধানে নতুন করে পরিবহন খরচ বেড়েছে কিনা জানতে চাইলে সদুত্তর দিতে পারেননি কেউ।
আজ শুক্রবার সকালে রাজধানীর বেশ কিছু বাজার ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, এক সপ্তাহের ব্যবধানে সিমের কেজি ১০ টাকা বেড়ে মান অনুযায়ী ৪০ থেকে ৫০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। গেল সপ্তাহে কাঁচা মরিচের কেজি ছিল ১০০ টাকা। আজ তা বিক্রি হচ্ছে প্রকারভেদে ১২০ টাকা, ১০ টাকা বেড়ে গোল ও লম্বা বেগুন কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ৬০ টাকা বিক্রি হচ্ছে।
এমনিভাবে সপ্তাহের ব্যবধানে ১০ থেকে ২০ টাকা দাম বেড়ে বরবটি প্রতি কেজি ৯০ থেকে ১০০ টাকা, করলা প্রতি কেজি ১২০ টাকা, উচ্ছের প্রতি কেজি ৮০ টাকা, মুলা প্রতি কেজি ৩০ থেকে ৪০ টাকা, পেঁপে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৩০ টাকা, নতুন আলুর প্রতি কেজি ৩০ টাকা, ঝিঙা প্রতি কেজি ৬০ টাকা, পটল প্রতি কেজি ১২০ টাকা, টমেটো প্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, শসাপ্রতি কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া প্রতি কেজি ৪০ টাকা, গাজর প্রতি কেজি ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
অন্যদিকে মাঝারি আকারের লাউ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গেল সপ্তাহে ছিল ৬০ থেকে ৭০ টাকা। যে ফুলকপি ও পাতাকপি গেল সপ্তাহে ২০ টাকা ছিল তা এখন ৩০ থেকে ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এদিকে মাছের বাজার ঘুরে দেখা যায় দাম আগের মতোই চড়া আছে। রুই মাছ প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা, চাষের কই প্রতি কেজি ২৫০ টাকা, পাবদা প্রতি কেজি ৩০০ থেকে ৪৫০ টাকা, শিং মাছ প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা, ছোট টেংরা প্রতি কেজি ৪০০ টাকা, দুই কেজি ওজনের নদীর পাঙাশ ৬০০ টাকা, ছোট বোয়াল প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা, ছোট কাতল প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা, ছোট পাঙ্গাশের কেজি ১৮০ থেকে ২০০ টাকা, ছোট কাঁচকি প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, টাকি মাছের প্রতি কেজি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, শোল মাছ প্রতি কেজি ৮০০ থেকে ৯০০ টাকা, তেলাপিয়া প্রতি কেজি ২২০ টাকা, ছোট চিংড়ি প্রতি কেজি ৫০০ থেকে ৬৫০ টাকা, ছোট রূপচাঁদা প্রতি কেজি ৭৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বাজারে ৯০০-৯৫০ গ্রাম ওজনের ইলিশ ১১০০ থেকে ১২০০ টাকা, ৭০০ গ্রামের ইলিশ ৮৫০ টাকা, ৬০০ গ্রামের ইলিশ ৭৫০ টাকা, সাড়ে ৩০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের দাম ৫২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মান ভেদে সরু মিনিকেট চালের কেজি ৬৮ থেকে ৭৫ টাকা, নাজিরশাইল চাল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারে ব্রয়লার মুরগির দাম গত সপ্তাহের মতোই আছে। প্রতি কেজি ১৫৫ থেকে ১৬০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাকিস্তানি মুরগি ২৬০ টাকা, লেয়ার মুরগি ২৭০ টাকা ও গরুর মাংস প্রতি কেজি ৭০০ টাকা এবং খাসির মাংস ৯০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে ডিমের দাম গেল সপ্তাহের তুলনায় ১৫ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এক হালি ডিম ৪০ থেকে ৪২ টাকা বিক্রি হচ্ছে। আর ডজন ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গেল সপ্তাহে ডজন ছিল ১১৫ থেকে ১২০ টাকা।
এছাড়া হাঁসের ডিম প্রতিটি ১৮ টাকা, হালি ৭০ টাকা এবং ডজন ২১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। গেল এই দামেই বিক্রি হয়েছে হাঁসের ডিম।
এছাড়া আমদানি পেঁয়াজ কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ৪০ থেকে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে দেশি নতুন পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, আদা কেজিপ্রতি ১৪০ থেকে ১৬০ টাকা, রশুন কেজিপ্রতি ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
রামপুরা কাঁচাবাজারে বাজারে কথা হয় রাহেলা বেগমের সঙ্গে। তিনি বলেন, বাজারে সব পণ্যের দাম বেশি। মাছ, মাংস, শাক-সবজিসহ সব কিছুরই দাম বেড়েছে। শীতে কম দামে সবজি খেতে পাড়ছি না। বরং অতিরিক্ত বেশি দামে ক্রয় করতে হচ্ছে। আর মাছের কথা বলাই তো যাবে না। এতো দাম কল্পনাও করিনি মাছের দাম যে এতো বেশি।
রামপুরা কাঁচাবাজার এলাকার সবজি বিক্রেতা বিমল তালুকদার বলেন, সবজি গ্রাম থেকে আসতে আসতে আর ট্রাক ভাড়া দিতে গিয়ে সবজির দাম বেড়ে গেছে। আমাদের চেষ্টা থাকে কম দামে বিক্রি করার।