কয়লা আমদানি নিয়ে সংকটে ব্যবসায়ীরা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১৪ এএম, ১৩ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০৪:২৫ এএম, ১৭ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
ভারতে আটকে থাকা ৩৯ হাজার মেট্রিক টন কয়লা নিয়ে ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট উপজেলার গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী শুল্ক বন্দরের ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছেন।
আগাম ১৫ কোটি টাকার রাজস্ব দিয়ে করা ৩৬০ জন ব্যবসায়ীর ৩৭২টি এলসির বিপরীতে এই কয়লা দ্রুত আমদানির করার দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।
এদিকে বিগত দিনের এলসির কয়লা না দিয়ে নতুন এলসির কয়লা দেওয়ার প্রতিবাদ জানিয়ে গত মঙ্গলবার কাস্টমস এক্সইজ অ্যান্ড ভ্যাট রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে ওই ব্যবসায়ীরা স্মারকলিপি দিয়েছেন।
উপজেলার গোবড়াকুড়া ও কড়ইতলী আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপ ও কড়ইতলী কোল অ্যান্ড কোক ইম্পোর্টার অয়েলফেয়ার এসোসিয়েশন সূত্রে জানা গেছে, গোবরাকুড়া বন্দরের আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের অন্তর্ভুক্ত ব্যবসায়ী রয়েছেন ৪০০ জন। কড়ইতলী কোল অ্যান্ড কোক ইম্পোর্টার অয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের ব্যবসায়ী আছেন ২০০ জন। তাঁরা ভারত থেকে গোবরাকুড়া ও কড়ইতলী শুল্ক স্থলবন্দর দিয়ে সারা বছর কয়লা ও পাথর আমদানি করেন।
২০১৭ সাল থেকে গোবরাকুড়ার ২৫০ জন ও কড়ইতলী বন্দরের ১১০ জন ব্যবসায়ী ভারত থেকে কয়লা আমদানি করতে এলসি করেন। ৩৬০ জন আমদানিকারকের ৩৭২টি এলসির বিপরীতে ভারতে ৩৯ হাজার মেট্রিক টন কয়লা আটকে রয়েছে। যার আনুমানিক মূল্য ৯৭ কোটি ৫০ লাখ টাকা। এলসি করার সময় ব্যবসায়ীদের আগাম প্রায় ১৫ কোটি টাকা রাজস্ব দিতে হয়েছে।
সম্প্রতি ভারতের রপ্তানিকারকেরা এই এলসির বিপরীতে কয়লা না দিয়ে নতুন এলসির কয়লা দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। বিষয়টি নিয়ে এলাকার সংসদ সদস্য ও গোবড়াকুড়া ও কড়ইতলী আমদানি-রপ্তানিকারক গ্রুপের সভাপতি জুয়েল আরেংয়ের উপস্থিতিতে গত ৪ ও ৮ জানুয়ারি ব্যবসায়ীদের সভা হয়। সভায় ব্যবসায়ীরা বিগত দিনের এলসির বিপরীতে কয়লা আমদানি করার পর নতুন এলসি করার সিদ্ধান্ত নেন। এই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে কড়ইতলী কোল অ্যান্ড কোক ইম্পোর্টার অয়েলফেয়ার এসোসিয়েশনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ভারতের রপ্তানিকারকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে নতুন এলসির মাধ্যমে কয়লা আমদানিরর সিদ্ধান্ত নেন। সেই সিদ্ধান্ত অনুযায়ী গত সোমবার কড়াইতলী বন্দর দিয়ে কয়লা আমদানি শুরু করেছেন কিছু ব্যবসায়ী।
এ নিয়ে দুই বন্দরের আমদানিকারদের মধ্যে মতানৈক্য দেখা দেয়। এই মতানৈকের পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার শাপলা বাজারে গোবরাকুড়া বন্দরের ব্যবসায়ীরা বিগত দিনের এলসির কয়লা আমদানি শেষ না করে নতুন এলসির কয়লা আমদানি করার প্রতিবাদ জানান। পরে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে আগে এলসির কয়লা আমদানি করে পরে নতুন এলসির বিপরীতে কয়লা আমদানি করার দাবি জানিয়ে কাস্টমস এক্সইজ অ্যান্ড ভ্যাট রাজস্ব কর্মকর্তার কাছে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।
কড়ইতলী কোল অ্যান্ড কোক ইম্পোর্টার অয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক ইসমাইল হোসেন বলেন, ‘কেউ যদি আমাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে থাকেন, সেটা ঠিক হবে না। আগের এলসির কয়লা দেওয়া হোক, এটা আমরাও চাই।’
গোবরাকুড়া আমদানি ও রপ্তানিকারক গ্রুপের মহাসচিব অশোক সরকার বলেন, ‘দুই বন্দরের ৩৭২টি এলসির বিপরীতে ভারতে ৩৯ হাজার মেট্রিক টন কয়লা পাওনা রয়েছে। আগে এই কয়লা আমদানি করতে হবে। নতুন করে কয়লা আমদানি করা হোক এটা আমাদের ব্যবসায়ীদের সিদ্ধান্ত।’