ঋণখেলাপি-অর্থপাচারের ‘মহোৎসবে’ খাদের কিনারে ব্যাংক খাত : টিআইবি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:৫৮ পিএম, ৬ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২২ | আপডেট: ১১:০০ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
ঋণখেলাপি, বেনামি ঋণ ও অর্থপাচারের ‘মহোৎসবে’ ব্যাংক খাতকে খাদের কিনারে ঠেলে দেয়া হয়েছে উল্লেখ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।
গতকাল সোমবার রাতে এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগ প্রকাশ করে সংস্থাটি। বিবৃতিতে বলা হয়, ইসলামী ব্যাংকসহ কমপক্ষে তিনটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে ভুয়া ঠিকানা ও অস্তিত্বহীন কোম্পানির বিপরীতে কয়েক হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে খেলাপি ঋণ ও অর্থপাচারের কারণে জর্জরিত ব্যাংকিং খাতকে খাদের কিনারায় ঠেলে দেয়া হয়েছে। দেশের কয়েকটি বেসরকারি ব্যাংক থেকে অত্যন্ত চালাকির সঙ্গে ঋণের নামে হাজার হাজার কোটি টাকা তুলে নেয়া হয়েছে বিষয়টি দেশের অর্থনৈতিক কাঠামোর জন্য ‘ভয়ংকর উদ্বেগজনক’ মন্তব্য করে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সাধারণ গ্রাহককে ব্যাংক থেকে ন্যূনতম অঙ্কের ঋণ নিতে গেলেও যে পরিমাণ কাগজপত্র দিতে হয়, সেখানে কীভাবে ভুয়া কিংবা নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের বিপরীতে অবলীলায় হাজার হাজার কোটি টাকা ঋণের নামে তুলে নেয়া হচ্ছে? গত ১৪ বছরে আগের তুলনায় মোট খেলাপি ঋণের পরিমাণ প্রায় ছয়গুণ বেড়েছে, বারবার খেলাপি ঋণের সংজ্ঞা পরিবর্তন করে কিংবা পুনঃতফসিল করেও খেলাপি ঋণ আদায় করা যাচ্ছে না, তখন কাদের স্বার্থে কিংবা কাদের দেখে অস্বাভাবিক দ্রুততার সঙ্গে এমন আগ্রাসী ঋণ দেয়া হয়? প্রকৃতপক্ষে কারা এ বিপুল পরিমাণ অর্থের সুবিধাভোগী? এ প্রশ্নের উত্তর দেশবাসীর জানার অধিকার আছে। কেন ব্যাংক খাতের নিরাপত্তা ও শৃঙ্খলা ফেরানোর জন্য কোনো কার্যকর উদ্যোগ নেয়া হলো না-এমন প্রশ্ন রেখে ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, দেশের বিভিন্ন ব্যাংক থেকে নামে-বেনামে ঋণ নিয়ে বিদেশে অর্থপাচারের নির্ভরযোগ্য বহু তথ্য প্রতিনিয়ত জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে প্রকাশিত হচ্ছে। বিশেষ করে আমদানি-রফতানি বাণিজ্যে চালান জালিয়াতির মাধ্যমে অর্থপাচারের ঘটনায় খোদ বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য বলছে, পণ্য আমদানিতে ২০ থেকে ২০০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়তি দাম দেখানোর শতাধিক ঘটনা সংঘটিত হয়েছে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, অস্বাভাবিক ও প্রশ্নবিদ্ধ ঋণের উল্লিখিত ঘটনা সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে তদন্ত করার পাশাপাশি কোনোভাবেই যেন এসব অর্থ বিদেশে পাচার হতে না পারে, সে বিষয়ে এখনই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে। পাচার হওয়া অর্থ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেতে দেশে-বিদেশে সবধরনের লেনদেনের তথ্য আদান-প্রদান সহায়ক ‘কমন রিপোর্টিং স্ট্যান্ডার্ড (সিআরএস)’-এ অবিলম্বে যুক্ত হতে হবে। একই সঙ্গে ভুয়া ও বেনামি ঋণ জালিয়াতি প্রতিরোধের জন্য আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতার আলোকে অবিলম্বে ব্যক্তিমালিকানাধীন খাতে ‘প্রকৃত মালিকানার স্বচ্ছতা’ আইন প্রণয়ন করতে হবে।