অস্থির চিনির বাজার : কেজি ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৩ পিএম, ১৪ অক্টোবর,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৭:৪০ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
বাজারে বেড়েই চলছে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম। জীবনযাত্রার ব্যয় নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছে সাধারণ মানুষ। এরমধ্যে সরকারের ঘোষণা ছাড়া গত তিন-চার দিনের ব্যবধানে পুনরায় বেড়েছে চিনির দাম। পাঁচ-আট টাকা বেড়ে প্রতি কেজি চিনি এখন ১০০ টাকা ছুঁইছুঁই।
আজ শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তান বাজার, নারিন্দা কাঁচা বাজার ও রায়সাহেব বাজারের খুচরা ও পাইকারি দোকান ঘুরে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি চিনির দাম ছিল ৮৪ থেকে ৮৮ টাকা। আজ বিক্রি হচ্ছে ৯০ থেকে ৯৫ টাকায়।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, আগে ৫০ কেজির চিনির বস্তা কিনতেন ৪২০০ থেকে সর্বোচ্চ ৪৩০০ টাকায়। দুইদিন আগে চিনি কিনতে হয়েছে ৪৫০০ টাকায়। তবে প্যাকেট জাত চিনির দাম গত এক সপ্তাহে বাড়েনি। সেগুলো প্যাকেটের গায়ে লেখা দামেই (৯৫ টাকা) বিক্রি হচ্ছে।
চিনির দামের বিষয়ে কথা হয় কাপ্তান বাজারের পাইকারি ব্যবসায়ী শুক্কুর দেয়ানের সঙ্গে। তিনি বলেন, কয়েকদিন আগেও ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে চিনি পাইকারি বিক্রি করতাম। দুই দিনে দাম বেড়ে যাওয়া এখন মানভেদে ৮৫ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করতে হচ্ছে।
তিনি বলেন, মিলে চিনির দাম তেমন না বাড়লেও ট্রাক লোড করা ও পরিবহন খরচ অনেক বেড়ে গেছে। এছাড়া ডিপো ও ডিলাররা সিন্ডিকেট করে দামবৃদ্ধি করছে। ফলে আমাদের বেশি দামে চিনি কিনতে হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে খুচরা বাজারে।
নারিন্দা কাঁচাবাজারের খুচরা ব্যবসায়ী ছলেমান মিয়া বলেন, আগের দামে কেনা চিনি ৯০ টাকা দরে বিক্রি করছি। কিন্তু আজ পাইকারি কেনা-ই বেশি পড়েছে। তাই ৯৫ টাকা দরে বিক্রি করতে হচ্ছে। প্রতি বস্তা চিনিতে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা দাম বেড়েছে। সবকিছুর দাম বাড়ায় আমরা দোকানদাররাও ভালো অবস্থায় নেই।
চিনি কিনতে আসা শ্রমজীবী হাকিমুদ্দিন বলেন, আমরা তো কোনোমতে খেয়ে বেঁচে আছি। নাস্তায় পিঠা খেলে চিনি লাগে, তাই সেগুলো খাওয়া কমিয়ে দিয়েছি। ১০০ টাকা কেজি চিনি কোনো দিন দেখিনি। সারাদিন পরিশ্রম শেষে আগে লেবুর সঙ্গে চিনি মিশিয়ে একটু শরবত খেতাম। এখন শুধু লেবুর পানি খাই, চিনি দেই না।
তিনি বলেন, চিনির দাম বাড়ায় দোকানে চায়ের দামও বেড়েছে। একইসঙ্গে বেড়েছে গরিবের বনরুটি আর বিস্কুটের দামও। আমাদের মতো মানুষদের দেখার কেউ নেই। আয় তো বাড়েনি, বেড়েছে শুধু খরচ।
নাজমা বেগম নামে এক গৃহিণী বলেন, বাজারে সবকিছুর দামই বাড়তি। আগে চিনি আধা কেজি কিনতাম। এখন সেই টাকা দিয়ে ২৫০ গ্রাম কিনি। আমরা অল্প আয়ের মানুষরা এভাবে সব খাবার কেনা কমিয়ে দিয়েছি। সবাই টিভিতে বড় বড় ভাষণ দেয়। কিন্তু আমাদের কথা কেউ বলে না। আমরা কেমন আছি, তা কেউ খোঁজও নেয় না।
এদিকে চিনির দামের প্রভাব পড়েছে চা দোকানগুলোতে। চিনির দাম বাড়ার অজুহাতে ৫ টাকার চা এখন ৮-১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রাস্তার ধারের ২৫০ গ্রাম খোলা দুধ আগে বিক্রি হতো ২০ টাকায়। চিনির দাম বাড়ার কথা বলে দোকানিরে তা এখন বিক্রি করছেন ২৫ টাকায়।