কম দামের সয়াবিন তেল : কাজীর গরু কেতাবে আছে, গোয়ালে নেই!
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৬:০৭ পিএম, ৮ অক্টোবর,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:০৩ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
ভোজ্যতেলের বাজারে নৈরাজ্য চলছেই। বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ১৪ টাকা কমানো হয়েছে। এ ঘোষণার পর পাঁচদিন পেরোলেও পুরোনো দামেই তেল বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা। এ নিয়ে খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, কমদামের তেল তারা এখনো পাননি। আর সরবরাহকারী কোম্পানিগুলো বলছে, নতুন দামের তেলের উৎপাদন শুরু হয়েছে।
আজ শনিবার সকালে মিরপুর, কাজিপাড়া, বাড্ডা এলাকার একাধিক দোকান ঘুরে নতুন দামের তেল পাওয়া যায়নি। কোম্পানি থেকে আগের দামেই তারা কিনছেন বলে অভিযোগ করেছেন দোকানিরা। গত সোমবার (৩ অক্টোবর) বাংলাদেশ ভেজিটেবল অয়েল রিফাইনার্স অ্যান্ড বনস্পতি ম্যানুফ্যাকচারার্স অ্যাসোসিয়েশন দাম কমিয়ে ১ লিটার তেলের মূল্য নির্ধারণ করে ১৭৮ টাকা। যা আগে ছিল ১৯২ টাকা। অন্যদিকে ৫ লিটার বোতলে ৬৫ টাকা কমিয়ে নতুন দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ৮৮০ টাকা, যা আগে ছিল ৯৪৫ টাকা। অর্থাৎ বোতলজাত ৫ লিটার সয়াবিনে লিটারপ্রতি ১৩ টাকা কমেছে। খোলা সয়াবিন তেলের দাম ১৭ টাকা কমিয়ে নির্ধারণ করা হয়েছে ১৫৮ টাকা।
মিরপুর ১২ নম্বর সেকশনের মুসলিম বাজারের মারজানা স্টোরের স্বত্বাধিকারী শরিফ উদ্দিন জানান, বোলতজাত ১ লিটার তেল তিনি ১৯০-১৯২ টাকায় বিক্রি করছেন। অন্যদিকে ৫ লিটারের তেল বিক্রি করছেন ৯৪৫ টাকায়। বাড়তি দাম প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগের দামেই তেল বিক্রি করছি। কারণ নতুন মূল্যে তেল এখনো কোম্পানি দিয়ে যায়নি। কমানো দামে তেল দিলে আমরাও তেলের দাম কমাতে পারবো। মিরপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া স্টোরে প্রতি লিটার খোলা ও বোতলজাত তেল ১৯০ টাকা দরে বিক্রি করতে দেখা গেছে। তার পাশেই আসাদুজ্জামানে স্টোরে ৫ লিটারের বোতলজাত তেলের দাম ৯২০ টাকা চাওয়া হয়।
দোকানি মো. তাওহীদ জানান, নতুন দামের খবর শুনেছি কিন্তু এর প্রভাব নাই। কেননা কোম্পানিগুলো এখনও পুরোনো দামে তেল বিক্রি করছে। মিরপুরের মুসলিম বাজারে কিশোরগঞ্জের স্টোরে একই দামে তেল বিক্রি করতে দেখা গেছে। এ বিষয়ে দোকানি মো. আবির হোসেন বলেন, আজকেও কিছু তেল আসবে, সেটাও আগের দামেই আসবে। পুরোনো মূল্যে তেল আসলে আমাদের কী করার আছে বলেন! বাজারে পণ্য বিক্রির সময়ে সিটি গ্রুপের একজনের সেলস রিপ্রেজেন্টেটিভকে (এসআর) বাড়তি দাম নেয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি কোনো উত্তর দিতে চাননি। কাজিপাড়ার আরিফ এন্টারপ্রাইজের বিক্রেতা জানান, ৫ লিটার তেলের দাম ৯০০ টাকা রাখা যাবে। এর কমে বিক্রি করা যাবে না। তেলের দাম কমেছে কি না আমার জানা নেই, কোম্পানি তো আমাদের আগের দামেই তেল দিচ্ছে। বাড্ডা এবং রামপুরাতেও দেখা গেছে একই চিত্র।
পাইকারি ও খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, নতুন দামের সয়াবিন তেল বাজারে এখনো আসেনি। আগের দামেই তেল বিক্রি করছেন সবাই। ক্রেতারা দোকানে গিয়ে নতুন দামের সয়াবিন চাইছেন, এ নিয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। মেঘনা গ্রুপের জ্যেষ্ঠ মহাব্যবস্থাপক এস এম মুজিবুর রহমান জানান, নতুন দামের সয়াবিন তেল বাজারে এখনো আসেনি। তবে এর উৎপাদন শুরু হয়েছে। চলতি সপ্তাহে সারাদেশে নতুন দামের তেল পাওয়া যাবে বলে আশা করা যায়।
এদিকে গত ৬ অক্টোবর পাম তেলের দাম প্রতি লিটারে ৮ টাকা কমিয়ে ১২৫ টাকা নির্ধারণ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বেশিরভাগ দোকানে পাম তেল বিক্রি না হলেও যেসব দোকানে পাম তেল বিক্রি হচ্ছে তারা আগের দামেই তেল বিক্রি করছেন। কারণ হিসেবে বিক্রেতারা পুরোনো দামে তেল পাওয়ার অভিযোগ করেছেন।