‘অবরোধে ২০ কেজি চাল দেয় সরকার, তাও খেয়ে ফেলে মেম্বার-চেয়ারম্যান’
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:৪৮ পিএম, ৫ অক্টোবর,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৯:২২ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
মাছের প্রজনন ও উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে মৎস্য বিভাগ। এ সময়ে দেশে ইলিশ আহরণ, ক্রয়-বিক্রয়, পরিবহন ও মজুত পুরোপুরি নিষিদ্ধ। জেলেরা বলছেন সরকারের নিয়ম মানতে প্রস্তুত তারা। তবে সরকারি সহযোগিতা নিয়ে অভিযোগ রয়েছে জনপ্রতিনিধিদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, শুক্রবার ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের সকল নদ-নদী ও সাগরে ২২ দিন ইলিশ ধরা সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ থাকবে। মা ইলিশের প্রজনন নিরাপদ করার জন্য গত কয়েক বছরের মতো এবারও অবরোধ কর্মসূচি নেয়া হয়েছে। পটুয়াখালীতে নিবন্ধিত জেলের সংখ্যা ৬৭ হাজার হলেও প্রায় ১ লাখ জেলে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন।
জেলেদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, নিষেধাজ্ঞার এই সময়ে ভারত ও মিয়ানমারের জেলেরা বাংলাদেশের জলসীমায় এসে প্রতি বছরই মাছ শিকার করে। এ নিয়ে দেশের জেলেরা বিগত বছরগুলোতে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়নি। আবার সরকারিভাবে যে সহযোগিতা করা হয় তা প্রকৃত জেলেরা পাচ্ছে না।
ডাকুয়া ইউনিয়নের জেলে শামীম বলেন, এ বছর বন্যার প্রভাব গেছে। আমরা জাল বাইতে পারি নাই এতদিন। ২২ দিনের অবরোধ দেবে সরকার। এ সময় ২০ কেজি চাল দেবে তাও আবার খেয়ে ফেলে মেম্বার চেয়ারম্যানে। চর মোন্তাজ এলাকার সাথী বেগম বলেন, সরকার ২২ দিনের অবরোধে যা দেয়, তা আমরা পাই না। চালের সঙ্গে আলু-ডাল- তেল-পেঁয়াজ লাগে। সংসারে অনেক খরচ হয়, শুধু চাল দিয়ে চলতে পারি না।
বদনাতলী এলাকার জেলে হাফিজুর রহমান বলেন, সরকার যে অনুদান দেয় তা যদি পূর্ণভাবে জেলেদের মধ্যে বিতরণ করে দেয় তাহলে ভালো হতো। সরকার অনুদান দেয় শুনি, কিন্তু বড় মিয়াগো লইগা পাই না।
গলাচিপার জেলে দেলোয়ার হাওলাদার বলেন, ভারতের জেলেরা মাছ ধরে নিয়ে গেলে আমরা মাছ পাই না। অবরোধ দিলে সবার জন্য সমান দেয়া উচিত। সরকার থেকে আমাদের জন্য যে চাল দেয়, আমরা তা পাই না। অনেক মেম্বার চেয়ারম্যান নিজেদের লোকদের দেখে চাল দেয়, গরিব জেলেরা পায় না।
পটুয়াখালী জেলা মৎস্য কর্মকর্তা আজহারুল ইসলাম বলেন, আগামী ৭ অক্টোবর থেকে ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত ২২ দিন নদী এবং সাগরে ইলিশ ধরা, পরিবহন, ক্রয়-বিক্রয় ও মজুত রাখা নিষিদ্ধ। আমরা ইতোমধ্যে আমাদের সব উপজেলায় মৎস্য আড়ত, বাজারসহ সব জায়গায় মাইকিং করে লিফলেট বিতরণ করছি। তবে ৭ তারিখ থেকে আমাদের অভিযান পরিচালিত হবে। জেলা-উপজেলা প্রশাসন, বাংলাদেশ পুলিশ, কোস্ট গার্ড, নৌ পুলিশ সকলের সহযোগিতায় আমরা নদী ও সমুদ্রে অভিযান পরিচালনা করব।
এ সময়ে জেলেরা কী ধরনের সহায়তা পাবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নিবন্ধিত জেলেদের ২২ দিনের অবরোধের জন্য ২০ কেজি করে খাদ্য সহায়তা দেয়া হবে। অবরোধ শুরুর প্রথম দিকে চাল বিতরণ করা নিশ্চিত করব।