চীনা পণ্যে যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, যে প্রভাব পড়বে বাংলাদেশে
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ১০:৫৭ এএম, ১০ জুলাই,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১০:১৬ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
করোনার আগে থেকেই চীনের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের বাণিজ্যযুদ্ধ ছিল আলোচনার তুঙ্গে। দুদেশই দুদেশের পণ্যে শুল্ক আরোপ করেছিল। বলা চলে দুদেশের মধ্যে এ ধরনের বাণিজ্যযুদ্ধ লেগে গিয়েছিল। এর মধ্যে করোনার হানায় সারা বিশ্ব যখন স্থবির হয়ে পড়েছে, তখন কে এই মরণঘাতী জীবানু ছড়িয়েছে তা নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলে সবখানে। তবে এতকিছুর মধ্যেও চীন-যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে ঝামেলা লেগেই ছিল।সব মহলেই আলোচনা ছিল চীন-যুক্তরাষ্টের সম্পর্ক কোন পথে যাচ্ছে।
চীনা প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা প্রতিষ্ঠান হুয়াওয়ের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের নিষেধাজ্ঞা, এছাড়া ২০২১ এ জিনজিয়াং এর টমেটো ও তুলায় নিষেধাজ্ঞা ছিল। এবার দুই দেশের মধ্যে এ বাণিজ্যযুদ্ধ আর তীব্র আকার ধারণ করছে। ফলে চীন তথা জিনজিয়াং প্রদেশটির ওপর বাণিজ্যিকভাবে নির্ভরশীল দেশগুলোর মধ্যে ব্যাপক প্রভাব পড়বে।
‘বলপূর্বক’ শ্রম আইন প্রণয়ের পর এবার দাপ্তারিকভাবে চীনের পশ্চিমাঞ্চলীয় জিনজিয়াং অঞ্চলে উৎপাদিত সব পণ্য নিষিদ্ধ করেছে যুক্তরাষ্ট্র। চীনের জিনজিয়াং প্রদেশে তুলা তৈরি হয়। আর সেখানে উইঘুর মুসলিমদের নির্যাতন, শিশু শ্রম ও শ্রম আইনের লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটে থাকে বলে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে। আর এ কারণে প্রদেশটিতে উৎপাদিত পণ্য নিষিদ্ধ করেছে দেশটি।
এদিকে যেসব দেশ ও প্রতিষ্ঠান চীনের এ অঞ্চল থেকে পণ্য আমদানি করে যুক্তরাষ্ট্রে রফতানি করবে তাদেরও নিশ্চিত করতে হবে যে জোরপূর্বক এ পণ্য তৈরি হয়নি। কেননা জোরপূর্বক শ্রম দিয়ে কোনো কিছু তৈরি করা যা মানবাধিকারের লঙ্ঘন বলে মনে করছে যুক্তরাষ্ট্র। তবে চীনের দাবি, জিনজিয়াংয়ে উইঘুর মুসলমানরা ঐতিহ্যগতভাবে সেখানেই বাস করছে। তাদের কেউ জোরপূর্বক আটকে রাখেনি।
করোনার ধাক্কা কাটিয়ে যখন বাংলাদেশ তৈরি পোশাক শিল্পে দাঁড়ানোর চেষ্টা করছে, ঠিক তখন এমন নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো। এর ফলে অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের। কেননা বাংলাদেশের পোশাক শিল্পের কাঁচামালের জন্য চীনের ওই প্রদেশটির ওপর অনেকাংশে নির্ভরশীল। এ শিল্পে ব্যবহৃত তুলার ৩০ ভাগ আসে চীনের ওই প্রদেশ থেকে। যার কারণে দেশে তৈরি পোশাক শিল্প সংকটে পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন বাংলাদেশের পোশাক প্রস্তুত ও রফতানিকারকরা।
এদিকে জিনজিয়াং প্রদেশের ফেবরিক শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয়, তার মিত্র দেশগুলো ইউরোপেও রফতানি করা যাবে না। ফলে বলা যায়, চীনের জিনজিয়াংয়ের তুলা বাংলাদেশ কোনোভাবেই ব্যবহার করতে পারবে না।
এমন পরিস্থিতিতে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে বিজিএমইএ জানিয়েছে। বলা হয়েছে, চীন থেকে তুলা আমদানির সময় জিনজিয়াংয়ের তুলা না পাঠানোর নিশ্চয়তা নিচ্ছে বাংলাদেশ। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র থেকে জিনজিয়াং এর তুলা ও ফেব্রিক্স শনাক্তরণের যন্ত্র আমদানি করার বিষয়ে পদক্ষেপে নেওয়া হয়েছে।