ঈদ শেষেও কমেনি মুরগি-গরুর মাংসের দাম
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:০৪ পিএম, ৮ মে,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১২:৫২ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
ঈদুল ফিতরের আমেজ শেষে বেশির ভাগ মানুষ কর্মস্থলে ফিরলেও বাজারে এখনও ঈদের আমেজ কমেনি। বরং ঈদের কয়েক দিন আগে থেকে বাড়িয়ে বিক্রি করা মুরগি ও গরুর মাংসের পাশাপাশি রুই, পাঙ্গাশ ও তেলাপিয়াসহ অধিকাংশ মাছ বিক্রি হচ্ছে সেই বাড়তি দামে। দাম বাড়লেও ক্রেতা কম থাকায় বেচা-কেনা কম বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তারা বলছেন, গরু কেনায় খরচ বেশি, তাই বাড়তি দামে বিক্রি করতে হচ্ছে। ক্রেতারা বলছেন, মেহমানদের ভালো কিছু খেতে দেয়ার জন্য বাড়তি দামেই কিনতে হচ্ছে গরুর মাংস।
আজ রবিবার রাজধানীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ক্রেতাদের উপস্থিতি একেবারেই কম, অনেক দোকানও খোলেনি। তবে যে কয়টি দোকান খোলা রয়েছে সেগুলোতে গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭০০ টাকা কেজিতে, ছাগল-খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে ১০০০ টাকা কেজিতে। ঈদের আগে একই দোকানে ৬৫০ টাকা কেজি বিক্রি হওয়া গরুর মাংস ঈদের দিন বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৭৩০ টাকা কেজিতে। মুরগির মধ্যে ব্রয়লার মুরগির মাংস বিক্রি হচ্ছে ১৭৫ থেকে ১৮০ টাকা কেজিতে। আকারে ছোট পাকিস্তানি কক বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা থেকে ২৬০ টাকায় পিস। দেশি ছোট মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৪৫০ টাকা পিস। আর বড় সোনালী মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩২০ টাকা পিস। আর দেশি বড় মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা পিস।
অথচ ঈদের আগে ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হয়েছিল ১৬০ টাকা কেজিতে। যা ঈদের সময় বিক্রি হয়েছে ১৮০ থেকে ১৯০ টাকা কেজিতে। অর্থাৎ ঈদের সময়ের বাড়তি দরে এখনও বিক্রি হচ্ছে মুরগির মাংসের দাম। মহাখালী কাঁচাবাজারের মাংস ব্যবসায়ী সোহরাব হোসেন বলেন, গরুর মাংসের কেজি এক দাম ৭০০ টাকা। কম দামে বিক্রির কোনো সুযোগ নেই। গরু তো কম দামে কিনতে পারিনি, কেনার পাশাপাশি গরু আনার সময় বিভিন্ন বকশিস দিতে হয়েছে। আপনিই বলেন, গরুর মাংসের দাম না বাড়িয়ে বিক্রি না করে কী লোকসানে বিক্রি করব। কারওয়ান বাজারের রাসনা মাংস বিতানের বিক্রেতা রশিদুল আলম বলেন, হাড়সহ মাংসের কেজি ৭০০ টাকা। হাড় ছাড়া শুধু মাংস ৭৮০ টাকা। এখন বিক্রি কম, ব্যবসাও কম। গত দুদিনে যা বিক্রি হয়েছে তাতে খুব বেশি লাভ হয়নি।
তিনি বলেন, দুই কারণে মাংস বেশি দামে বিক্রি করছি। এক হচ্ছে-গরু বেশি দামে কিনছি। আরেকটি হচ্ছে-খরচ পোষাতেই বেশি দামে বিক্রি করছি। মহাখালী বাজারে মাংস কিনতে এসেছেন সালাহ উদ্দিন নামের একজন মধ্যবয়সী পুরুষ। তিনি বলেন, ঈদের দিন বেশকিছু মাংস কিনেছি, আজকে আমার মেয়ের বাড়ি থেকে আত্মীয় স্বজন আসবে তাদের ভালো খাবার দিতে হবে। সে জন্য গরুর মাংস কিনতে এসেছি। কিন্তু আজকে তো মনে হচ্ছে ঈদের দিনের চেয়েও দাম বেশি। রাজধানীর বাড্ডা এলাকার সাদ্দাম গোস্ত বিতানের দোকানি সাইফুল ইসলাম বলেন, ঈদের দিন দুপুরে মাংস ৭০০ টাকায় বিক্রি করেছি, কিন্তু বিকেলে ৭৫০ টাকাও বিক্রি করেছি। তিনি বলেন, আজকে ৭০০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছি, গরুর বটের কেজি ২৫০ টাকা। আর কলিজা ৮০০ টাকা। গরুর পায়া ২০০০ থেকে ২৫০০ টাকা জোড়া। গরুর দাম বেশি হলেও আমাদের লাভ কিন্তু খুবই সীমিত।
মাংসের পাশাপাশি মাছের বাজার ক্রেতাদের উপস্থিতি কম। ঈদের আগের ২৪০-২৬০ টাকা বিক্রি হওয়া রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজিতে। একই দরে বিক্রি হচ্ছে কাতল মাছও। আর ২২০ টাকা কেজি বিক্রিত হওয়া কারফুর মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা কেজিতে। ৪৫০-৫০০ টাকা কেজির টেংরা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজিতে।
১২০ টাকা কেজির পাঙ্গাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজিতে। তেলাপিয়া মাস বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা কেজিতে। চিংড়ি বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৬৪০ টাকা কেজিতে। পাবদা মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা কেজি। চাষের শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে। আর দেশি শিং মাছ বিক্রি হচ্ছে ৫০০-৬০০ টাকা কেজিতে। চাষের মাগুর মাছ বিক্রি হচ্ছে ২৬০ টাকা থেকে ৪০০ টাকা কেজিতে। এছাড়াও এক কেজি ওজনের (দুই-তিনটি) ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১০০০ হাজার টাকায়।