পেঁপের কেজি ৮০ : কাঁচামরিচ ১২০
তেলের দাম বেড়েছে, সংকট কাটেনি
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:২১ পিএম, ৬ মে,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ১১:৫৫ এএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সয়াবিন তেলের দাম লিটারপ্রতি ৩৮ টাকা বাড়ানোর পরও সংকট কাটেনি। বাজারের বেশিরভাগ দোকানেই তেল পাওয়া যাচ্ছে না। দু-একটি দোকানে ৫ লিটারের বোতলজাত তেল পাওয়া গেলেও ইচ্ছেমতো দাম হাঁকছেন বিক্রেতারা। অন্যদিকে ঈদের আগেই কেজিতে ২০ টাকা বেড়েছে ব্রয়লার মুরগি। মাছের দাম বাড়লেও সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে।
আজ শুক্রবার রাজধানীর মিরপুর, কল্যাণপুর, শ্যামলী এলাকা ঘুরে এই চিত্র দেখা যায়।
গত বৃহস্পতিবার বাণিজ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক শেষে বোতলজাত সয়াবিন তেলের দাম ৩৮ টাকা বাড়িয়ে ১৯৮ টাকা নির্ধারণ করার ঘোষণা দেন ব্যবসায়ীরা। এই দাম শনিবার থেকে কার্যকর হবে বলে জানান তারা। নতুন দাম অনুযায়ী ৫ লিটার বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হবে ৯৮৫ টাকায়। এছাড়া খোলা সয়াবিন তেল ১ লিটার ১৮০ টাকা ও পাম তেল ১ লিটার বিক্রি হবে ১৭২ টাকায়।
মিরপুর ১২ নম্বর মুসলিম বাজারের ব্যবসায়ী আবু তালহা বলেন, তেল নেই কেন তা কোম্পানি কে জিজ্ঞেস করেন। ঈদের এক সপ্তাহ আগ থেকে তেলের গাড়ি আসে না। ৩-৪ দিন পর তেলের সরবরাহ বাড়বে শুনছি।
৫ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে মুসলিম বাজারের একাধিক দোকানে ঘুরেছেন নির্মাণ শ্রমিক শফিক উদ্দিন। তিনি বলেন, দাম বাড়ানো ঘোষণা পর ভাবছিলাম তেল পাবো। কিন্তু কোনো দোকানে তেল পাইনি।
মরিয়ম স্টোরের বিক্রেতা আকিব উদ্দিন বলেন, বাজারে খোলা আর ১-২ লিটারের বোতলজাত তেল নেই। কিছু দোকানে ৫ লিটার তেল আছে কিন্তু ইচ্ছে মতো দাম রেখে বিক্রি করছেন দোকানিরা। যার থেকে যা নিতে পারে নিচ্ছে, ৮০০- ৮৫০ কিংবা ৯০০ টাকা নিচ্ছে। রবিবার তেল দেবে বলে কোম্পানিগুলো জানিয়েছে।
ঈদের পরে গরুর মাংসের দাম ৭০০ টাকায় অপরিবর্তিত রয়েছে। গত মাসে ৬৮০ টাকায় বিক্রি হলেও ঈদের কয়েকদিন আগেই তা ৭০০ টাকা হয়ে যায়। অন্যদিকে ঈদের আগের দিন ব্রয়লার মুরগির দাম ১৬০ টাকা হলেও, ২০ টাকা বেড়ে তা এখন বিক্রি হচ্ছে ১৮০ টাকায়। দেশি মুরগি ১০ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকায়।
ঈদের পরে কিছু সবজির দাম কমলেও বেশিরভাগের দামই রয়েছে অপরিবর্তিত। রুই কাতল মাছের দাম কমলেও পোয়া মাছ বিক্রি হচ্ছে ৮০০ টাকা কেজিতে। বাজারে বড় রুই দুই কেজি ওজনের প্রতি কেজি ৩০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা ঈদের আগে ছিল ৩২০-৩৫০ টাকা। ছোট রুই (নলা) ৭০০ থেকে ৮০০ গ্রাম ওজনের প্রতি কেজি ২০০ টাকা, রুই এক-দেড় কেজি ওজনের প্রতি কেজি ২৩০ টাকায়। কাতল মাছ তিন-চার কেজি ওজনের প্রতি কেজি ৩২০-৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তেলাপিয়া প্রতি কেজি ১৬০ থেকে ১৭০ টাকা, পাঙাশ ১৫০ টাকা, মিরকা দেড় কেজি ওজনের প্রতি কেজি ২০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। শিং মাছ ৩৮০ টাকা আর বড় ইলিশ ৫০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
পেঁপের কেজি ৮০, কাঁচামরিচ ১২০ : ঈদের পর পর্যাপ্ত সরবরাহ না থাকার অজুহাতে বাজারে দাম বেড়েছে সব ধরনের সবজির। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেঁপের দাম। শুক্রবার রাজধানীর বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখে গেছে, মানভেদে প্রতি কেজি পেঁপে বিক্রি হচ্ছে ৭০-৮০ টাকা দরে।
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের সময় মাল কম আসছে, তাই সবজির দাম একটু বেশি। এছাড়াও নতুন পেঁপে এখনো না উঠায় দাম বেশি যাচ্ছে। প্রতিবারই বছরের এই সময়ে এসে পেঁপের দাম বাড়ে।
দেখা গেছে, বাজারে প্রতি কেজি ঢেঁড়স ৫০ টাকা, পটোল ৫০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৮০ টাকা, শসা ৪০ থেকে ৫০ টাকা, কাঁকরল ৬০ থেকে ৭০ টাকা, বরবটি ৫০ থেকে ৬০ টাকা, টমেটো ৫০ টাকা, করলা ৬০ থেকে ৭০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা, ধন্দুল ৫০ টাকা , কাঁচামরিচ ১০০ থেকে ১২০ টাকা, ঝিঙ্গা ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়াও লাউ প্রতি পিস ৬০-৭০ টাকা, ফুলকপি প্রতি পিস ৬০ টাকা। মিরপুরের শেওড়াপাড়ায় বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী বাচ্চু মিয়া। তিনি বলেন, ঈদের পর আজই প্রথম বাজারে এলাম। কিন্তু বাজারে এসে দেখি সব জিনিসের দাম বেশি। প্রতিটি সবজির দাম আগের চেয়ে বেড়েছে। বেশি অবাক লাগছে পেঁপের কেজি দাম ৭০-৮০ টাকা শুনে।এখন আধা কেজি করে সবজি কিনতে হচ্ছে।
বাজারে পেঁপের দাম এত বেশি কেন? এই বিষয়ে মালিবাগ এলাকার সবজি বিক্রিতা হামিদুর রহমান বলেন, এখন আসলে পেঁপের সিজন না। বাজারে এগুলো সব পুরাতন গাছের পেঁপে। এছাড়া সরবরাহও অনেক কম, তাই পেঁপের দাম বাড়তি। নতুন পেঁপের গাছ কেবল লাগিয়েছে চাষিরা। এই নতুন পেঁপে বাজার আসার পর দাম স্বাভাবিক হবে।
তিনি বলেন, বর্তমানে বাজারে ৭০ টাকা কেজিতে পেঁপে বিক্রি হচ্ছে। তুলনামূলক খারাপ পেঁপে ৬৫ টাকা আর একদম ভালো মানের পেঁপে ৮০ টাকা কেজি খুচরা বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে।
সবজির সার্বিক দাম বিষয়ে মহাখালী কাঁচাবাজারের বিক্রেতা বোরহান উদ্দিন বলেন, সবজির দাম কিছুটা বাড়তি। ঈদের সময় মালামাল নিয়ে গাড়ি কম আসছে। আসলেও ভাড়া বেশি। সব মিলিয়ে সবজির দাম একটু বাড়তি যাচ্ছে।