মৌলভীবাজার পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন প্রয়োজন : পর্যটন সেবা সংস্থা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪৪ পিএম, ৩০ এপ্রিল,শনিবার,২০২২ | আপডেট: ০৪:৫০ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
আসন্ন পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে, পর্যটন নগরী মৌলভীবাজারের পর্যটন কেন্দ্রগুলো পর্যটকদেন বরণের জন্য অপেক্ষার প্রহর গুনছে, ইতিমধ্যে জেলার সকল পর্যটন স্থান সমুহের সাথে সম্পৃক্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ সহ হোটেল, রিসোর্ট, কটেজ ব্যবসায়ী সহ ইকো টুরিস্ট গাইডরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করলেও তুলনামূলকভাবে পর্যটকদের সাড়া পাচ্ছেন না। ওরিয়েন্ট ইকো ট্যুরিজম এর ট্যুর অপারেটর সৈয়দ রিফাত জামান রেজবী বলেন, সংক্রমণ করোনাভাইরাস আসার পূর্বে বিদেশি পর্যটকরা, বান্দরবন, সুন্দরবন, পুরান ঢাকা সহ সিলেট, ভ্রমণের জন্য আমাদের ট্যুরিজম কোম্পানি থেকে ট্যুর প্যাকেজ নিতেন, কিন্তু বিগত কয়েক বছর ধরে বিদেশি পর্যটক নেই বললেই চলে।
লাউয়াছড়া ইকো ট্যুরিষ্ট গাইডের সভাপতি মনজুর আহমদ আজাদ মান্না বলেন, দেশের উচ্চবিত্ত পর্যটকরা এখন লাউয়াছড়া সহ শ্রীমঙ্গলে খুব কম আসেন, যারা আসেন মধ্যবিত্ত ও স্থানীয় পর্যটক, উনারা গাইড সার্ভিস নিতে আগ্রহী নয়, যার কারনে অনেক ইকো ট্যুরিষ্ট গাইড পেশা পরিবর্তন করেছেন, তিনি আগত পর্যটকদের সুযোগ সুবিধা দেওয়া সহ পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন করার দাবি জানান।
প্রকৃতির স্বর্গরাজ্য কমলগঞ্জ উপজেলার লাউয়াছড়া জাতীয় উদ্যান, মাধবপুর লেক, হামহাম জলপ্রপাত, স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত স্থান শহিদ বীরশ্রেষ্ঠ সিপাহি হামিদুর রহমানের স্মৃতিসৌধ এবং মাছ ও পাখির অভায়ারণ্য শ্রীমঙ্গলের বাইক্কা বিল (হাওর), বধ্যভূমি ৭১, চা কন্যা নামে পরিচিত চায়ের ভাষ্কর্য সহ দেশের বৃহৎ মিঠাপানির হাওর ও পাখির অভায়ারণ্য হাকালুকি হাওর, মাধবকুণ্ড জলপ্রপাত সহ পাহাড়ী কন্যা ক্ষুদ্রনীগোষ্ঠী খাসিয়া, মনিপুরী, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের জীবন জীবিকা ও সংস্কৃতি আগত পর্যটকদেন এক সময় বাড়তি আকৃষ্ট করলেও, সময় ও যুগের সাথে এসব পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন না করায়,দেশী ও বিদেশী পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন বলে জানান।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাংগঠনিক সম্পাদক এসকে সুমন দাস বলেন, শ্রীমঙ্গল, কমলগঞ্জ, তথা মৌলভীবাজার জেলার পর্যটন কেন্দ্রে গুলো ২০ বছর পৃর্বে মানুষ যা দেখেছে, এখনো তাই দেখছে, সময় ও যুগের সাথে জেলার পর্যটন শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়ন না করায় মানুষ এখন নেপাল ও ভারতমুখী হচ্ছেন, যা দেশ ও জেলার পর্যটন শিল্পের জন্য বড় ধাক্কা। শ্রীমঙ্গলে চা বাগান ও বনের আশপাশের রির্সোট, কটেজগুলো ৯০ ভাগ বুকিং হলেও শ্রীমঙ্গল শহরে থাকা হোটেল, রির্সোট গুলো মাত্র ৪০ ভাগ বুকিং হয়েছে। জেলার বিলাসবহুল রির্সোট, ডুসাই রিসোর্ট এন্ড স্পা, শ্রীমঙ্গলের গ্র্যান্ড সুলতান টি রিসোর্ট অ্যান্ড গলফ, নভেম ইকো রির্সোট গুলো ৯০ ভাগ বুকিং থাকার কথা থাকলেও বাস্তবে তার ভিন্ন চিত্র। শ্রীমঙ্গলের গেস্ট হাউজ ব্যবসায়ীরা হতাশ, আশা করছিলেন বিগত ২ বছরে সংক্রমণ করোনা ভাইরাসের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিবেন কিন্তু হোটেল, গেষ্ট হাউজ ৪০ ভাগ বুকিং হওয়ায় হাতাশায় মধ্যে রয়েছেন। জেলার পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন বিষয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মীর নাহিদ আহসান শ্রীমঙ্গল পর্যটন সেবা সংস্থার সাথে দ্বি-মত পোষন করে বলেন, পর্যটন শিল্পের উন্নয়ন করতে হলে কক্সবাজারের মত সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি ও ব্যক্তি উদ্যোক্তা এগিয়ে আসতে হবে।
তিনি আরও বলেন, ইকো-ট্যুরিজমে যেমন লাউয়াছড়া উদ্যানে কোন উন্নয়ন করা হবে না, তবে অন্যান্য যে পর্যটন স্থানগুলো রয়েছে, সেসব জায়গায় অবকাঠামোগত উন্নয়ন যেমন রাস্তা, ব্রিজ তৈরি করা হয়নি, সেসব জায়গায় উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে, ইতিমধ্যে কমলগঞ্জের মাধবপুর লেকের উন্নয়নের জন্য জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে পর্যটন মন্ত্রণালয়ে আবেদন পাঠানো হয়েছে। পর্যটকরা যাতে নিরাপত্তাসহ ও স্বাচ্ছন্দ্যে মৌলভীবাজার পর্যটন স্পটগুলো ভ্রমণ করতে পারে, সেজন্য জেলা প্রশাসক কর্তৃক সেই ব্যবস্থাপনা করে রাখা হয়েছে।