গ্যাসের দাম বাড়াতে না চাইলে প্রক্রিয়া বন্ধের নির্দেশ আসা দরকার : ক্যাব
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১২ পিএম, ২৭ এপ্রিল,
বুধবার,২০২২ | আপডেট: ০৩:১৮ পিএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
সরকার যদি গ্যাসের দাম বাড়াতে না চায়, তাহলে এখনই উচ্চ পর্যায় থেকে দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধ করা ও বিতরণ কোম্পানিগুলোকে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পদক্ষেপ নিতে হবে। অন্যথায় ঈদের পর বাংলাদেশ এনার্জি রেগুলেটরি কমিশন (বিইআরসি) দাম বাড়ানোর আদেশ দিতে পারে।
আজ বুধবার কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব) আয়োজিত ‘ন্যায্যতা উপেক্ষা করে গ্যাস বাণিজ্য কার স্বার্থে’ শীর্ষক এক অনলাইন সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন ক্যাব সভাপতি গোলাম রহমান।
গোলাম রহমান বলেন মূল্য বৃদ্ধির এখন সময় না। দেশে এখন যে হারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম বাড়ছে, এই অবস্থায় গ্যাসের দাম বাড়ানো হবে আগুনে ঘি ঢালার মতো। এখন যদি সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রক্রিয়া বন্ধের নির্দেশ না দেয়া হয়, তাহলে আমরা আশঙ্কা করছি, ঈদের পরপরই গ্যাসের দাম বাড়ানোর আদেশ দিতে পারে বিইআরসি; যা হবে গণবিরোধী সিদ্ধান্ত।
তিনি বলেন, বিইআরসি ২০ শতাংশের কাছাকাছি প্রস্তাব বোধহয় দিয়েছে। আমি আশা করবো, যদি সরকারের কোম্পানিগুলো দাম বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাহার না করে, তাহলে ক্যাব যেসব তথ্য উপস্থাপন করেছে, তার সত্যতা ও গ্রহণযোগ্যতা কেন নয় তা তাদের রায়ে আলোকপাত করবেন বিইআরসি। ব্যাখ্যা না করে যুক্তি না দিয়ে যদি আদেশ দেয়া হয়, সেটা হবে জনগণের স্বার্থবিরোধী। দেশীয় গ্যাস উৎপাদনের সক্ষমতা বাড়ানোর ওপর জোড় দিয়ে তিনি বলেন, দেশীয় কোম্পানিকে গ্যাস উত্তোলনে সক্ষম না করে বিদেশি কোম্পানিকে দিয়ে গ্যাস উত্তোলন করার প্রচেষ্টা আমরা দেখছি। সরকার গ্যাস উত্তোলনে মনোযোগী বলে মনে হচ্ছে না। সমুদ্রে আমাদের অনেক গ্যাস আছে বলে আমরা শুনি। মিয়ানমার গ্যাস উত্তোলন করছে, সরবরাহ করছে। কোনো এক অদূরদর্শিতার কারণে বাংলাদেশ সরকার গ্যাস উত্তোলনের সম্ভাবনা নষ্ট করেছে। সমুদ্র সম্পদ আহরণ করে তা দেশের উপকারে আনার প্রচেষ্টা আমরা দেখছি না। কোনো একজন বলেছেন, গ্যাস উত্তোলন শুরু করলে পেতে দশ বছর সময় লাগবে। বর্তমান সরকার ১২ বছর ধরে ক্ষমতায় আছে। তাহলে কেন শুরু করলো না। গ্যাসের আমদানি নির্ভরতা কমাতে হবে। তাহলে আমাদের অগ্রগতি বাড়বে। আশা করবো সরকার ও সংশ্লিষ্ট যেসব সংস্থা আছে তারা এতে নজর দেবে। আমদানি নির্ভরতা বাদ দিয়ে নিজস্ব গ্যাস উত্তোলনের দিকে নজর দেবে। গ্যাস সরবরাহে দেশীয় সক্ষমতা বাড়ানোই একমাত্র উপায়।
সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য তুলে ধরেন ক্যাবের জ্বালানি উপদেষ্টা অধ্যাপক শামসুল আলম। তিনি বলেন, বিইআরসির গণ শুনানিতে ১১৭ শতাংশ গ্যাসের দাম বাড়ানোর প্রস্তাব করেছে বিতরণ কোম্পানিগুলো। বিইআরসির কারিগরি কমিটি ৩ ভাগ এবং ক্যাব ১.৬ ভাগ গ্যাসের দাম কমানোর প্রস্তাব করেছে। শুনানিতে কোনো কোম্পানি এবং কারিগরি কমিটির প্রস্তাব যুক্তিযুক্ত হয়নি। এ অবস্থায় কমিশন দাম বাড়ালে তা প্রশ্নবিদ্ধ হবে। জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরুল বদরুল ইমাম বলেন, আপনারা চুরি বন্ধ করেন। যে পরিমাণ গ্যাস চুরি হচ্ছে দেশে, এটি চুরি বন্ধ হলেই সমস্যা সমাধান হয়। স্পটে যে পরিমাণ গ্যাস আমাদের কেনা হয়, যার জন্য এত দাম, এটা তো খুব সহজেই সমাধান করা যায়। সরকারের সদিচ্ছা থাকলে অবশ্যই সমাধান করা যাবে। গ্যাসের দাম বাড়িয়ে জনগণের ওপর চাপ সৃষ্টি করার প্রয়োজন পড়বে না। ক্যাবের সাংগঠনিক সম্পাদক ড. সৈয়দ মিজানুর রহমানের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে ক্যাব সাধারণ সম্পদক হুমায়ূন কবির ভূঁইয়াসহ জেলা পর্যায়ের নেতারা যুক্ত ছিলেন।