আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় দেশে নিত্যপণের দাম দ্বিগুণ-তিনগুণ : সিপিডি
ডেস্ক রিপোর্ট
প্রকাশ: ০৫:৩১ পিএম, ২০ মার্চ,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ১১:১২ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য আকাশচুম্বী। একটি বাড়লে এর সঙ্গে আরও কয়েকটি পণ্যের দাম বেড়ে যায়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ পণ্য চাল, ডাল, তেল, পিয়াজের মূল্য বেড়ে দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হয়ে গেছে। একটি পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ১৫, ২০ ও ৩০ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে। একইভাবে ময়দা, চিনি, ভোজ্য তেল, পিয়াজ, পাউডার মিল্ক, ডিম ও মাংসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক বেশি ফারাক। তারপরও দেশের খাদ্য মূল্যস্ফীতি কীভাবে স্থিতিশীল?
আজ রবিবার (২০ মার্চ) বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) এক মিডিয়া ব্রিফিং ও আলোচনায় এই চিত্র উপস্থাপন করা হয়।
ধানমন্ডির সিপিডি কার্যালয়ে ‘পরিবর্তিত বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের অর্থনীতি কোন পথে?’ এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সিপিডির সিনিয়র রিচার্স ফেলো মো. তৌফিক ইসলাম খান। সিপিডির সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক ড. মোস্তাফিজুর রহমানসহ বিশিষ্টজনরা বক্তব্য রাখেন।
আলোচনায় নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি, বহিঃখাত, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ, ব্যাংকিং খাত এবং বাজেট ব্যবস্থাপনা বিষয়ে আলোকপাত করেন বক্তারা।
সিপিডির প্রবন্ধ উপস্থাপনায় ফাহমিদা খাতুন বলেন, নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্য আকাশচুম্বী। কিন্তু সরকারি খাতায় খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রিত। ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের জানুয়ারি পর্যন্ত যা ৫.৩ শতাংশ। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায়ও কম। কিন্তু এটা বাস্তবতার তুলনায় সঠিক চিত্র নয়। নি¤œ আয়ের মানুষের ওপর ক্রমাগত চাপ বাড়ছে। খাদ্য বহির্ভূত মুদ্রাস্ফীতিও বেশ বেড়েছে।
তিনি বলেন, খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি ও খাদ্য বহির্ভূত মুদ্রাস্ফীতি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, একটি বাড়লে আরেকটি কমে। খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি অনেক বেশি। এক একটি পণ্যের মূল্যস্ফীতি ৬ থেকে ১৫, ২০ ও ৩০ শতাংশ পর্যন্ত হয়েছে। তারপরও খাদ্য মুদ্রাস্ফীতি কীভাবে স্থিতিশীল? আমরা বাজারে সেটা লক্ষ্য করি না। কিছু কিছু গুরুত্বপূর্ণ পণ্য চাল, ডাল, তেল, পিয়াজের মূল্য যদি আলাদাভাবে দেখি, তাহলে দাম দ্বিগুণ থেকে তিনগুণ হয়ে যায়। তারপরও দেখি মূল্যস্ফীতি স্থিতিশীল।
গবেষণায় দেখা গেছে, বাংলাদেশে বছরে গড়ে মাথাপিছু আয় বেড়েছে ৭.৮৬ শতাংশ । কিন্তু ২০১০ থেকে ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রকৃত মাথাপিছু আয় বৃদ্ধি পেয়েছে মাত্র ০.১৬ শতাংশ। অন্যদিকে খাদ্য ব্যয় বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে ওই সময়ে আয় ৫৩ শতাংশ কমে ৪৬ শতাংশ হয়েছে। এখানে দেখা গেছে, আয় বাড়লেও প্রকৃত আয় কমে যাওয়ায় মানুষের ক্রয় ক্ষমতাও কমেছে।
ফাহমিদা বলেন, দেশের তিন ধরনের চালের (মিনিকেট, পাইজাম ও মোটাচাল) দাম বিবেচনায় নিয়ে দেখা গেছে, চালের বাজার ভিয়েতনাম ও থাইল্যান্ডের তুলনায় অনেক ঊর্ধ্বমুখী। একইভাবে ময়দা, চিনি, ভোজ্য তেল, পিয়াজ, পাউডার মিল্ক, ডিম ও মাংসের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক বেশি ফারাক। অসম্ভবভাবে বেড়েছে দাম। কিন্তু আন্তর্জাতিক বাজারের মূল্যবৃদ্ধির কারণই একমাত্র দায় নয়। বিপরীতে আমরা দেখতে পাই, সিগারেটের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের তুলনায় অনেক কম। স্বাস্থ্যহানিকর পণ্য হিসেবে কর বৃদ্ধি করে করের আওতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে। যদিও এখন বেশি আছে, কিন্তু আরও বৃদ্ধির সুযোগ রয়েছে।