তেল-চিনি-ডালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের কিছুই করার নেই - বাণিজ্যমন্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৯:১৯ পিএম, ১৮ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৫২ এএম, ১৪ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
আন্তর্জাতিক বাজারে দাম বৃদ্ধির কারণেই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, তেল, চিনি ও ডালের দাম বৃদ্ধির বিষয়ে সরকারের কিছুই করার নেই। দাম কমাতে হলে সাবসিডি দিতে হবে।
আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় রংপুর সার্কিট হাউসে রোটারি ক্লাব অব উত্তরা ও অপু মুনশি মেমোরিয়াল ট্রাস্টের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
নিত্যপণ্যের বাজারে মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে তিনি আরো বলেন, ‘চাল আমাদের মন্ত্রণালয়ে নয়, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের কন্ট্রোলে। আমাদের কন্ট্রোলে তেল, চিনি, ডাল ও পেঁয়াজ। আমরা সবাই জানি, যে তেলের দাম ৮০ থেকে ৯০ টাকা ছিল, তা এখন ১৬৮ টাকা হয়েছে। এর কারণ আমাদের দেশে ২০ থেকে ২৫ লাখ টন সয়াবিন তেলের প্রয়োজন, যার ৯০ ভাগ আসে বাইরের দেশ থেকে। আর আমাদের নিজেদের উৎস থেকে আসে ১০ ভাগ।’
মন্ত্রী বলেন, তেলের দাম মূলত ওঠানামা করে আন্তর্জাতিক বাজারে কি দাম হয় সেই হিসেবে। দুই বছর আগে যার টন ছিল ৬০০ থেকে ৭০০ ডলার, তা এখন ১,২০০ ডলার পার হয়ে গেছে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে ব্যবসায়ীরা নিয়ে আসেন, সেটা বিক্রি করেন। আমাদের মন্ত্রণালয় থেকে যেটি করা হয় তা হলো- বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটা ট্যারিফ কমিশন আছে। সেখানে একজন সিনিয়র এডিশনাল সেক্রেটারির নেতৃত্বে বেশ কয়েকজন লোক আছেন, যারা আন্তর্জাতিক বাজারে এক মাসের বাজার দাম ধরেন। তার সাথে কত ট্যাক্স আছে, কত কেরিং হবে সব কিছু ধরে প্রফিট কি হবে তা ক্যালকুলেশন করে একটা দাম নির্ধারণ করেন। এছাড়া কন্টেইনারের ভাড়া বেড়েছে। সেটাও তেলের দামে প্রভাব বিস্তার করেছে। তেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারের ওপর ডিপেন্ডেবল বলেই তেলের দাম বৃদ্ধি করে ফিক্স করতে হয়েছে। একইভাবে চিনি ও ডালের দামও বৃদ্ধি করতে হয়েছে।
টিপু মুনশি বলেন, অনেক সময় অসাধু ব্যবসায়ীরা সিন্ডিকেট করে নির্ধারণ করে দেয়া দরের চেয়েও দাম বেশি নেয়। সেদিকে আমাদের খেয়াল আছে। যেখানেই কেউ দাম বাড়াবে সেখানেই ডিসিদের মাধ্যমে ব্যবস্থা নেয়া হবে। এছাড়া দাম বৃদ্ধির ব্যাপারে এই মুহূর্তে আমাদের করার কিছুই নেই। যদি কমাতে হয় তাহলে সাবসিডি দিতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, এবার রমজান মাসে এক কোটি মানুষকে টিসিবির মাধ্যমে তেল, চাল, ডাল ও পেঁয়াজ সরবরাহ করা হবে।
৫০ শয্যার হাসপাতালের পাশাপাশি বৃদ্ধাশ্রম এবং নার্সিং ইনস্টিটিউট করারও পরিকল্পনার কথা জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, নির্মাণাধীন ক্যান্সার হাসপাতালটি হবে অলাভজনক। এখানে নারীদের ক্যান্সার রোগের চিকিৎসা অগ্রাধিকার পাবে। ইতিমধ্যেই পিলার উঠে গেছে। আগামী মাস থেকেই বিল্ডিং দৃশ্যমান হতে থাকবে। একটি সুন্দর পরিচ্ছন্ন এবং মানসম্মত ক্যান্সার হাসপাতাল গড়ে তোলা হবে। যেখানে প্রান্তিক মানুষ, বিশেষ করে নারীদের অগ্রাধিকার দেয়া হবে। কারণ প্রান্তিক জনপদের নারীরা এখনো পরীক্ষা করাতে আগ্রহ দেখান না। তাদের জন্য ভ্রাম্যমাণ পদ্ধতিতে পরীক্ষার ব্যবস্থার কথাও জানান মন্ত্রী।
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন ডিসি আসিব আহসান, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (অপরাধ) আবু মারুফ হোসেন, রোটারি ক্লাব অব উত্তরার প্রেসিডেন্ট ও এপির বাংলাদেশ ব্যুরো চিফ জুলহাস আলম প্রমুখ।