দেশে ১১ ভাগ মানুষের থ্যালাসেমিয়া, বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষার আহ্বান
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৪:২৬ পিএম, ৮ জুলাই,সোমবার,২০২৪ | আপডেট: ০১:৫৫ এএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
দেশে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশ মানুষই থ্যালাসেমিয়ার বাহক বলে জানিয়েছে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস)। এর মধ্যে রংপুর বিভাগে শনাক্তের হার সবচেয়ে বেশি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। আর থ্যালাসেমিয়া বাহকের মধ্যে বিয়ে বন্ধ করা গেলে এই রোগ নির্মূল সম্ভব উল্লেখ করে বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষার আহ্বান জানিয়েছেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার।
রবিবার (৭ জুন) রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বিবিএস-এর অডিটরিয়ামে ‘ন্যাশনাল থ্যালাসেমিয়া সার্ভে-২০২৪ প্রতিবেদন’ উপস্থাপন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য উঠে আসে।
প্রতিবেদন প্রকাশ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার। বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন এবং স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিবিএসের মহাপরিচালক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান। প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা লিজেন শাহ নঈম। বক্তব্য দেন বিবিএসের উপমহাপরিচালক ওবায়দুল ইসলাম।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ১৪ থেকে ৩৫ বছর বয়সী বিবাহিত ও অবিবাহিত জনগোষ্ঠীর মধ্যে এই জরিপ চালানো হয়। মোট ৮ হাজার ৬৮০ জনের ওপর এই জরিপ চালানো হয়। এদের মধ্যে ১১ দশমিক ৪৫ শতাংশই থ্যালাসেমিয়ার বাহক হিসেবে শনাক্ত হয়েছেন। আর আক্রান্তদের মধ্যে নারী ১১ দশমিক ২ শতাংশ এবং পুরুষের হার ১১ দশমিক ৯ শতাংশ।
বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, থ্যালাসেমিয়া বাহকের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি রংপুরে। বিভাগটিতে শনাক্তের হার ২৭ দশমিক ৭ শতাংশ। আর দ্বিতীয় স্থানে আছে রাজশাহী, এই বিভাগে শনাক্তের হার ১১ দশমিক ৩ শতাংশ, তৃতীয় স্থানে থাকা চট্টগ্রামে শনাক্তের ১১ দশমিক ২ শতাংশ। এছাড়া, ময়মনসিংহে ৯ দশমিক ৮ শতাংশ, খুলনায় ৮ দশমিক ৬ শতাংশ, ঢাকায় ৮ দশমিক ৬ শতাংশ, বরিশালে ৭ দশমিক ৩ শতাংশ এবং সিলেটে সবচেয়ে কম ৪ দশমিক ৮ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, দেশে হ্যাপাটাইটিস ‘বি’ ভাইরাসে আক্রান্তের হার ১ দশমিক ২ শতাংশ এবং হ্যাপাটাইটিস ‘সি’ ভাইরাসে আক্রান্তের হার ০ দশমিক ৫ শতাংশ।
অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘বিয়ের আগে রক্ত পরীক্ষার প্রচলন চালু করতে পারলে এ রোগে আক্রান্তের হার কমে যাবে। বিবিএস এতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে একটি সার্ভে করেছে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর থ্যালাসেমিয়ার এ সার্ভের মাধ্যমে রোগটি প্রতিহত করতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে পারবে।’
এসময় স্বাস্থ্য বিভাগের অতিরিক্ত সচিব মুহাম্মদ ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, ‘আমাদের চেষ্টার ত্রুটি নেই। আমরা সরকারি-বেসরকারিভাবে জেলা পর্যায়ে সব জায়গাতেই সচেতন থাকার চেষ্টা করি। এছাড়া, সমাজ কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে এ রোগের জন্য সহায়তা দেওয়া হয়।’
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, ‘থ্যালাসেমিয়া রোগ নির্মূল করা সম্ভব। বাহক টু বাহক বিবাহ বন্ধ করা গেলে এ রোগ আস্তে আস্তে নির্মূল হবে। এজন্য একটা নীতিমালা থাকা দরকার। বিবিএসের রিপোর্টের মাধ্যমে এ রোগটি নির্মূলে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিতে পারবে।’