কোরবানির ঈদকে ঘিরে স্বপ্নপূরণের আশা খামারিদের
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ১২:৩৪ পিএম, ২০ মে,সোমবার,২০২৪ | আপডেট: ১০:১০ পিএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণ ও বিশুদ্ধ মাংস উৎপাদনে ব্যস্ত সময় পার করছেন ফরিদপুরের সদরপুরের খামারিরা। সম্পূর্ণ দেশীয় খাবারের ওপর ভিত্তি করে এসব খামারে কোরবানির পশু লালনপালন করা হচ্ছে। বাজারমূল্য ঠিক থাকলে এবারও লাভের মাধ্যমে তাদের স্বপ্ন পূরণের আশা খামারিদের।
দেশের দক্ষিণাঞ্চল তথা ফরিদপুরের গরুর চাহিদা রয়েছে সারা দেশজুড়ে। তারই ধারাবাহিকতায় ফরিদপুর জেলার সদরপুর উপজেলার ৯০৭টি খামারে ছোট বড় মাঝারি আকারের হোলস্টেইন ফ্রিজিয়ান, জার্সি, ব্রাউই সুইট, নওরেজিয়ান রেড, লাল, ব্রাহামা এবং সাদা হোলস্টেইন ও দেশিসহ বিভিন্ন জাতের প্রায় ২৪৩০টি ষাঁড়, ১৩৫টি গাভি, ১০৮৬০টি ছাগল ও ১৫টি ভেড়াসহ মোট ১৩৪৪০টি পশু কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা পূরণ করেও রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি হবে।
সরেজমিনে কয়েকজন খামারিদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, গো খাদ্যের দাম কয়েক দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় লাভের আশঙ্কা কম রয়েছে। তবে অবৈধভাবে ভারতীয় গরু বাজারে না আসলে হয়ত তাদের পালিত পশু বিক্রি করে কিছুটা লাভের মুখ দেখতে পারবেন তারা। কোরবানির পশু খাদ্য তালিকায় রয়েছে খৈল, ভুষি, খড়, সবুজ ঘাস, ভুট্টা গাছের সাইলেন্সার, ছোলা ও প্রাকৃতিক খাবার। প্রাকৃতিক উপায়ে সম্পূর্ণ স্টেরয়েড ও ইনজেকশনমুক্ত বিশুদ্ধ গো-খাদ্যের মাধ্যমে বড় করে কোরবানির জন্য প্রস্তুত করছেন বলে জানিয়েছেন খামারিরা।
চরব্রাহ্মন্দী গ্রামের হাওলাদার ডেইরি ফার্মের মালিক মো. ফারুক হাওলাদার জানান, প্রাকৃতিকভাবে গরু বড় করে আমরা সুনামের সঙ্গে দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর যাবৎ বিক্রি করে আসছি। এই বছর আমি প্রায় ৩ একর জমিতে উন্নত জাতের কাঁচা ঘাসের চাষ করেছি। উন্নত জাতের অস্ট্রেলিয়ান, জার্সি, ফ্রিজিয়ান,ব্রাহামা সহ বিভিন্ন প্রজাতির প্রায় ১০০টি কোরবানির উপযুক্ত ষাঁড় গরু পালন করছি যার প্রতিটি গরু সর্বনিম্ন ২ লাখ থেকে সর্বোচ্চ ৫ লাখ টাকা পর্যন্ত মূল্য রয়েছে।
তিনি আরও জানান, আমার খামারে প্রতিদিন নানান জায়গা থেকে ক্রেতারা কোরবানির পশু ক্রয়ের জন্য দেখতে আসছেন। এ সমস্ত গরু ঢাকায় বেশ চাহিদা রয়েছে। তবে খামারে এসেও অনেকেই তাদের পছন্দ মত কোরবানির পশু বাজেটের মধ্যেই কিনতে পারবে।
চরডুবাইল গ্রামের খামারি শাহজাহান মীর জানান, আমি এই বছর ৩টি গরু পালন করছি। প্রতি বছর ৫০-৬০টা গরু পালন করলেও এবার স্টক বাছুরের মূল্য ও খাদ্য মূল্য বেশি হওয়ায় গরু পালন কমিয়ে দিয়েছি।
চন্দ্রপাড়া সরদার ডাঙ্গী গ্রামের খামারি আবুতালেব সরদার জানান, ভালোজাত ও উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে কোরবানির ষাঁড় পালন করলে লাভের আশা করা যায়।
ঢেউখালী ইউনিয়নের লাইভ স্টক সার্ভিস প্রোভাইডার (এলএসপি) কোহিনূর আক্তার বলেন, আমার ইউনিয়নে প্রায় ১৮০০টির মতো পশু মোটাতাজাকরণ ও কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হচ্ছে এবং সার্বক্ষণিক তাদের দেখাশোনা ও খামারিদের পরামর্শ দিয়ে আসছি।
সদরপুর উপজেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. এ কে এম আসজাদ জানান, আমিসহ অফিসের সকল কর্মকর্তা, কর্মচারী ও বিভিন্ন ইউনিয়নের এলএসপিসহ সার্বক্ষণিক খামারিদের পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে আসছি। প্রায় খামারে গিয়ে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে নিয়মিত যে গরু ও ছাগলের কোনো সমস্যা আছে কিনা।