ডিজির এপিএস পরিচয়ে প্রতারণা, চক্রের হোতা গ্রেফতার
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৩:৪৯ পিএম, ৪ মে,শনিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৪:১৬ পিএম, ১৯ ডিসেম্বর,বৃহস্পতিবার,২০২৪
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিজির এপিএস পরিচয়ে চাকরি দেওয়ার নাম করে কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়া চক্রের মূল হোতা শিবলু লোমান চৌধুরীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
লালমনিরহাট সদর থানা পুলিশ গত বুধবার (১ মে) রাতে ঢাকার উত্তরা থানা এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই প্রতারককে গ্রেফতার করে। পরে তাকে ঢাকা থেকে লালমনিরহাটে এনে শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
লালমনিরহাট সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
প্রতারক চক্রের প্রধান ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ডিজি’র এপিএস সেজে চাকুরির আশ্বাস দেওয়া, ভুয়া নিয়োগ পরীক্ষা গ্রহণ ও ভুয়া নিয়োগপত্র প্রদান করে কিছু ভুক্তভোগীর লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
শিবলু লোমান চৌধুরী নামে ওই ব্যক্তি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ এলাকার বাসিন্দা। এ বিষয়ে ভুক্তভোগীদের একজন একটি প্রতারণার মামলা করেন।
জানা গেছে, গ্রেফতার প্রতারক শিবলু লোমান চৌধুরী নিজেকে ঢাকায় অবস্থিত কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের মহাপরিচালকের এপিএস পরিচয় দিয়ে চাকুরির প্রলোভনের ফাঁদ পাতে। তার নেতৃত্বে একটি চক্র সুকৌশলে লালমনিরহাটসহ বিভিন্ন এলাকায় নেটওয়ার্ক তৈরি করে। চাকরি দেওয়ার কথা বলে ভুক্তভোগীদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয় ওই প্রতারক চক্র। ওই প্রতারক চক্রের নির্দেশনা মোতাবেক ভুক্তভোগীরা নিয়োগ পরীক্ষা দেওয়ার জন্য ঢাকাতে গিয়ে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। পরে চাকরিতে যোগদানের জন্য তাদেরকে নিয়োগপত্রও দেওয়া হয়। কিন্তু যোগদানের দিন ওই প্রতারক চক্রের কাছে নিয়োগপত্র নিয়ে গেলে যোগদানের ক্ষেত্রে তারা গড়িমসি করে ভুক্তভোগীদের হয়রানি করে। পরে হয়রানির শিকার হওয়া ভুক্তভোগীদের একজন মিজানুর রহমান শিবলুকে প্রধান আসামি করে মোট ৬ জনের নাম উল্লেখ করে একটি প্রতারণার মামলা করেন। ওই প্রতারণা মামলার অন্যান্য আসামিরা হলেন— রাজবাড়ী জেলার রফিকুল ইসলাম আফজাল (৪৩), ঢাকার বনশ্রী এলাকার কামাল হোসেন (৪০), নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানার বাপ্পী (৩৫), রংপুর জেলার পীরগাছা থানার আলমগীর হোসেন (৪০) এবং দলিলুর রহমান (৬০)। অভিযুক্তদের মধ্যে দলিলুর রহমানের পরিচয় অজ্ঞাত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
ওই অভিযোগের প্রেক্ষিতে লালমনিরহাট থানা পুলিশ তথ্য প্রযুক্তির সাহায্যে গত বুধবার রাতে ঢাকার উত্তরা থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে। ওই অভিযানে প্রতারক ওই ব্যক্তিকে গ্রেফতারে সক্ষম হয় পুলিশের আভিযানিক দল। পরে তাকে ঢাকা থেকে লালমনিরহাট এনে শুক্রবার (৩ মে) বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী মিজানুর রহমান জানান, তিনি গরু বিক্রি ও জমি বন্ধকের টাকা ওই প্রতারকদের দিয়েছেন। এখন তাদের আবাদি নিজস্ব কোনো জমি নেই তাই অন্যের জমি বর্গা নিয়ে চাষ করে জীবন অতিবাহিত করছেন।
ওসি ওমর ফারুক জানান, বিভিন্ন ব্যক্তিকে চাকরি দেওয়ার কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে প্রতারণা করার অভিযোগে শিবলু নামে এক প্রতারককে গ্রেফতার করা হয়েছে। শুক্রবার বিকেলে তাকে জেল হাজতে পাঠানো হয়। গ্রেফতার ব্যক্তি নিজেকে সাবেক সেনা সদস্য বলে দাবি করেছে।