মেয়েদের ছবি এডিট করে ব্ল্যাকমেইল করতেন তারা
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:০৯ পিএম, ২৮ এপ্রিল,রবিবার,২০২৪ | আপডেট: ০২:৫৩ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
স্কুল-কলেজ পড়ুয়া মেয়েদের আইডি থেকে ছবি সংগ্রহ করে সেগুলো অশ্লীলভাবে এডিট করে ফেসবুক পেইজ ও গ্রুপে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে মোটা অংঙ্কের টাকাসহ নানাভাবে ব্ল্যাকমেইলিং করতেন- এমন একটি চক্রের ৪ সদস্যকে গ্রেফতার করেছে পাবনা জেলা গোয়েন্দা পুলিশ-ডিবি।
এসময় তাদের কাজ থেকে এই কাজে ব্যবহৃত কম্পিউটার ও বেশ কয়েকটি মোবাইল সেট উদ্ধার করেছে পুলিশ।
রোববার (২৮ এপ্রিল) দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয়ের অডিটরিয়ামে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পাবনা পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী।
গ্রেফতারকৃতরা হলেন- পাবনা সদর উপজেলার নাজিরপুর গ্রামের মহিউল ইসলামের ছেলে ইসতিয়াক আহম্মেদ রঙ্গন (১৮), বিলবাদুরিয়া এলাকার ইয়াকুব আলীর ছেলে শাহরিয়ার কবির আকাশ (১৭) , পাবনা পৌর এলাকার রাধানগরের শাহিন মন্ডলের ছেলে ইমন আহাম্মেদ (২০) এবং শালগাড়ীয়া এলাকার বকুল হোসেনের ছেলে হাসিবুল হাসান তন্ময় (২২)।
পুলিশ সুপার জানান, ফেসবুকে হয়রানির শিকার হয়ে একাধিক স্কুল-কলেজ পড়ুয়া ভুক্তভোগীর পরিবার পাবনা পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেন যে, তাদের মেয়েদের ছবি তাদের ফেসবুক আইডি থেকে সংগ্রহ করে ‘এক্সপোজার অ্যান্ড কনফেশন সেন্টার পাবনা-ইসিসিপি’, ‘দি বস’, ‘দি রোস্ট হাউস’, ‘সত্য কথন ও ইসলাম’, ‘পাবনার অজানা তথ্য’ সহ অন্যান্য ফেসুবক পেইজের মাধ্যমে ছবিগুলো এডিট করে বিভিন্ন আপত্তিকর ছবি পোস্ট করে আসছিল। পরবর্তীতে ফেসবুক পেইজ থেকে উক্ত ছবিগুলো ডিলিট করার জন্য পেইজ এডমিনরা ভুক্তভোগীর কাছ থেকে টাকা দাবি করে আসছিল। তাদের দাবি মতো টাকা না দিলে আরো আপত্তিকর ছবি পোষ্ট করার হুমকি দিতো। এমন অভিযোগের পরই পুলিশ অভিযানে নামে। এবং অভিযানের এক পর্যায়ে তথ্য প্রযুক্তির সহায়তায় ‘এক্সপোজার অ্যান্ড কনফেশন সেন্টার পাবনা-ইসিসিপি’ এর এডমিন ইসতিয়াক আহম্মেদ রঙ্গন, ইমন আহাম্মেদ ও শাহরিয়ার কবির আকাশ এবং সত্য কথন ও ইসলাম এবং ‘দি বস’ পেইজের এডমিন হাসিবুল হাসান তন্ময়কে গ্রেফতার করা হয়।
তিনি আরও জানান, পাবনা জেলায় এসব সাইবার ক্রিমিনালদের সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়ে বহু ভুক্তভোগী সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন হয়ে আত্মহত্যার পথ বেছে নিচ্ছে, অনেকের সংসার ভেঙে যাচ্ছে। বিষয়টির গুরুত্ব অনুধাবন করে বেশ কিছুদিন ধরেই পাবনা ডিবি পুলিশ কাজ করে যাচ্ছিল। এসব ক্রিমিনাল গণপ্রযুক্তি বিদ্যায় অত্যাধিক পারদর্শী এবং উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহারে অভ্যস্ত। আসামিদের বাহিরে আরও বেশ কিছু গ্রুপের এডমিন রয়েছে যারা প্রতিনিয়ত সাইবার বুলিং করে যাচ্ছে। তারা সকলেই আমাদের নজদারিতে আছে। যে বা যারাই সাইবার ক্রাইম বা সাইবার বুলিংয়ের জড়িত থাকুক না কেন তাদের সকলের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অর্থ ও প্রশাসন) মাসুদ আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম এন্ড অপস্) জিয়াউর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) ডি,এম, হাসিবুল বেনজীর, সহকারী পুলিশ সুপার (এসএএফ) আরজুমা আকতার, পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন আলী ও পাবনা জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি মো. এমরান হোসেন তুহিন।