অগ্রণী ব্যাংকের সোয়া ১০ কোটি টাকা আত্মসাৎ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:২৮ পিএম, ২৭ এপ্রিল,শনিবার,২০২৪ | আপডেট: ০৭:২৫ এএম, ২২ ডিসেম্বর,রবিবার,২০২৪
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলায় অগ্রণী ব্যাংকের সোয়া ১০ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় গ্রেপ্তার শাখা ব্যবস্থাপকসহ তিন কর্মকর্তাকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। আজ শনিবার দুপুরে অগ্রণী ব্যাংক পাবনা অঞ্চলের উপ-মহাব্যবস্থাপক (জিএম) রেজাউল শরীফ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে, টাকা আত্মসাতের ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাতে শাখা ব্যবস্থাপকসহ তিন কর্মকর্তাকে আটক করা হয়। ব্যাংক কর্তৃপক্ষের লিখিত অভিযোগের পর ওই রাতে তাদের আটক করে পুলিশ।
বরখাস্ত হওয়া ব্যাংক কর্মকর্তারা হলেন- কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক (সিনিয়র প্রিন্সিপাল অফিসার) হারুন বিন সালাম, সিনিয়র অফিসার আবু জাফর ও ক্যাশ অফিসার সুব্রত চক্রবর্তী।
জানা গেছে, আটকের পর শুক্রবার তাদের আদালতে পাঠানো হয়। পাবনা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আনোয়ার হোসেন সাগর ওই ৩ ব্যাংক কর্মকর্তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করে আদালতের জিআরও এএসআই মাহবুবুর রহমান সমকালকে বলেন, তাদের পরিবারের পক্ষ থেকে কেউ জামিন আবেদন করেনি। ফলে আদালত তাদের জেলা কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
ব্যাংক বন্ধ থাকায় টাকা গরমিলের বিষয়ে তেমন কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ তদন্ত করলে বিষয়টি বেরিয়ে আসবে।
তবে এলাকায় গুঞ্জন উঠেছে, গোপনে ব্যবসায়ীদের দাদন দিতেন ওই তিন কর্মকর্তা। সময়মতো তা পরিশোধ না করায় ফেঁসে যান সাময়িক বরখাস্ত হওয়া ব্যাংক কর্মকর্তারা। এমনকি কোনো কোনো ব্যবসায়ীকে তারা কোটি কোটি টাকা সিসি লোনও দিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তি জানান, গ্রেপ্তার ব্যাংক কর্মকর্তারা ব্যাংকের সংরক্ষিত টাকা থেকে গোপনে স্থানীয় ভূমি ব্যবসায়ীদের ডকুমেন্ট বা নথি ছাড়াই লাখ লাখ টাকা দেন। বিনিময়ে তারা কমিশন বা শেয়ারের ভাগ পান।
সাঁথিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আনোয়ার হোসেন জানান, বৃহস্পতিবার অগ্রণী ব্যাংকের রাজশাহী কার্যালয়ের ৫ সদস্যের একটি অডিট দল কাশিনাথপুর শাখায় আসে। তারা ব্যাংকের ১০ কোটি ১৩ লাখ ৬২ হাজার ৩৭৮ টাকার হিসেবে গড়মিল পান। এ ব্যাপারে ওই শাখার ব্যবস্থাপকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি। অগ্রণী ব্যাংকের পাবনা আঞ্চলিক শাখার উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) রেজাউল শরীফ কাশিনাথপুর শাখার ব্যবস্থাপক হারুন বিন সালাম, কর্মকর্তা আবু জাফর ও কর্মকর্তা (ক্যাশ) সুব্রত চক্রবর্তীকে অভিযুক্ত করে সাঁথিয়া থানায় লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগের পর রাতে ওই তিন কর্মকর্তাকে আটক করে থানায় আনা হয়।
ওসি আরও জানান, শুক্রবার দুপুর আড়াইটার দিকে তিন ব্যাংক কর্মকর্তাদের ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। এ মামলায় আইনি পদক্ষেপের দায়িত্ব মূলত দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক)। এ সংক্রান্ত নথিপত্র দুদকে পাঠানো হবে।