ডাক্তার ডাকতে গিয়ে স্বাস্থ্যকর্মীর নির্যাতনের শিকার রোগীর বৃদ্ধা স্ত্রী
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০১:৪০ পিএম, ৩ এপ্রিল,
বুধবার,২০২৪ | আপডেট: ০৭:৫০ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
সাতক্ষীরার কলারোয়ায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অসুস্থ স্বামীর জন্য ডাক্তার ডাকতে গিয়ে স্বাস্থ্য সহকারীর হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছেন সুফিয়া খাতুন নামের এক বৃদ্ধা। তিনি উপজেলার আলাইপুর গ্রামের শেখ আবু তালেবের স্ত্রী। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় শুরু হয়।
জানা গেছে, অসুস্থতার কারণে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি কয়লা ইউনিয়নের আলাইপুর গ্রামের শেখ আবু তালেব। সোমবার (০১ এপ্রিল) রাতে আবু তালেবের শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তার স্ত্রী সুফিয়া জরুরি বিভাগে গিয়ে কর্তব্যরত চিকিৎসককে জানালেও তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। পরে মঙ্গলবার সকাল ৮টার দিকে তিনি আবারও জরুরি বিভাগে গেলে মেডিকেল অফিসার ডা. তানভীর জাহানের সামনেই স্বাস্থ্য সহকারী ফরহাদ হোসেন তাকে মারধর করেন। একপর্যায়ে তার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে মুখে আঘাত করেন। এতে সুফিয়া রক্তাক্ত হন। পর ঘাড় ধাক্কা দিয়ে তাকে বের করে দেওয়া হয়।
ওই কক্ষে থাকা সিসি ক্যামেরার ফুটেছে দেখা যায়, কথা বলার এক পর্যায়ে সুফিয়া খাতুনের ঘাড় ধাক্কা ও হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে তার মুখে আঘাত করেন মেডিকেল অ্যাসিস্ট্যান্ট ফরহাদ হোসেন। পরে ওয়ার্ড বয় শরিফ হোসেন দৌড়ে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন এবং সুফিয়া খাতুনকে জরুরি বিভাগ থেকে বাইরে পাঠিয়ে দেন।
ভুক্তভোগী সুফিয়া খাতুন বলেন, ‘আমার স্বামী দীর্ঘদিন অসুস্থ। আমি অর্থের অভাবে ভালো ডাক্তার দেখাতে পারছি না। সোমবার রাতে স্বামীর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে আমি প্রথমে নার্সদের কাছে যাই। তারা আমাকে নিচে ডাক্তারের কাছে যেতে বলেন। আমি নিচে গিয়ে ডাক্তারদের বললে তারা বিষয়টি গুরুত্ব দেননি। পরের দিন সকালে আবারও আমি ডাক্তারের কাছে যাই। সেখান থেকে আমাকে বলেন, আপনার রোগী এখন নিয়ে চলে যান। কথা বলতে বলতে ফরহাদ হোসেন আমার ঘাড় ধাক্কা দিয়ে বের করে দিচ্ছিল। আমি তাকে বলি আমার গায়ে হাত দিচ্ছেন কেন? পরে হঠাৎ তার হাতে থাকা মোবাইল ফোন দিয়ে আমার মুখে আঘাত করেন।’
এ বিষয়ে উপজেলা হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘আমি বিষয়টি জেনেছি। এটি দুঃখজনক ঘটনা। আমরা তদন্ত করে ব্যবস্থা নেব।’
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহবুবুর রহমান জানান, ‘বিষয়টি আমরা জেনেছি এবং সিসিটিভি ফুটেজ দেখেছি। আমরা দ্রুত একটি তদন্ত কমিটি করে দোষীকে অবশ্যই শাস্তির আওতায় নিয়ে আসব।’
কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী সুফিয়া। আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।