সিলেটে দুর্ঘটনায় ৬ জনের মৃত্যুর পরের দিন স্থানীয়দের মহাসড়ক অবরোধ
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০২:২৫ পিএম, ১৯ মার্চ,মঙ্গলবার,২০২৪ | আপডেট: ১১:১১ এএম, ২৩ ডিসেম্বর,সোমবার,২০২৪
সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলায় পিকআপ ও লেগুনার মুখোমুখি সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হওয়ার ঘটনায় তিন দফা দাবিতে সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়ক অবরোধ করেছেন স্থানীয় লোকজন। আজ মঙ্গলবার সকাল সোয়া ১০টা থেকে তাঁরা জৈন্তাপুরের ঘাটেরচটি এলাকায় মহাসড়ক অবরোধ করলে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়েছে। যানজটে আটকে দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন যাত্রীরা। বেলা পৌনে একটার দিকে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত সেখানে অবরোধ চলছিল।
অবরোধকারীদের তিন দাবি হলো গতকাল সোমবার সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছয়জনের পরিবারকে পরিবহন শ্রমিকনেতাদের সমবেদনা জানানো, সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক মহাসড়কে চোরাচালানের পণ্য পরিবহন বন্ধ ও মহাসড়কে লাইসেন্সবিহীন কোনো চালককে যানবাহন চালাতে না দেওয়া।
ঘাটেরচটি এলাকার বাসিন্দা শেখ রাদেক অবরোধকারীদের একজন। তিনি কাফনের কাপড় গায়ে আন্দোলন করছেন। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, মহাসড়কটিতে কয়েক দিন পরপর প্রাণহানির ঘটনা ঘটছে। এরপরও কেউ সচেতন হচ্ছেন না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তাঁরা মহাসড়ক অবরোধ করে রাখবেন। তবে রোগী পরিবহনকারী যানবাহন ও বিদেশগামী যাত্রীদের তাঁরা যেতে দিচ্ছেন।
অবরোধের কারণে যানজটে আটকে দুর্ভোগে পড়েছেন বহু যাত্রী। তাঁদের একজন কানাইঘাটের বাসিন্দা সাহেদ আহমদ। বেলা পৌনে ১১টার দিকে যানজটে আটকা অবস্থায় তাঁর সঙ্গে কথা হয়। তিনি বলেন, সকাল নয়টার দিকে বাড়ি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে বের হয়েছিলেন। ১০টার দিকে জৈন্তাপুরের ঘাটেরচটি এলাকায় পৌঁছালে অবরোধে আটকে পড়েন। এর পর থেকে সেখানেই অবস্থান করছেন
জৈন্তাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তাজুল ইসলাম বেলা পৌনে ১১টার দিকে মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সড়ক অবরোধের খবর পেয়ে তিনি থানা থেকে রওনা দিয়েছেন। ঘটনাস্থলে পৌঁছে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করবেন।
সিলেট-তামাবিল আঞ্চলিক সড়কের দরবস্ত পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের সামনে গতকাল সোমবার পিকআপ ভ্যানের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষে ছয়জন নিহত হয়েছেন। নিহত ছয়জন হলেন জৈন্তাপুর উপজেলার চিকনাগুল ইউনিয়নের পশ্চিম ঠাকুরের মাটি গ্রামের সন্তোষ পাত্রের স্ত্রী মঙ্গলী পাত্র (৫০), পুত্রবধূ সুচিতা পাত্র (৩০), নাতনি বিজলী পাত্র (৬ মাস), একই গ্রামের নন্দ পাত্রের স্ত্রী সাবিত্রী পাত্র (৩৫), সুবেন্দ্র পাত্রের মেয়ে ঋতু পাত্র (৮) ও নৃপেন্দ্র পাত্রের স্ত্রী শ্যামলা পাত্র (৫৫)।
স্থানীয় লোকজন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জৈন্তাপুরের চিকনাগুল থেকে পাঁচটি লেগুনায় করে পারিবারিক অনুষ্ঠানে মোকামপুঞ্জির দিকে যাচ্ছিলেন যাত্রীরা। অন্যদিকে জৈন্তাপুরের দরবস্ত বাজার থেকে গরু কিনে হরিপুরের দিকে যাচ্ছিল একটি পিকআপ ভ্যান। দুপুর পৌনে ১২টার দিকে দুটি গাড়ি দরবস্ত এলাকার পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির কার্যালয়ের সামনে পৌঁছালে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এ সময় লেগুনাটির একদিকের অংশ দুমড়েমুচড়ে যায়। এতে লেগুনায় থাকা ছয় যাত্রী নিহত ও পাঁচ যাত্রী আহত হন।