কাশিয়ানিতে স্কুলের পিকনিক বাস দুর্ঘটনায় নিহত ৩ আহত ৫০
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:০১ এএম, ১০ ফেব্রুয়ারী,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ০৩:২২ এএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
গোপালগঞ্জের কাশিয়ানিতে যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের পিকনিকের উল্টে তিনজন নিহত ও অন্তত ৫০জন আহত হয়েছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার (০৯ ফেব্রুয়ারি) রাত ৮টার দিকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে ফেরার পথে কাশিয়ানি উপজেলার উপজেলায় একটি ফিড মিলের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন বাকড়ী বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ল্যাব সহকারী সুদীপ্ত বিশ্বাস (৩৫), বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য বিদ্যুৎ কুমার বিশ্বাস (৪৫) ও অজ্ঞাত গাড়িচালক।
জানা গেছে, দুর্ঘটনায় আহত অন্তত ২৭ জনকে যশোর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে আহতদের নামপরিচয় জানা যায়নি। এছাড়াও ৪১ জনকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।
আহতদের মধ্যে রাতে পাঁচজনের নাম পরিচয় জানা গেছে। তারা হলেন, নিরঞ্জন বিশ্বাস, সীমান্ত কুমার, কর্মচারী বাগচী, আনোয়ার হোসেন ও ওমর বিশ্বাস।
বাকড়ী বহুমুখী বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বিশ্বজিৎ কুমার পাল জানান, তারা বৃহস্পতিবার সকালে তিনটি বাসে করে ১৫০ জন শিক্ষার্থী ও অবিভাবকদের নিয়ে টুঙ্গিপাড়ায় পিকনিকে যান। শিক্ষার্থীদের মধ্যে বেশির ভাগই নবম ও দশম শ্রেণির ছাত্র। ফেরার পথে রাতে তাদের বহনকারী একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনাকবলিত হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, পিকনিকের একটি বাসকে ওভারটেক করতে গিয়ে আরেকটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারালে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
কাশিয়ানী থানার এসআই দেওয়ান সাদেকুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন বাসচালকের লাশ তাদের হেফাজতে রয়েছে।
পুলিশ ও ফায়ার সার্ভিস সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে টুঙ্গিপাড়া থেকে পিকনিক শেষে যশোরে ফিরছিল তিনটি বাস। পথিমধ্যে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি বাস রাস্তার পাশে গাছের সাথে ধাক্কা দেয়। এতে বাসের সামনের অংশ দুমড়ে মুচড়ে যায়। এ ঘটনায় তিনজন নিহত ও কমপক্ষে ৫০ জন আহত হয়।
ফায়ার সার্ভিস, কাশিয়ানী থানা পুলিশ ও হাইওয়ে পুলিশ আহতদেরকে উদ্ধার করে কাশিয়ানী ১০০ শয্যা হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানে বিদ্যুৎ বিশ্বাসকে চিকিৎসকরা মৃত ঘোষণা করেন।
ডাক্তার সাইফুল ইসলাম জানান, হাসপাতালে আনার আগেই সুদীপ্তের মৃত্যু হয়েছে। হাসপাতালে ভর্তি অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এদিকে, হাসপাতালে গিয়ে আহতদের চিকিৎসার খোঁজখবর নেন যশোরের জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলন, সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন বিপুল, হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আখতারুজ্জামান খানসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ। রক্তদানের জন্য ছুটে আসেন যশোরের বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। রোগীদের অতিরিক্ত চাপ সামাল দিতে হাসপাতালে ছুটে আসেন ডিউটি এবং ছুটিতে ঢাকা ডাক্তার নার্স ও সেবিকা ছাত্রীরা। হাসপাতালের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।
যশোর জেলা সদর হাসপাতালের তত্বাবধায়ক আখতারুজ্জামান রাতে জানান, হাসপাতালে ডিউটিরত সকল ডাক্তারকে হাসপাতালে ডাকা হয়েছে। একইসাথে ৩০ জন ইন্টার্ন চিকিৎসক আহতদের সেবায় নিয়োজিত আছে। পর্যাপ্ত ওষুধ ও স্যালাইন হাসপাতাল থেকে সরবরাহ করা হচ্ছে। মেডিকেল কলেজ শিক্ষার্থীদের সংগঠনের পক্ষ থেকে আহতদের রোগীর জন্য রক্তের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রয়োজনে বেসরকারি ডাক্তাররাও তাদেরকে সহযোগিতা করবেন বলে জানান তিনি।
জেলা প্রশাসক তমিজুল ইসলাম খান জানান, আহতদের চিকিৎসায় জেলা প্রশাসন সার্বিক সহযোগিতা করবে।