১৩ দিনেও উদ্ধার হয়নি রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুরি হওয়া মেশিন
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৭:১২ এএম, ২৭ জানুয়ারী,শুক্রবার,২০২৩ | আপডেট: ১২:৩১ পিএম, ১৪ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
১৩ দিনেও হদিস মেলেনি রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে চুরি যাওয়া কয়লা পরীক্ষাকরণ (মান যাচাইকরণ) মেশিনটি। এ ছাড়া চুরির ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
জানা গেছে, গেল ১৪ জানুয়ারি রাতে যে কোনো সময় রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে কয়লা পরীক্ষাকরণ মেশিনটি কে বা কারা সরিয়ে ফেলে বা চুরি করে। গত ১৫ জানুয়ারি সকালে যন্ত্রটি খুঁজে পাওয়া না গেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বিষয়টি অবগত হয়। ওই দিন সব স্থানে খুঁজে না পেয়ে চুরি যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত হয় কর্তৃপক্ষ। এর পর ৪৭ লাখ টাকা মূল্যের ওই মেশিনটি উদ্ধারে গত১৬ জানুয়ারি রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক (প্রশাসন ও নিরাপত্তা) বাদী হয়ে রামপাল থানায় একটি মামলা করেন।
মামলা দায়েরের ১১ দিন অতিবাহিত হলেও মেশিনটি উদ্ধার বা চুরির সঙ্গে জড়িত কাউকে আটক করতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
বাগেরহাটের রামপাল থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ শামসুদ্দিন বলেন, তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের মেশিন চুরির ঘটনায় তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছেন তারা। চুরির ঘটনা উদ্ঘাটনে সন্দেহভাজন ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা যায়, গত ১৫ মাসে র্যাব-৬-এর সদস্যরা কয়েক দফায় অভিযান চালিয়ে চোর চক্রের ২০ জনকে আটক করতে সক্ষম হয়েছে। ওই সময় আটক ব্যক্তিদের কাছ থেকে চুরি যাওয়া অর্ধকোটি টাকার মূল্যবান মালপত্র উদ্ধার করা হয়। এ ছাড়া গত ৯ মাসে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা আনসার সদস্যরা ৩৩ জন চোরকে আটক করেন এবং তাদের কাছ থেকে ৫৩ লাখ টাকার মালপত্র উদ্ধার করেন।
মোংলার স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ শাজাহান সিদ্দিকী বলেন, একের পর এক গুরুত্বপূর্ণ মালপত্র চুরির ঘটনা ঘটছে। এমন একটি নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে যদি চুরি সংঘটিত হয়, তাহলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা ব্যক্তিদের কাজ কী?
নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রশাসনের এক কর্মকর্তা বলেন, কয়লা পরীক্ষার যন্ত্রটি সাধারণ কোনো মানুষের কাজে আসবে না বা ছিঁচকে চোরের কাজও নয় এটি। বড় কোনো চক্র বা কেন্দ্রের অভ্যন্তরে থাকা কেউ এই যন্ত্র সরানোর সঙ্গে জড়িত থাকতে পারে। এ ছাড়া ল্যাব এলাকায় ২৪ ঘণ্টা ডিউটিতে লোক থাকেন। তাহলে মামলার এজাহারে কারও নাম না দেওয়ায় মনে হচ্ছে কর্তৃপক্ষের দায় এড়ানো বা অবহেলা রয়েছে।
জানা যায়, রামপাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে নিরাপত্তায় আনসার ব্যাটালিয়ন সদস্য রয়েছেন ১৫০ জন। সাধারণ আনসার রয়েছেন ৩০ জন। পুলিশ সদস্য দায়িত্ব পালন করেন ১৭ জন। এ ছাড়া ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ভেল-এর সিকিউরিটি কর্মী রয়েছেন ৭৮ জন। এবং জেরিন সিকিউরিটি সার্ভিসের সদস্য রয়েছেন ১৮ জন।
বিভিন্ন পর্যায়ের এমন নিরাপত্তা বাহিনী দায়িত্বে থাকা এবং সীমানাপ্রাচীরের মধ্য থেকে মালপত্র চুরি হওয়ায় সাধারণ মানুষের মধ্যে নানা প্রশ্নের জন্ম দিচ্ছে।