বিশিষ্ট সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী আলহাজ ছিদ্দিক মিয়ার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী পালিত
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১০ পিএম, ২৫ জানুয়ারী,
বুধবার,২০২৩ | আপডেট: ০৮:৫১ পিএম, ২১ ডিসেম্বর,শনিবার,২০২৪
কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরের বিশিষ্ট সমাজসেবক, শিক্ষানুরাগী ও ব্যবসায়ী প্রয়াত আলহাজ ছিদ্দিক মিয়ার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী আজ বুধবার পালিত হয়েছে। ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি।
মৃত্যুকাল তিনি স্ত্রী, ৫ ছেলে, ৩ মেয়ে ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর বড় ছেলে মো. শরীফুল আলম একজন ব্যবসায়ী ও রাজনীতিবিদ। শরীফুল আলম ছাত্রজীবনে জাতীয়তাবাদী আদর্শের রাজনীতির সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি ব্যবসার পাশাপাশি বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ- সাংগঠনিক সম্পাদক ও কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। শরীফুল আলমের পিতা আলহাজ ছিদ্দিক মিয়া কর্মজীবনে সফল ব্যবসায়ী হয়েও আর্তমানবতা এবং জনসেবামূলক কাজ করে তিনি আলহাজ ছিদ্দিক মিয়া থেকে হয়ে উঠেছিলেন কোম্পানি। সাধারণ মানুষ তাঁকে কোম্পানি হিসেবেই সম্বোধন করতে অধিক পছন্দ করতেন।
যিনি দেশের প্রত্যন্ত অজপাড়া গাঁয়ে জন্মগ্রহণ করে সাধারণ মানুষ থেকে নিজেকে অসাধারণ ব্যক্তি হয়ে ওঠার লড়াইয়ে সাফল্য লাভ করেছিলেন। তিনি নিজের প্রজ্ঞা, মেধা, পরিশ্রম, আর ধৈর্যকে একাকার করে কাজে লাগিয়ে তিল তিল করে গড়ে তুলেছিলেন দেশের স্বনামধন্য ব্যবসা প্রতিষ্ঠান- আলম গ্রুপ অব ইন্ডাস্ট্রিজ লি.। যা আজও সগৌরব- সুনামের সাথে ব্যবসা করে দেশের অর্থনীতিতে বলিষ্ঠ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
তিনি ব্যবসার পাশাপাশি মানবিক কাজে নিজেকে নিয়োজিত রেখে নিজ এলাকা কুলিয়ারচরসহ জেলার আশপাশের বিভিন্ন উপজেলায় মানবিক কাজ করে গেছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। নিজ জন্মভূমি কুলিয়ারচরে গড়ে তুলেছেন বহু মাদ্রাসা, মসজিদ ও স্কুল। এছাড়া তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন কুলিয়ারচর ডিগ্রি কলেজ, বিভিন্ন মাদ্রাসা, মসজিদ, স্কুল ও বিভিন্ন মানবিক সংগঠনে পরিচালনা পরিষদে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি চেষ্টা করেছেন গরিব, দুঃখী ও অসহায় মানুষের পাশে থেকে সাহায্য সহযোগিতা করার জন্য। জীবদ্দশায় তিনি গরিব, দুঃখী ও অসহায় মানুষের কল্যাণে কিছু করার জন্য কুলিয়ারচরে ‘অঙ্গীকার সংসদ’ নামে একটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও আ. জলিল ভূঁইয়া ফ্রি ক্লিনিক পরিচালনা করেছিলেন। যে ক্লিনিক থেকে প্রতি শুক্রবার গরিব রোগীদের ফ্রি চিকিৎসাসেবা ও বিনামূল্যে ওষুধ দেয়া হতো। পাশাপাশি এমনইভাবে চালু রেখেছিলেন অসহায়, অসুস্থ, কন্যাদায়গ্রস্ত পিতাকে আর্থিক সাহায্য করা।
আলহাজ ছিদ্দিক মিয়াকে নিয়ে লিখতে গেলে অনেক কথাই সামনে চলে আসে। তিনি দীর্ঘ জীবনে ব্যবসার পাশাপাশি মহান লক্ষ্য নিয়ে মানুষের সেবা করতেন বলেই এলাকাবাসীর নিকট অত্যন্ত শ্রদ্ধাভাজন ও পরম আপনজন ছিলেন। এলাকার যে কোনো সমস্যা সমাধানের জন্য সর্বসময় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতেন তিনি। যা কুলিয়ারচরবাসী আজও শ্রদ্ধাবশত স্মরণ করেন।
ব্যক্তিজীবনে আলহাজ ছিদ্দিক মিয়া ছিলেন অত্যন্ত ন্যায়পরায়ণ ও স্পষ্টবাদী মানুষ। সেই হিসেবে তাঁর সুখ্যাতি ছিল সর্বমহলে বিদ্যমান। কর্তব্যপরায়ণ ও আদর্শ নিষ্ঠাবান এই মানুষটি দেশের যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে অসহায় মানুষের পাশে থেকে সাহসী ভূমিকা পালন করেছেন। বন্যা-খরাসহ নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিতেন। এককথায় মানবকল্যাণে তিনি নিজেকে বিলিয়ে দিয়েছেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত।
আলহাজ ছিদ্দিক মিয়া ১৯৩০ সালের ১০ মে কিশোরগঞ্জ জেলার কুলিয়ারচর উপজেলার বেতিয়ারকান্দি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
কীর্তিমান এই মানুষটি দীর্ঘ ৮৮ বছর জীবনযাপন শেষে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি ঢাকার ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
২৫ জানুয়ারি ছিল তাঁর ৫ম মৃত্যুবার্ষিকী। দিনটি উপলক্ষে তাঁর গ্রামের বাড়ি ও বিভিন্ন মসজিদ মাদ্রাসায় দোয়া ও কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে মরহুমের আত্মার মাগফিরাত কামনা করা হয়।