এটিএম বুথ থেকে ১২ লাখ টাকা চুরি : ব্যাংক কমকর্তাসহ গ্রেফতার ২
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৫:১৪ পিএম, ১৪ নভেম্বর,সোমবার,২০২২ | আপডেট: ০৬:৪৮ পিএম, ২০ ডিসেম্বর,শুক্রবার,২০২৪
দিনাজপুরে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথ থেকে প্রায় ১২ লাখ টাকা চুরির ঘটনায় ব্যাংক কমকর্তাসহ দুই জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
আজ সোমবার দুপুর ১টায় পুলিশ সুপার কার্যালয়ে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান পুলিশ সুপার শাহ ইফতেখার আহমেদ। প্রেস ব্রিফিংয়ে গ্রেফতারদের হাজির করা হয়। গ্রেফতারকৃতরা হলেন- ডাচ বাংলা ব্যাংকের ফাস্ট ট্রাকের জুনিয়র চ্যানেল কর্মকর্তা ও পঞ্চগড় জেলার বোদা থানার বাগপুর গ্রামের মৃত তবিজুল ইসলামের ছেলে বরকত জামান (৩৫) এবং দিনাজপুর কোতয়ালী থানার রাজারামপুর গ্রামের মতিউর রহমানের ছেলে রেজাউল ইসলাম (৩৮)। রেজাউল ইসলাম একজন বিকাশ ব্যবসায়ী।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার বলেন, ১১ নভেম্বর রাতে ফুলবাড়ী বাসস্ট্যান্ডে ডাচ বাংলা ব্যাংকের এটিএম বুথের সিডিএম (গ্রাহক জমা মেশিন) মেশিন চুরি হয়। মেশিনের ভিতরে ১১ লাখ ৯১ হাজার ৫০০ টাকা ছিল। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে বুথের গার্ডকে নেশা জাতীয় দ্রব্য খাইয়ে অজ্ঞান করে দেয়া হয় এবং মেশিনের তালা খুলে রাখা হয়। এই ঘটনায় ১২ নভেম্বর ডাচ বাংলা ব্যাংকের ম্যানেজার অপূর্ব রায় বাদী হয়ে কোতয়ালী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেন। অভিযোগ দায়েরের পর কোতয়ালী থানা পুলিশ অভিযান চালায় এবং ব্যাংকের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে ব্যাংকের ফাস্ট ট্রাকের জুনিয়র চ্যানেল কর্মকর্তা বরকত জামানের বক্তব্য অসামঞ্জস্য ও অসংলগ্ন হওয়ায় পুলিশ তাকে আরও জিজ্ঞাসাবাদ করে। পরে তিনি নিজের অপরাধ স্বীকার করেন। পরে তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে রেজাউলকে চুরি যাওয়া টাকাসহ আটক করে পুলিশ। পরে রেজাউল ইসলামও নিজের অপরাধ স্বীকার করেন।
পুলিশ সুপার জানান, আসামিদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী জানা যায়, ৬ মাস আগে ফাস্ট ট্রাকের জুনিয়র চ্যানেল ম্যানেজার বরকত জামানের সাথে রেজাউলের পরিচয় হয়। পরিচয়ের সুবাদে রেজাউল ইসলাম প্রায়ই ফাস্ট ট্রাকের চ্যানেল ম্যানেজার বরকত জামানের কাছে আসতেন। তারা দীর্ঘদিন ধরে ফাস্ট ট্রাক থেকে অর্থ চুরির পরিকল্পনা করেন। সেই অনুযায়ী গত ১১ নভেম্বর চুরির পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেন। তারা দিনের বেলা সুযোগ বুঝে ডিভিআর মেশিন খুলে সিসি ক্যামেরা অকেজো করে সিডিএম মেশিন থেকে বিভিন্ন সময়ে টাকা অপসারণ করতে থাকেন। ওই মেশিনের ভল্ট যৌথ পাসওয়ার্ডের মাধ্যমে খোলা যায়। একটি পাসওয়ার্ড দুইজন ব্যাংক কর্মকর্তা ও অপরটি ভিন্ন কোম্পানির এজেন্টদের নিকট গোপনীয়ভাবে সংরক্ষণ করা হয়। এরমধ্যে জমা মেশিনের পাসওয়ার্ড ছিল জুনিয়র চ্যানেল ম্যানেজার বরকত জামানের কাছে। তার পাসওয়ার্ড দিয়ে ডিপোজিট মেশিন থেকে টাকা গ্রহণ করেন তারা। ঘটনাটি ভিন্নখাতে প্রভাবিত করার জন্য বরকত জামান গার্ডকে কৌশলে চেতনানাশক ওষুধ খাওয়ান ও তালা কৌশলে খুলে রেখে যান যেন সংশ্লিষ্ট সকলেই সন্দেহের আওতায় আসে। অভিযানে ব্যাংকের চুরি যাওয়া ডিভিআর মেশিনসহ নগদ ১১ লাখ ৯১ হাজার ৫০০ টাকা ও ৪ লাখ টাকার ফলস (ভুয়া) ডিপোজিট সিøপের পাশাপাশি অসৎ উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত ৮টি এটিএম কার্ড উদ্ধার করা হয়। গ্রেফতারদের আদালতে সোপর্দ করার পাশাপাশি এই ঘটনায় আরও কেউ জড়িত রয়েছে কি না তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ বলে প্রেস ব্রিফিংয়ে জানানো হয়।