টনসিলের অপারেশনকালে শ্বাসনালি কর্তনে যুবকের মৃত্যু
নিজস্ব প্রতিবেদক
প্রকাশ: ০৮:৩৬ এএম, ১৬ অক্টোবর,রবিবার,২০২২ | আপডেট: ০২:১৩ এএম, ২৪ ডিসেম্বর,মঙ্গলবার,২০২৪
গাজীপুরের কাপাসিয়ার আমরাইদ বাজারে অবস্থিত ‘আমরাইদ পপুলার ডিজিটাল হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে’ গলায় টনসিল অপারেশনে ভুল বশত শ্বাসনালী কেটে ফেলায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে আলমগীর হোসেন (৩২) নামে এক যুবকের মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। সে উপজেলার বারিষাব ইউনিয়নের চরদুর্লভখাঁ নামা পাড়া এলাকার শবজি বিক্রেতা আনোয়ার হোসেনের পুত্র। সে দুবাই থেকে বাড়ি ফিরে পরিবহন ব্যবসা করতো। এঘটনায় এলাকাবাসী লাশ নিয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শণ করেছে।
নিহতের স্বজন রাকিব হোসেন জানান, আলমগীর হোসেন গত শুক্রবার সকালে টনসিল অস্ত্রোপাচারের জন্য স্থানীয় আমরাইদ বাজারের ওই হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। পরে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সকাল ১১ টার দিকে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে অপারেশন থিয়েটারে নিয়ে যান। দীর্ঘ সময় পর তার স্বজনরা জানতে পারেন কর্তব্যরত ডাক্তার অপারেশনের সময় ভুল বশত শ্বাসনালী কেটে ফেলায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে। এ সময় নানাভাবে চেষ্টা করেও রক্তক্ষরণ পুরোপুরি বন্ধ করতে ব্যর্থ হলে আশঙ্কাজনক অবস্থায় সন্ধ্যার দিকে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়।
নিহত আলমগীর হোসেনের ৩ বছর বয়সী একটি ছেলে রয়েছে এবং তার স্ত্রী সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় প্রভাবশালী একটি মহল দিনভর নানাভাবে চেষ্টা চালায়। নিহতের স্ত্রী মোর্শেদা ভুল চিকিৎসায় তার স্বামীর মৃত্যুর জন্য দায়ী চিকিৎসকের শাস্তি দাবী করেন।
এ বিষয়ে ওই হাসপাতালের মালিক আবুল হোসেন জানান, তিনি কোনো ডাক্তার নন। অস্ত্রোপাচার করেছেন নাক, কান ও গলা বিষয়ের ডাক্তার। তার সাথে কথা বলে বিষয়টি জেনে নেন। পরে অস্ত্রোপাচারকারী ডাক্তার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নাক, কান ও গলা বিষয়ের ডাক্তার এটিএম ফয়সালের মোবাইলে একাধিকবার ফোন করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
এ বিষয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মোঃ মামুনুর রহমান জানান, তিনি দুপুর আড়াইটার দিকে বিষয়টি জেনেছেন। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন এবং ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ বিষয়ে কাপাসিয়া থানার ওসি এএফএম নাসিম জানান, জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে ফোন পেয়ে লাশ নিয়ে বিক্ষোভরত এলাকাবাসীর কাছ থেকে লাশটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। এ বিষয়ে সন্দেহের কোনো অবকাশ না রাখতে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।